ইন্ডিয়ান আইডল ১৪-র গ্র্যান্ড ফিনালে নিয়ে বিতর্কের শেষ নেই! বাংলার শুভদীপ দাসের হার হজম করতে পারছেন না নেটিজেনরা। কিন্তু সেইসবের মাঝেও ইন্ডিয়ান আইডলের গ্র্যান্ড ফিনালের অন্যতম মন ভালো করা মুহূর্ত ছিল শ্রেয়া-সোনুর যুগলবন্দি।
প্রায় তিন দশক আগে এক গানের রিয়ালিটি শো-তে প্রথমবার দেখা দুজনের। খুদের শ্রেয়ার হাত সেদিন শক্ত করে ধরেছিলেন সঞ্চালক সোনু। দীর্ঘ ৩০ বছরে বদলায়নি দুজনের সম্পর্কের সমীকরণ। একসঙ্গে বহু গানে গলা মিলিয়েছিলেন দুজনে, কিন্তু মঞ্চে একসঙ্গে দেখা মেলেনি তাঁদের। অবশেষে স্বপ্নপূরণ হল জুটির লাখো ভক্তের। ইন্ডিয়ান আইডল মিলিয়ে দিল সোনু-শ্রেয়াকে।
এদিন পিয়ানো বাজালেন শ্রেয়া, গান ধরলেন সোনু। তাঁকে বলতে শোনা গেল, ‘আজ প্রথমবার স্টেজে আমরা এইভাবে গান গাইছি, তোর বড় হওয়ার পর। যখন তোর সঙ্গে দেখা হয়েছিল কত্ত ছোট ছিলিস তুই, এখন শুধু হিন্দুস্তান নয়, বিশ্বের অন্যতম সেরা গায়িকা তুই।’ এরপর পরীণিতা ছবির ‘পিহু বলো পিয়া বোলে’ গান ধরলেন দুজনে।
এরপর ‘সোনিয়ো’ ডুয়েট ধরলেন তাঁরা। শ্রেয়ার মিষ্টি আবদার, ‘ডোন্ট স্টান্ড বাই, সিট বাই সাইট…’। হাসিমুখে পাশে বসলেন সোনু। তাঁদের সুরের মূর্ছনায় মন্ত্রমুগ্ধ দর্শককুল। শ্রেয়া গান শেষে লাজে রাঙা। বললেন, ‘আমার স্বপ্নপূরণের মুহূর্ত…. আমি সত্যি ধন্যবাদ জানাতে চাইব ইন্ডিয়ান আইডলের মঞ্চকে। যাদের জন্য আমার এই স্বপ্নটা সত্যি হল। শেষবার আমি যখন এঁনার সামনে গেয়েছিলাম, আমি বাচ্চা ছিলাম (রীতিমতো হাঁটু মুড়ে নিজের উচ্চতা দেখান শ্রেয়া)’।
হ্যাঁ, শ্রেয়া-সোনুর প্রথম আলাপ জি টিভির সারেগামাপা-র মঞ্চে। নব্বইয়ের দশকের গোড়াতে এই রিয়ালিটি শো-তে অংশ নিয়েছিলেন কিশোরী শ্রেয়া। আর সেই শো-এর সঞ্চালক ছিলেন সোনু নিগম। এদিন শ্রেয়া জানান, মঞ্চে গাওয়ার আগে প্রচণ্ড নাভার্স ছিলেন তিনি কিন্তু সাহস জোগান সোনু। বলেন, ‘আমি আছি তো’। শ্রেয়া হাসিমুখে বলেন, ‘ওই দিনটা আমার গলা খারাপ হয়ে গিয়েছিল। আমি গাইছি, সব ঠিক হয়ে যাবে। হয়তো আমাদের ফ্যানেরা এই দিনটার জন্য মানিফেস্ট করেছিল, তাই আজ আমরা একসঙ্গে গান গাইছি’।
জন্ম পশ্চিমবঙ্গে হলেও শ্রেয়ার বড় হয়ে উঠা রাজস্থানের কোটার নিকটবর্তী রাওয়াতভাতারে। কিশোরী শ্রেয়া ১৯৯৯ সালে জি টিভি-র রিয়ালিটি শো ‘সারেগামা’তে অংশ নিয়েছিলেন। তাঁর সুরের জাদুতে মন্ত্রমুগ্ধ হয়েছিল গোটা দেশ। আজকের যুগের রিয়ালিটি শো-এর মতো ছিল না তখনকার এই অনুষ্ঠান। আজ থেকে ২৩ বছর আগে ‘সারেগামা’-র চ্যাম্পিয়ান হয়েছিল এই সুরের জাদুকরী।
এরপর গত আড়াই দশক ধরে ১৫টির বেশি ভাষায় এক হাজারেরও বেশি গান রেকর্ড করেছেন শ্রেয়া ঘোষাল। লতা মঙ্গেশকরের অন্ধ ভক্ত গায়িকা। গত বছরেই শ্রেয়ার কোল আলো করে এসেছে পুত্র সন্তান। এখন কেরিয়ারের পাশাপাশি মায়ের দায়িত্ব পালনেও ব্যস্ত শিল্পী।