নুসরত জাহানের সন্তানের পিতৃপরিচয় নিয়ে গত কয়েক মাস ধরে সোশ্যাল মিডিয়ায় কম জলঘোলা হয়নি। গত মাসেই কলকাতা পুরসভার নথিতে ঈশানের পিতৃপরিচয় হিসাবে যশ দাশগুপ্তের নামের উল্লেখ মেলায়, সেই জল্পনার অবসান ঘটেছিল। তবে এতদিন নিজের মুখে যশ স্বীকার করেননি ঈশান তাঁরই সন্তান। রবিবার, জন্মদিনে সেই শুভ কাজটা সেরে ফেললেন ‘ঈশানের ড্যাড’ যশ দাশগুপ্ত।
এক সংবাদপত্রকে দেওয়া সাক্ষাত্কারে প্রথমবার নিজেদের রোম্যান্স, বিয়ে, ঈশান এবং তাঁদের ঘিরে তৈরি যাবতীয় বিতর্ক নিয়ে মুখ খুললেন নুসরত-যশ। নুসরত অন্তঃসত্ত্বা, একথা শুনে কী ঘাবড়ে গিয়েছিলেন যশ? নুসরতের সহবাস সঙ্গীর সপাট জবাব, 'এক মূহূর্তের জন্যও নয়। নুসরত যখন ওর প্রেগন্যান্সির কথা জানায়, সেই খবরটা আমাকে এতটুকুও দ্বন্দ্বে ফেলেনি। আমি ওকে প্রশ্ন করেছিলাম, তুমি কী করতে চাও? ওর শরীর, আমার নয়। তাই চূড়ান্ত সিদ্ধান্তটা ওরই হওয়ার ছিল। আমি শুধু ওকে বলেছিলাম, আমি তোমার সব সিদ্ধান্তে সর্বতোভাবে পাশে আছি। আমি ভীষণরকমভাবে চেয়েছিলাম, আমাদের সন্তান পৃথিবীতে আসুক, তবে আমি সেই সিদ্ধান্তটা ওর উপর চাপিয়ে দিতে পারি না। বিশ্বাস করবেন না, নুসরত আমাকে বলেছিল- আমি যদি এই সন্তানের দায়িত্ব ঝেড়েও ফেলতে চাই তবু ও নিজের ভাবী সন্তানের জন্ম দেবে।
হাসি মুখে নুসরত যোগ করেন, 'সত্যি একটুও ঘাবড়ায়নি যশ। আমাদের মিউচুয়্যাল সিদ্ধান্ত ঈশানকে এই পৃথিবীতে আনা। লোকজন সেটা নিয়ে কী ভাবছে, কী করছে- তা নিয়ে কুছ পরোয়া নেই আমাদের। কেউ আমাকে সাহসিনী বলে কুর্নিশ জানাবে আবার কেউ বিভিন্ন নামে গালিগালাজ করবে, এই তো!
যশের যুক্তি, ‘আপনারাই বলুন, আমি যদি আমার হবু সন্তানের মায়ের পাশে যদি না দাঁড়াতাম সেটা কি খুব সঠিক কাজ হত? সেটা এই সমাজের চোখে ঠিক?' তবে এতদিন কেন ঈশানকে নিজের ছেলে বলে পরিচয় দেননি যশ, এতো লুকোছাপা কীসের? নুসরতের ‘ওয়ান’ হিরো-র সাফাই ‘নিজেদের ব্যক্তিগত জীবনকে ব্যক্তিগত পরিসরে রাখাটা কি অপরাধ? আমরা তো লুকোয়নি যে আমাদের সন্তান আসছে। যদি লুকানোরই হত তাহলে তো সন্তানের জন্মই দিতো না নুসরত। বেবি বাম্প নিয়েই তো নুসরত সর্বত্র ঘুরে বেড়িয়েছে। তখন মানুষ কী ভাবছিল, তাঁদের সঙ্গে কোনও মশকরা করা হচ্ছে? আমার কী উচিত ছিল ছাদের উপর প্ল্যাকার্ড হাতে দাঁড়িয়ে চিত্কার করা যে আমি ঈশানের বাবা! না মশাই, আমি একেবারেই ওই ধরণের মানুষ নয়।’
বিয়ে নিয়ে কী ভাবছেন দুজনে? সেই প্রশ্ন যশরতের সামনে রাখাতে যা জবাব মিলল তা শুনলে হয়রান হবেন বৈকী! যশের কথায়, দুজন মানুষের মনের মিল থাকলে তাঁদের একসঙ্গে থাকাটাই জরুরি, অন্যদিকে নুসরতের গলাতেও একই সুর। একটা আইনি স্ট্যাম্প থাকলেই কোনও সম্পর্ক পূর্ণতা পায় না, কেউ যদি বিয়ের মন্ডপে নেওয়া প্রতিজ্ঞাগুলো বাস্তবে পূরণ না করতে পারে তবে সেই বিয়ে বৃথা।