সুশান্ত সিংয়ের মৃত্যু নিয়ে রহস্যের জট পাকানোর পর্বের মাঝেই , মূল অভিযুক্ত রিয়া চক্রবর্তীর করা একাধিক অভিযোগকে নস্যাৎ করে দিলেন প্রয়াত অভিনেতার ভগ্নিপতি বিশাল কীর্তি। শ্বেতার স্বামী পরিষ্কার জানিয়ে দেন , তিনি যা বলছেন তা সম্পূর্ণ সুশান্তের পরিবারের বাকি সদস্যদের সাথে কথোপকথনের ভিত্তিতেই বলছেন এবং তাঁর এই বক্তব্যের সাথে সুশান্তের বাবার মতামতের কোনো সম্পর্ক নেই ।
রিয়া সম্প্রতি বেশকিছু বাছাই করা চ্যানেলে দেওয়া সাক্ষাত্কারে দাবি করেছেন সুশান্তের সঙ্গে তাঁর পরিবারের সম্পর্ক মোটেই ভালো ছিলো না । সুশান্তের বাবা নাকি তাঁর মাকে ছেড়ে চলে গিয়েছিল এবং সুশান্তের মাও নাকি মানসিক অবসাদের শিকার ছিলেন। সুশান্তের দিদিরাও নাকি ভাইয়ের খোঁজ নিত না, বলেই অভিযোগ করেন রিয়া।
মানসিক স্বাস্থ্যের বিষয়টিকে আসল অপরাধীরা ঢাল হিসেবে ব্যবহার করছেন, নিজের ব্লগে উল্লেখ করেন বিশাল। রিয়া সম্প্রতি সাক্ষাৎকারে জানিয়েছেন সুশান্তের দিদি মীতু ভাইয়ের শারীরিক অসুস্থতার লক্ষণ থাকা সত্ত্বেও তাঁর সাথে মুম্বইয়ের সেই ওয়াটার স্টোন রিসর্টে থাকতে চান নি । এই সেই রিসর্ট যেখানে মাসাধিক কাল আধ্যাত্মিক চিকিত্সরা হয়েছে প্রয়াত অভিনেতার, রিয়া এবং তাঁর পরিবারের তত্ত্বাবধানে । কিন্তু এই প্রসঙ্গে বিশাল মীতুর পাশে দাঁড়িয়ে লেখেন ' আসল ঘটনা হল , সুশান্ত নিজের এবং দিদির ফ্লাইটের টিকিট বুক করে ফেলেছিল কারণ ও দিদির সাথে চন্ডীগড় চলে আসতে চেয়েছিলো । কিন্তু চক্রান্ত করে ষড়যন্ত্রকারীরা সেই টিকিট বাতিল করাতে ওকে বাধ্য করে ।
তদন্তে নেমে এই মামলার মূল অভিযুক্ত রিয়া চক্রবর্তীর সঙ্গে মাদক পাচার চক্রের যোগসাজশের হদিশ পেয়েছেন ইডি- র আধিকারিকেরা । কাজেই ড্রাগ সংক্রান্ত নানা রহস্যের সমাধানে এবার আসরে নেমেছে নারকোটিকস ব্যুরো । সম্প্রতি রিয়া ইডিয়া টুডেকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে দাবি করেছেন সুশান্ত নিয়মিত মারিজুয়ানা সেবন করতেন এবং তিনি অনেক চেষ্টা করেও তাঁর সেই অভ্যাস ছাড়াতে পারেননি । কিন্তু এই প্রসঙ্গে রিয়াকে ভৎসর্না করে বিশাল লেখেন 'কোন ধরণের পার্টনার তাঁর সঙ্গীর পরিস্থিতি জেনে বুঝেও বাড়িতে মাদক সংগ্রহ করে রাখে ? আবার অভিযুক্ত নিজেই দাবি করছেন তিনি কোনওদিন মাদক নেন নি অথচ তদন্তে বাড়িতে মাদকের হদিশ । এর দুরকম অর্থ হতে পারে , ১ . সুশান্তকে রিয়া স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে মাদক সেবন করাতেন ( যে অভিযোগ এফআইআরে করা হয়েছে ) অথবা ২. রিয়া নিজে মাদক সেবন করতেন এবং এখন মিথ্যে কথা বলছেন।
এছাড়াও সুশান্তের সাথে তাঁর বাবার পারস্পরিক সম্পর্কের অবনতি ও টানা ৫ বছর যোগাযোগ না রাখার যে দাবি রিয়া করেছেন, তাকে নস্যাৎ করে দিদি শ্বেতার স্বামী লেখেন 'সুশান্ত ও তাঁর বাবার সম্পর্ক কেমন ছিল তা ওদের পারিবারিক একটি ঘটনার উল্লেখের মাধ্যমেই পরিষ্কার হয়ে যাবে । আমার শ্বশুরমশাই সুশান্ত এবং প্রিয়াঙ্কাদির সঙ্গে একসাথে থাকতে দিল্লি গিয়েছিলেন । সুশান্ত তখন ওখানে হাই স্কুলের ছাত্র এবং প্রিয়াঙ্কাদি কলেজে পড়তেন । সন্তানের পড়াশোনায় সাহায্য করতে , তার পাশে থাকতে ছেলের কাছে গিয়ে থাকতেন উনি । আমার স্ত্রী তখন পাটনার সবথেকে নামি স্কুলে পড়ছে এবং সেই কারণেই আমার প্রয়াত শাশুড়ি মা তখন ছেলের কাছে গিয়ে থাকতে পারেন নি । ব্যক্তিগত ভাবে আমার এই ঘটনাকে আর পাঁচটা সাধারণ মধ্যবিত্ত পরিবারের মতোই মনে হয় যেখানে মা-বাবা দিনের পর দিন ত্যাগ স্বীকার করেন যাতে তাঁদের সন্তানেরা বড় হয়ে উঠতে পারে , সমাজে সুপ্রতিষ্ঠিত হতে পারে ' ।
বিশাল শুধু সুশান্তের জামাইবাবু নন, প্রয়াত অভিনেতার স্কুলের সিনিয়ারও। ছোটবেলা থেকেই সুশান্তকে চেনেন বিশাল। বিশালের কথায় সুশান্ত একজন ‘ফাইটার’ সে আত্মহত্যার মতো সিদ্ধান্ত কোনওদিনই নিতে পারে না।