প্রয়াত কিংবদন্তি পরিচালক কুমার সাহানি। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৮৩ বছর। তাঁকে ভারতের আর্ট হাউস ছবির পথিকৃৎ বললে অত্যুক্তি হয় না। 'মায়া দর্পন', 'তরঙ্গ'-এর মতো অন্যধারার ছবির পরিচালক ছিলেন তিনি। ঋত্বিক ঘটকের প্রিয় ছাত্র ছিলেন কুমার সাহানি। শনিবার রাতে কলকাতাতেই মৃত্যু হয় কুমার সাহানির।
কুমার সাহানির জন্ম ১৯৪০ সালে অবিভক্ত ভারতের সিন্ধু প্রদেশের লারকানা জেলায়, বর্তমানে যেটা পাকিস্তানে রয়েছে। দেশভাগের সময় তিনি মুম্বই চলে আসেন। স্নাতক হন বোম্বের বিশ্ববিদ্যালয় থেকেই। পরে পুণে ফিল্ম ইনস্টিটিউট(FTII) থেকে সিনেমা নিয়েই পড়াশোনা তাঁর। সেখানে পড়ার সময় ঋত্বিক ঘটকের ছাত্র ছিলেন তিনি। পরে তিনি ফ্রান্সে পড়াশোনার জন্য ফরাসি সরকারের বৃত্তি লাভ করেন। এরপর সেখানেই সিনেমা নিয়ে পড়াশোনা করেছেন তিনি।
১৯৬৯ সালে বিখ্যাত ফরাসি পরিচালক রবার্ট ব্রেসনের ‘অ্যা জেন্টাল ক্রিয়েটার’ ছবিতে সহকারী পরিচালক হিসাবে কাজ করেছিলেন তিনি। পরিচালক প্যাসোলিনি এবং আন্দ্রেই তারকভস্কির দ্বারা অনুপ্রাণিত ছিলেন কুমার সাহানি।
আরও পড়ুন-ফের ক্যানসারে আক্রান্ত সঙ্গীতশিল্পী, কবীর সুমনের স্ত্রী সাবিনা ইয়াসমিন, এখন কেমন আছেন?
১৯৭২ সালে নিজের প্রথম বড় দৈর্ঘ্যের ছবি ‘মায়া দর্পণ’ নির্মাণের জন্য দেশে ফিরে আসেন কুমার সাহানি। এর পরবর্তী পূর্ণ দৈর্ঘ্যের ফিচার ফিল্ম ‘তরঙ্গ’ নির্মাণের জন্য টাকা জোগাড় করতে প্রায় বারো বছর অপেক্ষা করতে হয়েছিল তাঁকে। পরবর্তী সময়ে 'খেয়াল গাথা', 'কসবা'. ‘চার অধ্যায়’ কুমার সাহানি পরিচালিত বিখ্যাত ছবিগুলির মধ্যে অন্যতম।
তিনবার জাতীয় পুরস্কারও জিতে নিয়েছেন কুমার সাহানি। ১৯৮৩ সালে 'তরঙ্গ' ছবির জন্য তিনি প্রথমবার জাতীয় পুরস্কার জিতে নেন। ১৯৭২ সালে ‘মায়া দর্পণ’ ছবির জন্য দ্বিতীয়বার জাতীয় পুরস্কার জেতেন তিনি। এরপর ১৯৯১ সালে সেরা আত্মজীবনীমূলক ওড়িশি ছবি 'ভাবন্তরণ'-এর জন্যও জাকীয় পুরস্কার জেতেন কুমার সাহানি। যে ছবিটি তিনি নৃত্যশিল্পী গুরু কেলুচরণ মহাপাত্রকে নিয়ে বানিয়েছিলেন।
‘মায়া দর্পণ’, 'খেয়াল গাথা', ‘কসবা’-র জন্য ৩ বার ফিল্মফেয়ার পুরস্কারও জিতেছেন কুমার সাহানি। তবে শুধু সিনেমার পরিচালক হিসাবে নয়, সাহিত্যিক হিসাবেও প্রশংসিত তিনি।