করোনা আক্রান্ত সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায় গত আটদিন জীবন-মৃত্যুর সঙ্গে যুদ্ধ চালিয়ে যাচ্ছেন। অদম্য ফাইটিং স্পিরিট নিয়ে লড়াই জারি রেখেছেন বাঙালির প্রিয় ফেলুদা। রবিবার অভিনেতার পরিস্থিতি অস্বাভাবিক রকম বিগড়ে যাওয়ার পর মঙ্গলবার একটু হলেও শারীরিক পরিস্থিতির উন্নতি হয়। এদিন সন্ধ্যায় সৌমিত্র কন্যা পৌলমী বসু জানান, অভিনেতার বাইপ্যাপ বা নন ইনভেসিভ ভেন্টিলেশন খুলে নেওয়া হয়েছে। এক শতাংশ হলেও তাঁর উন্নতি হয়েছে।
তবে সোশ্যাল মিডিয়ায় অভিনেতার শারীরিক পরিস্থিতি নিয়ে গুজব ছাড়ানো বন্ধ হয়নি। সৌমিত্র মারা গিয়েছেন এই বলে একাধিক পোস্ট মঙ্গলবার দুপুর থেকেই ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে, এবং সেটির সত্যটা যাচাই না করেই বহু মানুষ নিজের ফেসবুকের দেওয়ালে RIP বার্তা লিখতে থাকেন। ঠিক-ভুল বিচার না করেই ফেসবুক-হোয়াটসঅ্যাপে ভাইরাল হয়ে যায় সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়ের মৃত্যু সংবাদ। যা জেরে ব্যাপক উত্কন্ঠা শুরু হয় সৌমিত্র ভক্তদের মনে। শুধু তাই নয় হাসপাতালের বিছানায় শুয়ে থাকা সৌমিত্র ছবিও ফাঁস হয়ে যায়! শুধু সোশ্যাল মিডিয়া নয়, বেশ কিছু সংবাদ মাধ্যমেও তা সম্প্রচারিত হয়, যা নিয়ে খুব অভিনেতার পরিবার।
সোশ্যাল মিডিয়ার দেওয়ালেই মঙ্গলবার গভীর রাতে সৌমিত্র কন্যা ক্ষোভ উগড়ে দিয়ে লেখেন, ' আমার করোনা আক্রান্ত বাবার শারীরিক পরিস্থিতি নিয়ে ব্যাকত উত্কন্ঠার মাঝে আমরা অত্যন্ত মর্মাহত, দুঃখিত, এক কথায় মন ভেঙে গেছে। আইসিইউতে চিকিত্সাধীন ওঁনার ছবি এবং মেডিক্যাল বুলেটিন কোনওরকম অনুমতি ছাড়াই সোশ্যাল মিডিয়াতে ব্যাপক হারে শেয়ার করা হচ্ছে। দয়া করে ওঁনাকে একটু গোপনীয়তা এবং সম্মান দিন- এইটুকু বোধহয় ওঁনার প্রাপ্য। দয়া করে এই ধরণের ছবি অথবা তথ্য শেয়ার করা থেকে বিরত থাকুন। দয়া করে কোনও গুজবে কান দেবেন না। এটা আমাদের গোটা পরিবারের তরফে আবেদন। আপনাদের প্রার্থনা এবং শুভ কামনাকে সবসময় স্বাগত জানাচ্ছি, ধন্যবাদ।
গত ৫ অক্টোবর সৌমিত্রবাবুর করোনাভাইরাস রিপোর্ট পজিটিভ আসে। পরদিনই তাঁকে দক্ষিণ কলকাতার একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভরতি করা হয়। তারপর থেকেই সেই হাসপাতালে আছেন কোটি-কোটি মানুষের প্রিয় 'ফেলুদা'। তারইমধ্যে শুক্রবার সৌমিত্রবাবুর শারীরিক অবস্থার অবনতি হয়। মূত্রথলিতে সংক্রমণ হয়েছে বলে জানানো হয়। পরে দ্বিতীয় প্লাজমা থেরাপির পর তাঁর শারীরিক অবস্থার কিছুটা উন্নতি হয়।