সুশান্ত সিং রাজপুতের মৃত্যুর তদন্তে নেমে এখনও পর্যন্ত কোনও ফাউল প্লে'র সম্ভবনা দেখছে না মুম্বই পুলিশ। ৩৪ বছরের এই অভিনেতার আত্মহত্যার কারণ খতিয়ে দেখতে ইতিমধ্যেই সুশান্তের ব্যক্তিগত ও পেশাদার জীবনের সঙ্গে যুক্ত একাধিক ব্যক্তিকে জেরা করেছে মুম্বই পুলিশ। এবার মুম্বই পুলিশের তরফে আনুষ্ঠানিকভাবে জানানো হল এই মামলায় সুশান্তের তিন সাইকিয়াট্রিস্ট এবং এক সাইকোথেরাপিস্টের বয়ান রেকর্ড করা হয়েছে বান্দ্রা পুলিশের তরফে। ‘গত তিন-চারদিনে এঁনাদের বয়ান নথিভুক্ত করা হয়েছে’ বলে জানিয়েছেন মু্ম্বই পুলিশের ডেপুটি কমিশনার (জোন-৯) অভিষেক ত্রিমুখে।
পুলিশ জানিয়েছে ২০১৯-এর নভেম্বর মাস থেকে মনোরোগ বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ নিচ্ছিলেন সুশান্ত এবং তদন্ত প্রক্রিয়া মেনেই তাঁদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। গত ১৪ জুন বান্দ্রার অ্যাপার্টমেন্টে ঝুলন্ত অবস্থায় উদ্ধার হয় সুশান্তের দেহ। সেই সময়ই পুলিশ জানিয়েছিল আত্মহত্যা করেছেন অভিনেতা। জানানো হয়েছিল তাঁর অবসাদগ্রস্ত থাকার কথাও।
টাইমস নাও সূত্রে খবর, প্রত্যেক মনোবিদই জানিয়েছেন ভীষণরকম স্ট্রেসফুল জীবন কাটাচ্ছিলেন সুশান্ত। সূত্রের দাবি চিকিত্সকরা নাকি জানিয়েছেন ‘বাইপোলার ডিসওর্ডার’-এর শিকার ছিলেন সুশান্ত। তবে তাঁর ডিপ্রেশনের সঠিক কারণ বলতে পারেননি কেউই।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ঘনঘন চিকিত্সক বদলেছেন সুশান্ত। দু-তিনবারের বেশি কোনও চিকিত্সকের সঙ্গেই সাক্ষাত্ করেননি প্রয়াত অভিনেতা। যে চিকিত্সকের কাছে সুশান্ত শেষবার পরামর্শ নিতে গিয়েছিলেন তিনি তাঁকে দুমাসের জন্য কিছু ওষুধ সেবনের পরামর্শ দিয়েছিলেন যদিও সেগুলো সঠিকভাবে নেওয়া হয়নি বলেই ধারণা। লকডাউন চলাকালীন ফোনে একবার সেই চিকিত্সকের সঙ্গে যোগাযোগ করেছিলেন সুশান্ত সিং রাজপুত।
এখনও পর্যন্ত এই মামলায় প্রায় ৩৭ জনের বয়ান রেকর্ড করেছে মুম্বই পুলিশ। সঞ্জয় লীলা বনশালি, মুকেশ ছাবরা, সঞ্জনা সাংঘি সহ সুশান্তের বান্ধবী রিয়া চক্রবর্তী, বন্ধু সন্দীপ সিং এবং বেস্ট ফ্রেন্ড মহেশ শেট্টির বয়ানও রেকর্ড করা হয়েছে।
সুশান্তের আত্মহত্যার তদন্তে গত শনিবার যশ রাজ ফিল্মসের কর্ণধার আদিত্য চোপড়ার বয়ান রেকর্ড করে মুম্বই পুলিশ। সুশান্তের মৃত্যুর পর থেকেই পানি বন্ধ হয়ে যাওয়া এবং যশ রাজ ফিল্মসের সঙ্গে সুশান্তের বাতিল চুক্তি নিয়ে বারবার বিতর্কে উঠে এসেছে আদিত্য চোপড়ার নাম। ২০১২ সালের নভেম্বর থেকে ২০১৫-র শেষ পর্যন্ত যশ রাজ ট্যালেন্ট ম্যানেজমেন্টের অংশ ছিলেন সুশান্ত। এই প্রযোজক সংস্থার ব্যানারেই মুক্তি পায় সুশান্তের কেরিয়ারের দ্বিতীয় ও তৃতীয় ছবি ‘শুদ্ধ দেশি রোম্যান্স’ এবং ‘ডিটেক্টিভ ব্যোমকেশ বক্সী’।