সেফটিপিন থেকে সংসদ, সব বিষয় নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় নিজের মতামত রাখেন কঙ্গনা রানাওয়াত। অনেক সময়ই বেফাঁস মন্তব্যের জেরে বিতর্কে জড়ান, মামলা গড়ায় আদালত পর্যন্তও। তবুও কঙ্গনা আছেন কঙ্গনাতেই। রবিবার সকালে সোশ্যাল মিডিয়ায় মোদী সরকারের ‘চিটিং বিরোধী বিল’ নিয়ে মতামত রেখে হাসির খোরাক অভিনেত্রী।
মোদী-ভক্ত কঙ্গনা সবসময়ই কেন্দ্রের গুনগানে ব্যস্ত থাকেন। তবে এদিন 'চিটিং বিরোধী বিল' কী সেটা না বুঝতে পেরে লম্বা পোস্ট লিখে ফেললেন অভিনেত্রী। নিয়োগ পরীক্ষায় দুর্নীতি রুখতে এই বিল এনেছে কেন্দ্র। অথচ নিয়োগের সঙ্গে সম্পর্কে ধোঁকা দেওয়ার বিষয়টিকে গুলিয়ে ফেললেন কঙ্গনা। প্রেমে ধোঁকা খাওয়ার সঙ্গে এই বিলের কোনও সম্পর্ক নেই, কিন্তু সে-সব না বুঝেই বড় ভুল করে ফেললেন কঙ্গনা, স্বভাবতই নেটপাড়ায় হাসির খোরাক ‘কুইন’ অভিনেত্রী।
নিজের পোস্টে কিশোরে যৌনমিলন থেকে শুরু করে বহুগামিতা নিয়ে লম্বা-চাওড়া ভাষণ দিয়েছেন কঙ্গনা। পরে অবশ্য সেই পোস্ট ডিলিট করে দেন অভিনেত্রী। ব্যাঙ্গাত্মক কনটেন্ট পোস্ট করে এমন এক পেজের তরফে একটি নিউজ আর্টিকেলের স্ক্রিনশট পোস্ট করা হয় তাতে লেখা ছিল, ‘১০ বছরের জেল, ১ কোটি টাকার জরিমানা যদি সম্পর্কে আপনি ঠগবাজি করেন, লোকসভায় পাস হল নতুন অ্যান্টি-চিট বিল’। কঙ্গনা সেই পোস্টকে সত্যি বলে ধরে দেন। এবং লম্বা পোস্টে লেখেন, মেয়েদের সুরক্ষার জন্য এই বিল আনা কতটা জরুরি ছিল।
অভিনেত্রী লেখেন, ‘কম বয়সী মেয়েদের জন্য এই বিলটা খুব জরুরি ছিল। যাঁরা বিয়ের মিথ্যা প্রতিশ্রুতিতে বিশ্বাস করে নেয়, বিয়ের মতো পবিত্র সামাজিক প্রতিষ্ঠানের জন্যও…’। কঙ্গনার কথায়, আজকাল যেখানে ডেটিং অ্যাপের রমরমা সেখানে বিকৃত মস্তিষ্কের পুরুষরা নিজেদের স্বার্থ চরিতার্থ করার সবরকম সুযোগ পায়।
এখানেই থামেননি তিনি। কঙ্গনা আরও লেখেন, কোনও পুরুষ যাতে দীর্ঘদিন কোনও মেয়ের সঙ্গে সম্পর্কে থাকার পর দায় ঝেড়ে না ফেলতে পারে, সেই জন্য এমন বিল আনা উচিত যাতে সম্পর্ক ভাঙলে সেই পুরুষ প্রাক্তন প্রেমিকাকে খোরপোষ দিতে বাধ্য থাকে। আইন এনে ক্যাজুয়াল হুক আপ (যৌন সম্পর্ক) এবং বহুগামিতা অবিলম্বে বন্ধ করা উচিত বলে মনে করেন অভিনেত্রী।
সবশেষে কঙ্গনা লেখেন, যৌন মিলন বা সেক্সে লিপ্ত হওয়ার বয়সও সরকারের বেঁধে দেওয়া উচিত। তাঁর মতে, বিয়ের বয়স যেমন ছেলেদের ক্ষেত্রে ২১ এবং মেয়েদের ক্ষেত্রে ১৮, তেমনই যৌন মিলনেরও নির্দিষ্ট বয়স থাকা উচিত। তা না হলে বাল্যবিবাহ বন্ধ করে লাভ কী? কঙ্গনা লেখেন, ‘বিয়ের নির্দিষ্ট বয়স থাকার লাভ কোথায় যখন বাচ্চারা স্কুলে যৌন সম্পর্কে লিপ্ত হচ্ছে, বড় বড় শহরে আরবান কালচারের অংশই হল স্কুলে পড়তে বয়ফ্রেন্ড বা গার্লফ্রেন্ড থাকা, এটা বাচ্চাদের শারীরিক ও মানসিক বিকাশে বাধা সৃষ্টি করছে’।
পরে নিজের ভুল বুঝতে পেরে কোনওরকম সাফাই না দিয়েই ইনস্টাগ্রাম স্টোরি মুছে ফেলেন অভিনেত্রী। প্রসঙ্গত, এই মাসের শুরুতেই পরীক্ষায় জালিয়াতি রুখতে অ্যান্টি চিটিং বিল পাশ করাল কেন্দ্র। সরকারি নিয়োগ ও প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষায় জালিয়াতি রুখতে ওই বিল আনা হয়েছে। বিলটি আইনে পরিণত হলে এর আওতায় আসবে ইউপিএসি, এসএসসি, নিটের মতো পরীক্ষা।