বেঁচে থাকলে রবিবার তাঁর বয়স হতো ৬০! কিন্তু অকালেই চলে গিয়েছেন শ্রীদেবী। ২০১৮ সালে দুবাইয়ের সাততারা হোটেলের স্নানঘর থেকে উদ্ধার হয় শ্রীদেবীর নিথর দেহ। সেই মৃত্যু নিয়ে কম জলঘোলা হয়নি। মাত্র ৫৫-তেই না-ফেরার দেশে চলে যান দেশের প্রথম মহিলা সুপারস্টার। শ্রীদেবীর ৬০তম জন্মবার্ষিকীতে মন কেমনের কথা ভাগ করে নিলেম ‘মিস্টার ইন্ডিয়া’ পরিচালক।
শেখর কাপুর পরিচালিত এই ছবিতে শ্রীদেবীর অভিনয় আজও গেঁথে রয়েছে দর্শক মনে। ‘হওয়া হওয়াই’ গানে অসামান্য পারফরম্যান্স হোক বা ‘কাটে নেহি কাট তি’-তে পুরুষ হৃদয়ের ধুকপুকানি বাড়ানো নাচ, শ্রীদেবী সবেতেই অনন্যা। রবিবার স্মৃতির সরণি বেয়ে ৩৭ বছর পুরোনো কথা ভাগ করে নিলেন শেখর কাপুর। ‘কাটে নেহি কাট তি’ গানে আসমানি নীল শিফন শাড়িতে শ্রীদেবীর আবেদনময়ী অবতার ঝড় তুলেছিল পুরুষ হৃদয়ে। শ্রীদেবীকে দেখতেই বারবার হলে ছুটেছিলেন সিনেপ্রেমীরা। এদিন শেখর কাপুর লেখেন- ‘শুভ জন্মদিন শ্রীদেবী… যেখানেই তুমি আছো…তুমি কথা দিয়েছিল মিস্টার ইন্ডিয়ার পর অন্তত আরও একটা ছবিতে আমরা একসঙ্গে কাজ করব কিন্তু সেটা আর হল না। ভাঙা হৃদয়ে রয়ে গেলাম, তুমি চলে গেলে’।
ছবির শ্যুটিং-এর দিনের কথা ভাগ নেন পরিচালক। জানান, সেটে শ্রীদেবী তাঁর কাছ থেকে লুকিয়ে থাকছিলেন। পরে তিনি জানতে পারেন নায়িকার শরীরে ধুম জ্বর, সারা গা-য়ে অসহ্য যন্ত্রণা। মিস্টার ইন্ডিয়ার কুশীলবরা বারবার বারণ করেছিলেন, তা সত্ত্বেও জেদ নিয়েই শ্যুটিং করেন শ্রীদেবী। কোরিওগ্রাফার সরোজ খানকে দিব্যি গালিয়ে নিয়েছিলেন শ্রীদেবী, যাতে পরিচালকের কানে তাঁর অসুস্থতার খবর না পৌঁছায়। গানের শ্যুটিং শেষে গোটা ঘটনা জানতে পারেন শেখর। তিনি লেখেন, ‘সেই আইকনিক গানের শ্যুটিং-এর কথা বড্ড মনে পড়ছে। আই লাভ ইউ… গানের শ্যুটে তুমি সারাদিন আমার কাছ থেকে পালিয়ে বেড়াচ্ছিলে। শরীরে ধুম জ্বর, অসহ্য যন্ত্রণা কিছুই টের পেতে দাওনি। সবার বারণ উপেক্ষা করেছিলে। ওই অবস্থায় তোমার জলে ভেজা উচিত হয়নি, গুরুতর শরীর খারাপ হতে পারত, তুমি শোনোনি। সরোজ খানের থেকে শ্যুটিং শেষে সবটা শুনলাম, ওঁনাকে তুমি দিব্যি গালিয়েছিলে'।
এই ছবি প্রযোজনার দায়িত্বে ছিলেন শ্রীদেবীর স্বামী বনি কাপুর। শ্রীদেবীর বিপরীতে দেখা মিলেছিল তাঁর দেওর অনিল কাপুরের। শ্রীদেবী-অনিল জুটি পর্দায় যখনই ধরা দিয়েছে, তখনই ম্যাজিক তৈরি হয়েছে। এক্ষেত্রেও তেমনটাই ঘটেছিল। ভারতীয় সিনেমার অন্যতম সম্পদ মিস্টার ইন্ডিয়া।