সিনেমার ব্যবসায় বিনিয়োগ করেও খান্ত হননি। মাদক পাচারে জড়িয়ে পড়লেন তামিল সিনেমার প্রযোজক। NCB-র তরফে জানা যাচ্ছে, ওই প্রযোজক একটা মাদক পাচারকারী দলের মাস্টারমাইন্ড। আর এই ব্যবসায় তিন বছরে প্রায় ২০০০ কোটি টাকা আয় করেছে প্রযোজক ও তাঁর মাদক পাচারকারী দল।
সম্প্রতি নারকোটিক্স কন্ট্রোল ব্যুরো (NCB) এবং দিল্লি পুলিশের যৌথ দল মাদক সহ মোট ৩জনকে গ্রেপ্তার করে। তাঁদের কাছে উদ্ধার হয় ৫০ কেজি মাদক তৈরির রাসায়নিক। যা শুকনো নারকেলের মধ্যে লুকিয়ে অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ডে পাঠানো হচ্ছিল। ধৃত তিন ব্যক্তিই জেরার মুখে তামিল ফিল্ম প্রযোজকের নাম নিয়েছেন। জানিয়েছেন তিনিই মাস্টারমাইন্ড। ওই প্রযোজক অবশ্য বর্তমানে পলাতক।
ধৃতদের বিষয়ে এক বিবৃতিতে সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন NCB-র ডেপুটি ডিরেক্টর জেনারেল (ডিডিজি) জ্ঞানেশ্বর সিং। তিনি জানান, গ্রেফতার হওয়া তিন ব্যক্তি NCB-কে জানিয়েছে, তাঁরা গত তিন বছরে মোট ৪৫টি সিউডোফেড্রিন চালান করেছে। এই চালানগুলিতে প্রায় ৩,৫০০ কিলোগ্রাম সিউডোফেড্রিন ছিল। যার আনুমানিক মূল্য আন্তর্জাতিক বাজারে ২,০০০ কোটি টাকারও বেশি।
জ্ঞানেশ্বর সিং আরও বলেন, প্রায় চার মাস আগে অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ড কর্তৃপক্ষের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে তদন্ত শুরু করে এনসিবি এবং দিল্লি পুলিশের দল। তাঁরা এই মাদক পাচারকারী দলটিকে ধরে ফেলে। যে দলটি ভারত থেকে অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ডে শুকনো নারকেলের মধ্যে লুকিয়ে সিউডোফেড্রিন পাঠাচ্ছিল। পাশাপাশি, মার্কিন ড্রাগ এনফোর্সমেন্ট অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (ডিইএ) তথ্য দিয়ে দিল্লিকে এই পাচারের উৎস হিসেবে চিহ্নিত করেছে।
এই টিমের মাস্টারমাইন্ড একজন তামিল চলচ্চিত্র প্রযোজক বলে জানানো হয়। যদিও তিনি বর্তমানে পলাতক রয়েছেন। তাকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা করা হচ্ছে যাতে সিউডোফেড্রিনের উৎস সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া যায়।
কীভাবে পর্দাফাঁস করল NCB ও দিল্লি পুলিশ?
এনসিবি এবং স্পেশাল সেলের আধিকারিকরা ১৫ ফেব্রুয়ারি পশ্চিম দিল্লির বাসাই দারাপুর এলাকায় অবস্থিত একটি গোডাউনে অভিযান চালায়। সেখানেই মাল্টি-গ্রেইন ফুড মিক্সের একটি চালানে লুকিয়ে রাখা ৫০ কেজি সিউডোফেড্রিন বাজেয়াপ্ত করা হয় এবং তামিলনাড়ু থেকে আসা তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। এনসিবি-র এক মুখপাত্র জানিয়েছেন, দিল্লি পুলিশের স্পেশাল সেল ২৪ ঘণ্টা নজরদারি চালাচ্ছে।
সিউডোফেড্রিন কী?
এনসিবি জানিয়েছে, সিউডোফেড্রিন হল পূর্ববর্তী রাসায়নিক এবং এটা মেথামফেটামিন তৈরিতে ব্যবহৃত হয় যার বিশ্বব্যাপী চাহিদা রয়েছে। এটা অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ডে প্রতি কেজি প্রায় দেড় কোটি টাকায় বিক্রি হয়।
সিউডোফেড্রিন একটি অত্যন্ত আসক্তিযুক্ত সিন্থেটিক ড্রাগ। যদিও এটার কিছু আইনি ব্যবহার রয়েছে। এটা আমাদের দেশে একটি নিয়ন্ত্রিত পদার্থ হিসাবে শ্রেণীবদ্ধ করা হয়। এর উৎপাদন, বাণিজ্য, রপ্তানি এবং ব্যবহারের উপর কঠোর নিয়ন্ত্রণ রয়েছে। এনডিপিএস আইনের অধীনে সিউডোফেড্রিন অবৈধ ব্য়বহার ও বাণিজ্যে ১০ বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড হতে পারে।