বলিউডের মাদকযোগ নিয়ে গত কয়েকদিনে উত্তাল সোশ্যাল মিডিয়া থেকে সংবাদমাধ্যম। সুশান্তের মৃত্যু মামলার সঙ্গে জড়িত মাদককাণ্ডের তদন্তে নেমে একের পর এক চাঞ্চল্যকর নাম উঠে এসেছে এনসিবির হাতে। বলিউডের প্রথম সারির চার নায়িকা- দীপিকা পাড়ুকোন,সারা আলি খান, শ্রদ্ধা কাপুর, রকুল প্রীত সিংয়ের নাম উঠে এসেছে বলিউডের মাদককাণ্ডে। বিতর্ক পিছু ছাড়েনি করণ জোহরেরও। সুশান্তের মৃত্যুর পর থেকে নেটিজেনদের রোষের মুখে পড়া করণের নামও জড়িয়েছে এই মামলায়। সৌজন্যে করণের ২০১৯-এর হাউজ পার্টির এক ভিডিয়ো। যেখানে ড্রাগ ব্যবহার করা হয়েছিল বলে এনসিবির কাছে অভিযোগ জানান অকালি শিরোমণি দলের প্রাক্তন বিধায়ক মনজিন্দর সিং সিরসা। সেই অভিযোগ ইতিমধ্যেই খতিয়ে দেখছে এনসিবি।
শুধু তাই নয় শুক্রবার ধর্মা প্রোডাকশনের এক এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর এবং এক প্রাক্তন সহকারী পরিচালকের নাম সরাসরি জড়িয়ে গিয়েছে বলিউডের এই মাদকজালে। ধর্মা প্রোডাকশনের এক্সিকিউটিভ প্রোডিউসার ক্ষিতিশ রবিপ্রসাদকে ইতিমধ্যেই আটক করেছে নারকোটিক্স কন্ট্রোল ব্যুরো। গতকাল ধর্মার এই কর্মচারীর বাড়িতে হানা দিয়ে নিষিদ্ধ মাদকও উদ্ধার করেছে এনসিবি বলে খবর। এদিন ম্যারাথন জিজ্ঞাসাবাদ করা হয় ধর্মার এক প্রাক্তন কর্মচারীকেও। এরপর শুক্রবার প্রায় মধ্যরাতে নিজের অবস্থান স্পষ্ট করলেন করণ জোহর। যিনি আপতত সন্তানদের নিয়ে রয়েছেন গোয়ার একটি রিসর্টে।
করণ জোহর নিজের আনুষ্ঠানিক বিবৃতিতে জানান, ২০১৯-এর চর্চিত ওই পার্টির সম্পর্কে আগেও তিনি নিজের সাফাই পেশ করেছিলেন। এবং জানিয়েছেন ওই পার্টিতে কোনও প্রকাশ ড্রাগ ব্যবাহর হয়নি। তিনি মিডিয়ার উদ্দেশ্যে বলেন- ‘কিছু সংবাদ চ্যানেল,এবং প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়া এবং সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মে ভুল খবর ছড়ানো হচ্ছে যে ওই পার্টিতে নিষিদ্ধ মাদক সেবন করা হয়েছিল। যেটা আমি, করণ জোহর ২৮ জুলাই,২০১৯ সালে আমার বাড়িতে আয়োজন করেছিল। এই অভিযোগ সম্পূর্ন মিথ্যা ও ভিত্তিহীন, সেটা আমি আগেও জানিয়েছি’।
করণের দাবি এই ঘটনার মাধ্যমে তাঁর ও তাঁর প্রযোজনা সংস্থার বদনাম ছড়ানোর চেষ্টা চলছে। করণ বলেন- ‘আমি নিষিদ্ধ মাদক সেবন নিজে করি না, বা করবার বিষয়কে কাউকে সমর্থন বা এটির প্রচার করি না’।
ধর্মা প্রোডাকশন, করণ ও তাঁর পরিবারের নামে ভুয়ো ও বিভ্রান্তিমূলক খবর রটিয়ে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে ঘৃণা ছড়ানোর চেষ্টা করছে অভিযোগ কেজোর।
ধর্মার এক প্রাক্তন (অনুভব চোপড়া) ও বর্তমান (ক্ষিতিশ রবিপ্রসাদ) কর্মচারীর এই মামলায় নাম জড়ানোর প্রসঙ্গটি নিয়েও নিজের বক্তব্য রাখেন ধর্মা প্রোডাকশনের কর্ণধার।
করণ জানান, ব্যক্তিগতভাবে এই দুই ব্যক্তিকে তিনি চেনেন না- তাই এই দুই অভিযুক্ত করণ ঘনিষ্ঠ বলে যেমন সংবাদমাধ্যম দাবি করেছে সেটা মিথ্যা।
আমি অথবা ধর্মা প্রোডাকশন কেউই দায়ী নই কোনও মানুষ ব্যক্তিগত জীবনে কী করছে তার জন্য। এটা ধর্মার বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ নয়। আমি আরও জানাই অনুভব চোপড়া ধর্মার অন্য কর্মচারী নন, ২০১১-১২ সালে উনি খুব অল্প সময়ের জন্য মাত্র দুই মাস ধর্মার একটি প্রোডাকশনে সহকারী পরিচালক হিসাবে কাজ করেছিলেন। এবং ২০১৩ সালে একটি শর্ট ফিল্মের জন্য কাজ করেছিল অনুভব। এরপর থেকে ধর্মার আর কোনও প্রোডাকশনে অনুভব চোপড়া যুক্ত ছিল না।
ক্ষিতিশ রবি প্রসাদ ধর্মাটিক এন্টারটেনমেন্ট (ধর্মার সহযোগী সংস্থা) যোগ দেয় ২০১৯-এর নভেম্বরে এক্সিকিউটিভ প্রোডিউসার হিসাবে- চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ হয়েছিল তাঁর'।
দেখুন করণের চর্চিত পার্টির সেই ভিডিয়ো-
উল্লেখ্যযোগ্য গত বছর জুলাই মাস নাগাদ ভাইরাল হয়ে যায় করণের পার্টির এই ভিডিয়ো। করণ জোহর নিজেই সোশ্যাল মিডিয়ায় এই ভিডিয়ো শেয়ার করেছিলেন, যদিও ভিডিয়োকে ঘিরে বিতর্ক শুরু হলে করণ তড়িঘড়ি ডিলিট করে দেন সেই ভিডিয়ো। কিন্তু ততক্ষণে সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়েছে এই চর্চিত ড্রাগ পার্টির ভিডিয়ো। যেখানে দেখা মিলেছে দীপিকা পাড়ুকোন,শাহিদ কাপুর, অর্জুন কাপুর, মালাইকা আরোরা, জোয়া আখতার,বরুণ ধওয়ান, রণবীর কাপুরের মতো বলিউডের এ-লিস্টার তারকাদের।