দু-দিন আগেই সলমন খান ও তাঁর পিতা সেলিম খানকে প্রাণে মারার হুমকি চিঠি মেলার খবর প্রকাশ্যে আসে, তারপর থেকেই হাই অ্যালার্টে মুম্বই পুলিশ। শুরুতেই ওই বেনামি চিঠি দেখে লরেন্স বিষ্ণোই-এর উপরই সন্দেহ গিয়ে পড়ে পুলিশের। কারণ দীর্ঘদিন ধরে সলমন খান রয়েছে এই কুখ্যাত গ্যাংস্টারের নিশানায়। এই ঘটনার পর আঁটোসাঁটো করে দেওয়া হয়েছে ভাইজানের নিরাপত্তা। তবে চিন্তার ভাঁজ পুলিশ-প্রসাশনের কপালে।
এই বেনামি হুমকি চিঠির সঙ্গে নিজের অথবা নিজের গ্যাং-এর কোনওরকম যোগসাজশ থাকবার কথা অস্বীকার করেছে তিহার জেলে বন্দি গ্যাংস্টার লরেন্স বিষ্ণোই। সোমবার এই মামলায় দিল্লি পুলিশ জেরা করে বিষ্ণোইকে। সে স্পষ্ট জানিয়েছে এই মামলায় তার কোনও যোগ নেই। গত মাসে পঞ্জাবে খুন হওয়া গায়ক সিধু মুসে ওয়ালা-র মৃত্যু মামলাতেও সন্দেহভাজনের তালিকায় রয়েছে লরেন্স। সিধু মুসে ওয়ালা-কে খুন করবার দায় ফেসবুকে স্বীকার করে নিয়েছে গোল্ডি ব্রার নামে কানাডার এক গ্যাংস্টার। লরেন্স বিষ্ণোই-এর গ্যাং-এর সঙ্গে প্রত্যক্ষ যোগ রয়েছে গোল্ডি ব্রার-এর।
প্রথম দফার জেরায় লরেন্স বিষ্ণোই সব অভিযোগ অস্বীকার করেলও শীঘ্রই ফের জেরা করা হতে পারে এই গ্যাংস্টারকে বলে দিল্লি পুলিশ সূত্রে খবর। সলমন খান ও তাঁর বাবা সেলিম খানকে প্রাণে মারার হুমকি দিয়ে যে বেনামি চিঠি পাঠানো হয়েছে, সেখানে লরেন্স বিষ্ণোই-এর নাম ও পদবির আদ্যোক্ষর উল্লেখ করা হয়েছে (LB), এর জেরেই যাবতীয় সন্দেহের তীর গিয়ে পড়েছে এই গ্যাংস্টারের উপর। এর আগে ২০১৮ সালে প্রকাশ্যে (অন ক্য়ামেরা) সলমন খানকে প্রাণে মেরে ফেলবার হুমকি দিয়েছিলেন লরেন্স বিষ্ণোই।
গত রবিবার সেলিম খানের নিপাপত্তারক্ষীরা। প্রত্যেকদিন সকালে নিজের বডিগার্ডদের নিয়ে হাঁটতে বের হন সলমন। একটা নির্দিষ্ট লোকেশনে গিয়ে বিরতিও নেন। সেখানেই একটা বেঞ্চে ছেড়ে যাওয়া হয়েছে সেই বেনামি চিঠিখানা। যা খুঁজে পায় সলমন খানের বাড়ির নিরাপত্তারক্ষীরা। তারপর সেটি তুলে দেওয়া হল পুলিশের হাতে।
রাজস্থানের এই শার্প শ্য়ুটারের দীর্ঘদিনের টার্গেট সলমন খান। কোনওরকম ঝুঁকি নিতে চায় না মুম্বই পুলিশ, তাই আঁটোসাটো করা হয়েছে ভাইজানের নিরাপত্তা। হিন্দুস্তান টাইমসকে এক সিনিয়র পুলিশ আধিকারিক জানান, ‘সলমন খানের নিরাপত্তা সার্বিকভাবে বাড়ানো হয়েছে। ওঁনার অ্যাপার্টমেন্টের চারপাশেও ২৪ ঘন্টা পুলিশি টহল থাকবে, যাতে রাজস্থানের এই গ্যাং কোনওরকম পদক্ষেপ গ্রহণ করতে না পারে’।
কেন লরেন্স বিষ্ণোইয়ের টার্গেট সলমন খান?
এর জন্য পিছিয়ে যেতে হবে দু দশক। বিষ্ণোই সম্প্রদায়ের কাছে পবিত্র বলে গণ্য করা হয় কৃষ্ণসার হরিণকে। কৃষ্ণসার হরিণের রক্ষকর্তা বিষ্ণোই সম্প্রদায়ের অংশ লরেন্স। ১৯৯৮ সালে সলমন খানের উপর যোদপুরে ফিল্মের শ্যুটিং চলাকালীন দুটি কৃষ্ণসার হরিণ হত্যার অভিযোগ রয়েছে। সেই সময় থেকে বিষ্ণোই সম্প্রদায়ের চক্ষুশূল ভাইজান। এর আগে বেশ কয়েকবার সলমন খানকে শার্প শ্যুটার দিয়ে হত্যার ছক কষেছে লরেন্স বিষ্ণোই। ২০১৮ সালে প্রকাশ্যে যে জানিয়েছিল, ‘যোদপুরে সলমন খানকে আমরা হত্যা করব’।
সোমবার সন্ধ্যায় ব্যাপক নিরাপত্তা বেষ্টনীর মাঝে মুম্বই ছাড়েন সলমন। সূত্রের খবর, ‘কভি ইদ কভি দিওয়ালি’র শ্যুটিংয়ে হায়দরাবাদে পৌঁছেছেন তারকা।