মঙ্গলবার গোয়া থেকে গ্রেফতার ইউটিউবার রোদ্দুর রায়। তাঁকে গ্রেফতার করেছে কলকাতা পুলিশ। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং তৃণমূলের নেতা অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় সম্পর্কে কুরুচিকর মন্তব্যের জেরে গ্রেফতার হয়েছেন তিনি।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় পশ্চিমবঙ্গ বাংলা অ্যাকাডেমি পুরস্কার পাওয়ার পর মুুখ্যমন্ত্রীকে কুরুচিকর ভাষায় আক্রমণ করেছিলেন রোদ্দুর রায়। সেইসময় তাঁর নামে থানায় একাধিক এফআইআর দায়ের হয়েছিল। সেই রেশ ঠান্ডা হওয়ার দিন কয়েক, ফেসবুক লাইভে এসে মুখ্যমন্ত্রীকে উদ্দেশ্য করে গালিগালাজ করার অভিযোগ ওঠে তাঁর বিরুদ্ধে। বিতর্কিত ইউটিউবার নিশানা শাণান অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কেও।
এরপরই ৩রা জুন তৃণমূল নেতা ঋজু দত্ত চিৎপুর থানায় অভিযোগ দায়ের করেন রোদ্দুর রায়ের বিরুদ্ধে। তার বিরুদ্ধে জামিন অযোগ্য ধারায় রুজু হয় একাধিক মামলা। ওই মামলার তদন্তে নেমেই গ্রেফতার হয় রোদ্দুর রায়। কলকাতা পুলিশের পদস্থ অফিসারেরাও খবরের সত্যতা স্বীকার করে নেন। রোদ্দুর রায়ের বিরুদ্ধে ১৫৩, ১৫৩এ, ৫০১, ৫০৫, ৫০৯, ৪৬৫, ৪৬৭, ৪৬৪, ৪৭১, ১২০বি ধারায় মামলা রুজু হয়েছে। এবার তাঁর গ্রেফতারি প্রসঙ্গে মুখ খুলেছেন একাধিক ইউটিউবাররা।
জাতীয় পুরস্কারপ্রাপ্ত গায়িকা ইমন চক্রবর্তীর কথায়, তিনি মনে করেন, যখন রবীন্দ্রনাথের গানের বিকৃতি ঘটিয়েছিলেন রোদ্দুর রায়, তখন তাঁকে গ্রেফতার কেন করা হল না? সেই সময় তাঁকে উচিত শাস্তি দেওয়ার প্রয়োজন ছিল বলে মনে করেন গায়িকা। তিনি আরও বলেন, ‘একজন মহিলাকে এমন নোংরা ভাষায় আক্রমন করা কিছুতেই মেনে নেওয়া যায় না। এটা অত্যন্ত অশালীন মন্তব্য, আমি একজন মানুষ হয়ে মেনে নিতে পারছি না। তবে এটা পশ্চিমবঙ্গ বলেই সম্ভব হয়েছে, অন্য কোনও রাজ্য হলে এই সাহসটা পেত না।’ গ্রেফতারের পর বিষয়টা প্রশাসন বুঝে নেবে বলে মনে করেন তিনি। ঘটনায় ধিক্কার জানিয়েছেন ইমন।
মিউজিশিয়ান স্বাগতালক্ষ্মী দাশগুপ্তর মন্তব্য, মুখ্যমন্ত্রীকে গালিগালাজ করা অথবা রবীন্দ্রনাথকে গালাগালি কারার বিষয়টিকে ‘বিকারগ্রস্ত’ বলে উল্লেখ করেছেন তিনি। বলেছেন, এটাকে অসুখ বলা যায়। এমন বিকৃতিকে কোনও স্বাভাবিক কেউই সাপোর্ট করবে না। একটা সুস্থ সমাজ রাখতে গেলে সেখানে যদি টিউমার দেখা যায় তার ব্যবস্থা করা জরুরি।
জনপ্রিয় ইউটিউবার উন্মেষ গঙ্গোপাধ্যায়ের কথায়, মুখ্যমন্ত্রীকে গালিগালাজ করাকে একদমই সমর্থন করতে পারছেন না তিনি। প্রচুর সাধারণ মানুষ এই ভিডিয়োগুলি দেখে। ইউটিউবারদের সমাজের প্রতি দায়বদ্ধতা রয়েছে। শব্দচয়নের একটা বড় জায়গা রয়েছে। অন্তর্জালের জন্য এই স্বাধীনতা আমরা সকলে পেয়েছি বলে তিনি মনে করেন। বলেন, ‘রোদ্দুর রায় সবসময় সমাজকে ওঁর মতো করে বার্তা দিতে চেয়েছেন। উনি তো আসলে রোদ্দুর রায় নন, নিজেকে একটি ক্যারেক্টরের মাধ্যমে পেশ করেন। বলার ধরনটা খুবই কুরুচিকর। আমি অপেক্ষায় আছি আদালতে উনি কী সাফাই দেন।’