কেকে-র এভাবে এত কম বয়সে চলে যাওয়া সংগীত জগতের কাছে এক অপূরণীয় ক্ষতি। যে কোনও শিল্পীর কাছেই প্রাধান্য পায় তাঁর স্টেজ। কেকে-র কাছেও তেমনটাই হত। তাই তো মঙ্গলবার ঘামে ভিজে, বারবার রুমালে মুখ মুছে, জল খেয়ে দর্শকদের জন্য একের পর এক নিজের আইকনিক গান তুলে ধরতে থাকেন তিনি। তবে, আমজনতার একটা বড় অংশ দুষছে নজরুল মঞ্চ কর্তৃপক্ষকে। বিশেষ করে গতকালের কনসার্টে যারা উপস্থিত ছিলেন। সকলেরই দাবি, লোক বেশি ছিল। এসি কাজ করছিল। গরমে টেকাই মুশকিল হয়ে পড়েছিল সেখানে। বাংলার আরেক গায়ক রূপমের কথাতেও কি নজরুল মঞ্চ কর্তৃপক্ষের উপর ক্ষোভ ধরা পড়ল?
রূপম নিজের পোস্টেই জানিয়েছেন, কোনওদিন তাঁর কথা হয়নি কেকে-র সঙ্গে। আলাপ করার সুযোগ থেকেও হয়নি। লিখেছেন, ‘একই সুপারহিট অ্যালবাম ‘জন্নত’-এ কাজ করা সত্ত্বেও আমাদের আলাপ হয়নি কোনওদিন। অনেকের সঙ্গেই তো হয়েছে। কেকে-র সঙ্গে হয়নি। আজ মনে হচ্ছে আলাপটা হওয়ার ছিল না।’ তবে দেখা না হলেও বড় ভক্ত ছিলেন যে তা পরিষ্কার তাঁর পোস্টে। ‘খুব কম শিল্পীর গান চার ফর্ম্যাটে সংগ্রহ করে শুনেছি। প্রথমে ক্যাসেট। তারপর সিডি। তারপর ডিজিট্যাল। সব শেষে এল পি রেকর্ড। ‘পল’ অ্যালবামটি এমনই মারাত্মক এফেক্ট ফেলেছিল জীবনে যে ওই অ্যালবামের সব কিছুই সংগ্রহে আছে। এই অ্যালবামের একটি গান একবার ফসিলস-এর হয়ে কাভার করেছিলাম। ’আপ কি দুয়া’। স্ট্রেট ফরোয়ার্ড রক অ্যান্ড রোল। জানি না কোনও শ্রোতার সে কথা মনে আছে কি না। তখনও তো ফসিলস পরিচিত হয়ে ওঠেনি।’, লেখেন তিনি। আরও পড়ুন: বিয়েবাড়িতে গান গাওয়ার প্রস্তাব ফিরিয়েছিলেন কেকে, ‘১ কোটি টাকা দিলেও গাইব না’!
এরপরই রূপম ইসলামের কথায় উঠে এল নজরুল মঞ্চ নিয়ে ক্ষোভ। লিখলেন, ‘নজরুল মঞ্চ ওভারক্রাউডেড হয়ে গেলে কী হয়, সে অভিজ্ঞতা আছে। এসি বন্ধ হয়ে যায়। মঞ্চেও সার বেঁধে দর্শক দাঁড়িয়ে থাকলে দম নেওয়ার ফাঁকটুকুও থাকে না। কয়েকদিন আগে এরকমই এক অনুষ্ঠানে রকসংগীত পরিবেশন করেছিলাম। অভ্যেস না থাকলে পারা মুশকিল— এ নিয়ে কয়েকটি মন্তব্য করেছিলাম। এখন হয়তো কেউ কেউ বুঝবেন— কতটা শারীরিক কষ্ট সহ্য করে আমাদের পারফর্ম করতে হয়। ঠান্ডার দেশ তো আর নয়!’ আরও পড়ুন: ‘মানুষের মাথায় গোবর পোরা’, তাই কেউ তাঁর কথা বোঝেননি, কেকে-বিতর্কে দাবি রূপঙ্করের
দেশে নেই রূপম। ঘুম থেকে উঠে তিনি খবর পেলেন কেকে না থাকার। একটু দেরিতেই পেলেন! তবে সে খবর যে কতবড় আঘাত হেনেছে তাঁর মনে সেটা তাঁর পোস্ট দেখলেই স্পষ্ট বোঝা যাবে।
প্রসঙ্গত, মঙ্গলবার নজরুল মঞ্চে লাইভ শো করে হোটেলে ফিরে অসুস্থ বোধ করতে থাকেন কেকে। হাসপাতালে নিয়ে গেলে সেখানে ডাক্তাররা তাঁকে মৃত ঘোষণা করে। গায়কের মরদেহ ময়নাতদন্তের পর তুলে দেওয়া হবে স্ত্রী ও ছেলের হাতে। আজই কলকাতায় আসছেন তাঁরা।