পোস্ট অফিসে গিয়ে কর্মচারীকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজের অভিযোগ উঠেছে গায়ক রূপঙ্কর বাগচির বিরুদ্ধে। একটি ভাইরাল পোস্টের ভিডিয়ো ঘিরেই বিতর্কের সূত্রপাত। ‘সেলিব্রিটি’ হওয়ার সুবিধে পাইয়ে দেওয়ার অভিযোগও উঠেছে তাঁর স্ত্রী চৈতালী লাহিড়ির বিরুদ্ধে। ভিডিয়োতে দাবি করা হয়েছে, গায়কের স্ত্রী পোস্ট অফিসে গিয়ে কর্মীদের সঙ্গে অভব্য আচরণ করেছেন!
বেলগাছিয়া পোস্ট অফিসের সরকারী কর্মচারী দেবারতী দেবী রূপঙ্কর বাগচি এবং তাঁর চৈতালী লাহিড়ির বিরুদ্ধে একটি লম্বা চওড়া পোস্ট করেছেন সোশ্যাল মিডিয়া। সঙ্গে শেয়ার করেছেন ১৪ সেকেন্ডে একটি ছোট ভিডিয়ো। আরও পড়ুন: যাদবপুরের প্রার্থীর নাম ঘোষণা হতেই সায়নীকে ফোন মিমির, কী কথাবার্তা হল দু'জনের
ঠিক কী ঘটেছে?
দেবারতী দেবীর পোস্ট অনুযায়ী, ‘পেশায় গায়ক রূপঙ্কর বাগচী মহাশয় আজ সস্ত্রীক আমাদের পোস্ট অফিসে আসেন আধারের কাজ করাতে। প্রথমে সাড়ে বারোটা নাগাদ জনৈক চৈতালি লাহিড়ী (পরে বোঝা গেল উনি রূপঙ্কর বাবুর স্ত্রী ) এসে আধার নথিভুক্তিকরণের জন্য থাকা কর্মীকে বলেন উনি রাজ্য সরকারের মহিলা সুরক্ষা দপ্তর থেকে আসছেন, ওনাকে ‘তক্ষুনি’ করে দিতে হবে। প্রত্যুত্তরে আধার কর্মী বলেন, তিনি করে দেবেন কিন্তু আগে যারা সেই সকাল থেকে লাইনে দাঁড়িয়ে আছেন তাদের করে তারপর..’।
পোস্টে আরও জানিয়েছেন, ‘প্রতিদিন আমাদের অফিসের সদর দরজা সকাল দশটায় খোলা মাত্র দেখি প্রচুর লোক লাইন দিয়ে দাঁড়িয়ে আছেন... এই লাইনের জন্য তারা স্বভাবতই দশটার আরো আগে থেকেই দাঁড়ান। এই অবস্থায় কোনোমতেই একজন শিল্পীকে সেই সকাল থেকে লাইন দিয়ে দাঁড়িয়ে থাকা মানুষগুলিকে টপকিয়ে আগে সার্ভিস দেওয়া সম্ভব নয়, অন্তত নীতিগত ভাবে তো নয়ই..’।
দেবারতী জানান, চৈতালী মানতে চাননি। তিনি লেখেন, ‘এটা বুঝিয়ে বলার পরেও তিনি রীতিমতো 'পাওয়ারফুল শিল্পীপত্নী' সুলভ আচরণ করেন এবং নিজেই স্বঘোষিত ভাবে বলেন যে উনি দুপুর দেড়টার সময় ফের আসবেন'।
'দেড়টার বদলে ওনাদের কাজ ১:৩৫ এ শুরু হয়, তাতেই রূপঙ্কর বাবুর শৈল্পিক সত্ত্বায় আঘাত লাগে। ওনার স্ত্রী চৈতালি দেবীর বক্তব্য অনুযায়ী ‘মুড়ি মুড়কি এক করলে চলবে না, বুঝতে হবে কাকে আগে করতে হবে’... অর্থাৎ ওনারা দামী মুড়কি আর সকাল থেকে লাইন দিয়ে দাঁড়িয়ে থাকা মানুষগুলি সস্তার মুড়ি। ইতিমধ্যে আমরা অর্থাৎ উক্ত ডাকঘরে থাকা কর্মীরা ছুটে যাই, ওনাকে বোঝানোর চেষ্টা করি.. বলি যে আপনারা দরকার পড়লে আলাদা ভাবে বলতেন, আমরা এনাদের করে শেষ বেলার দিকে আপনাদের সময় করে দিতাম, ইত্যাদি..'।
‘কিন্তু অহঙ্কারবশত বাগচিবাবু ভুলে যান যে উনি একজন কর্তব্যরত সরকারী কর্মচারীর সাথে কী ব্যবহার করছেন, তাই ঔদ্ধত্যপূর্ণ ভাবে বলেন ‘F_u*c@k you’.. তারপর আমরা সকল কর্মী এবং সেখানে উপস্থিত কিছু কাস্টমারেরা সম্মিলিত ভাবে জোর গলায় ওনার ‘unparliamentary’ শব্দবন্ধের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করলে বাগচিপত্নী স্বামীকে বগলদাবা করে পিছু হটতে বাধ্য হন…’।
‘আমার একটাই কথা এই গায়ক মহাশয় এতোটা স্পর্ধা পান কোথা থেকে? আমাদের অনেক ব্যস্ত কাস্টমারেরা থাকেন যারা অনলাইন slot booking করে আধারের কাজ করিয়ে থাকেন.. কিন্তু সেই বলে আমি মহিলা দপ্তরের কর্মী, আমি দেরী করে আসবো আর যাদের আগে হওয়ার কথা তারা মুড়ি বলে আমি মুড়কি, ইয়ে মানে গায়ক / গায়কপত্নী হয়ে সুবিধা নিয়ে চলে যাবো, এটা ভাবেন কোন আক্কেলে??’ (অপরিবর্তিত)
কেকে কাণ্ডের পর থেকে নানা ভাবে কটাক্ষের সম্মুখীন হয়েছিলেন রূপঙ্কর বাগচি। ফের একবার গায়কের এই নতুন ভিডিয়ো নিয়ে স্বাভাবিকভাবেই বিতর্ক শুরু হয়েছে।