চিনে নিন শোয়েব মালিকের প্রথম স্ত্রীকে
পাক অভিনেত্রী সানা জাভেদকে বিয়ে করেছেন প্রাক্তন পাক ক্রিকেটার শোয়েব মালিক। চর্চায় শোয়েব-সানিয়ার বিচ্ছেদ। ২০২২ সালের নভেম্বর নাগাদ আচমকাই খবর রটে যায় ঘর ভাঙছে সানিয়া মির্জা ও শোয়েব মালিকের। দম্পতির এক পুত্র সন্তানও রয়েছে। এরপরই ২০ জানুয়ারি ছবি পোস্ট করে নিজের তৃতীয় বিয়ের খবর দেন।
শোয়েব মালিকের প্রথম স্ত্রী
সানিয়ার সঙ্গে বিয়ের আগে প্রথম স্ত্রীকে তালাক দিয়েছিলেন শোয়েব। কে তাঁর প্রথম পক্ষের স্ত্রী! জানা যায়, আয়েশা সিদ্দিকি নামের একজনকে বিয়ে করেছিলেন শোয়েব মালিক। ওদিকে, শোহরাব মির্জা নামের একজনের সঙ্গে বিয়ে ঠিক হয়েছিল সানিয়ারও। কিন্তু সেই বিয়ে শেষমেশ ভেঙে যায়। এদিকে, সানিয়ার সঙ্গে শোয়েবের মেলামেশা মেনে নিতে পারেননি আয়েশা। তাই দু'জনের মধ্যে সম্পর্ক তিক্ত হতে থাকে।
অনেকে বলেন, সানিয়ার থেকেও নাকি বেশি সুন্দরী ছিলেন আয়েশা। সানিয়া এবং আয়েশা দুজনেই ভারতীয়। একটা সময় আয়েশার প্রেমে মজে ছিলেন শোয়েব। কিন্তু সময় গড়াতে থাকলে দুজনের সম্পর্কে চিড় ধরে। আয়েশাকে তালাক দেওযার মাস কয়েক পরই সানিয়াকে বিয়ে করেছিলেন শোয়েব। একাধিক রিপোর্ট অনুযায়ী, ভারতে খেলতে এসে আয়েশার বাড়িতে নিমন্ত্রণ ছিল শোয়েব-সহ পাকিস্তান দলের ক্রিকেটারদের। সেখানেই নাকি বিয়ে হয়েছিল শোয়েব এবং আয়েশার (২০২২ সাল)। সানিয়ার সঙ্গে বিয়ের আগে সেই ঘটনা চাঞ্চল্য তৈরি হয়েছিল।
শোয়েব সেই বিয়ের কথা অস্বীকার করেননি। কিন্তু তিনি জানিয়েছিলেন, ফোনে আয়েশার সঙ্গে বিচ্ছেদ হয়েছে তাঁর। মানতে চাননি আয়েশা। জল গড়ায় আদালত পর্যন্ত। শেষ পর্যন্ত সানিয়াকে বিয়ের আগে আয়েশাকে ডিভোর্স দিয়েছিলেন শোয়েব। ২০১০ সালে আয়েশা সিদ্দিকির সঙ্গে বিবাহ বিচ্ছেদ হয়, আর সেই বছরই শোয়েব বিয়ে করেন সানিয়াকে। মাঝে কয়েকমাসের ব্যবধান ছিল মাত্র।
২০১০ সালে হায়দরাবাদে সানিয়া মির্জা ও শোয়েব মালিক বিয়ে সারেন। ২০১৮ সালে তাঁদের প্রথম সন্তান ইজহানের জন্ম হয়। শোয়েব মালিকের সঙ্গে প্রথম স্ত্রী আয়েশা সিদ্দিকির কোনও সন্তান নেই।
শোয়েবের প্রথম বিয়ে
পাকিস্তানের আইন অনুযায়ী, এক ব্যক্তি সর্বোচ্চ চারটে বিয়ে করতে পারেন। তবে সেটার জন্য তাঁকে আগের প্রতিটা স্ত্রীর থেকে অনুমতি নিতে হবে। শোয়েব সেটা করেছেন কি না তা অবশ্য জানা যায়নি। বিচ্ছেদ নিয়ে সরাসরি কিছু না বললেও, গত কয়েক বছরে সানিয়া-শোয়েবের দূরত্ব কারুর নজর এড়ায়নি। বহুদিন একসঙ্গে দেখা যায় না শোয়েব-সানিয়াকে। শোয়েব ছেলের সঙ্গে দুবাইতে সময় কাটালে সেখানে দেখা মেলে না সানিয়ার। অন্যদিকে সানিয়ার অবসর, জন্মদিনের পার্টিতে মির্জা পরিবারের পাশে দেখা যায় না শোয়েবকে। এখন তাঁরা আলাদা-আলাদা।
এদিকে শোয়েবের তৃতীয় বিয়ের দিনই জানা যায়, টেনিস তারকা সানিয়া মির্জা ‘খুলা’ (খুলা হল শরিয়ত আইন মেনে মুসলিম মহিলারা নিজ উদ্যোগেই স্বামীর থেকে আলাদা হতে পারেন) দিয়েছেন শোয়েবকে।
বিয়ে-বিতর্ক
তবে সানিয়াকে বিয়ে করার সময় শোয়েবের প্রথম স্ত্রী আয়েশা বিতর্ক তৈরি করেছিলেন। শোয়েব যখন সানিয়াকে বিয়ে করার প্রস্তুতি নেন সেই সময় আয়েশা সিদ্দিকি জানান শোয়েব তাঁর স্বামী। যা নিয়ে দুই দেশের মধ্যে বেশ ঝামেলা তৈরি হয়। কারণ শোয়েব আগে জানাননি যে তাঁর স্ত্রী আছে। এবং শোয়েব আয়েশাকে বিচ্ছেদ না দিয়েই সানিয়াকে বিয়ে করতে যান। এরপর আয়েশা শোয়েব মালিকের বিরুদ্ধে পুলিশে অভিযোগ দায়ের করেন।
আয়েশা প্রথমে বিচ্ছেদ চাননি। অন্যদিকে শোয়েব চেয়েছিলেন বিচ্ছেদ করে সানিয়াকে বিয়ে করেন। পরে জানা যায়, ২০১০ সালের এপ্রিল মাসে সানিয়াকে বিয়ের আগে শোয়েব ও আয়েশার বিচ্ছেদ হয়। সূত্রের খবর, বিচ্ছেদের জন্য আয়েশাকে ১৫ কোটি টাকা দিয়েছিলেন শোয়েব। যাবতীয় বিতর্ক দূরে সরিয়ে রেখে ভারতের জামাই হয়েছিলেন শোয়েব।
এদিকে শুধু এদেশে নয়, শোয়েবের তৃতীয় বিয়ে নিয়ে চর্চা চলছে পাকিস্তানেও। সেদেশের সংবাদমাধ্যমেও বিষয়টি নিয়ে লেখালিখি শুরু হয়েছে।
অখুশি শোয়েব মালিকের পরিবার
পাক সংবাদমাধ্যমের খবর অনুযায়ী, শোয়েব মালিকের তৃতীয় বিয়েতে শোয়েবের পরিবারের কেউই নাকি উপস্থিত ছিলেন না। পাকিস্তান ডেইলি জানিয়েছে, টেনিস তারকা সানিয়া মির্জার সঙ্গে বিচ্ছেদ নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন শোয়েবের বোনরা। পাক সংবাদমাধ্যমটি আরও দাবি করেছে, শোয়েব মালিকের বিবাহ-বহির্ভূত সম্পর্কে ক্লান্ত হয়ে পড়েছিলেন মির্জা। এমনটাই নাকি বলছেন খোদ শোয়েবের বোনেরাই।
যদিও শেয়েবের বোনেরা কেউই ক্রিকেটারের তৃতীয় বিয়ে নিয়ে প্রকাশ্যে কোনও মন্তব্য করেননি।
সানিয়া-শোয়েবের বিচ্ছেদ
শোয়েবের পরিবারের এক সদস্য সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন ‘এটা খুলা। এর বাইরে আমি কোনও মন্তব্য করতে চাই না। খুলা একজন মুসলিম নারীর একতরফাভাবে তার স্বামীকে তালাক দেওয়ার অধিকার।’