WWE সুপারস্টার 'দ্য গ্রেট খালি' সোশ্যাল মিডিয়ায় বেশ সক্রিয়। তাঁকে প্রতিনিয়ত সোশ্যাল মিডিয়ায় বিভিন্ন ধরনের ভিডিয়ো শেয়ার করতে দেখা যায়। তাঁর কিছু ভিডিয়ো এতই মজার যে হাসি থামাতে পারবেন না। এমনই এক বিপজ্জনক ভিডিয়ো সামনে এসেছে।
ভিডিয়োতে দেখা গিয়েছে হোটেলের রান্নাঘরে কিছু রান্না করার চেষ্টা করছেন খালি। একটি পাত্রে কিছু মশলা দিয়ে তা নাড়ছিলেন। কিন্তু পরে ওতে আগুন ধরে যায়। আর তা মুহূর্তের মধ্যে এতটাই জ্বলে ওঠে যে কেউ ভয় পেয়ে যাবে। খালি বাম হাতে ধরা অবস্থায় পাত্রটি মাটিতে ফেলে দেন ফলে আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে। আরও পড়ুন: মঙ্গলসূত্রের ডিজাইনে শুধু নয়, দামেও চমক! বলি নায়িকাদের কালেকশন দেখুন
এই ভিডিয়োটি খালি তাঁর ইনস্টাগ্রাম পেজ thegreatkhali থেকে শেয়ার করেছেন। সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রচুর লাইক এবং কমেন্টে পড়েছে ভিডিয়োতে। এমনকি ঝড়ের গতিতে ভাইরাল হয়েছে এই ভিডিয়ো। কেউ বলছেন, পুরো রান্নাঘরে আগুন লেগে যেত, কেউ বলছেন, বড় লোকের জন্য তৈরি করা হয়েছে আগুন।
দ্য গ্রেট খালি-র জীবন কাহিনি
দ্য গ্রেট খালি। তাঁর পরিচয়ের জন্য এই নামটাই যথেষ্ট। হিমাচল প্রদেশের একটি গরিব পরিবারের ছেলে কী ভাবে ‘দ্য গ্রেট’ হয়ে উঠলেন? আজ গোটা দুনিয়া তাঁকে দ্য গ্রেট খালি হিসেবেই চেনে। খালির এই গ্রেট হওয়ার পিছনে যে কাহিনি রয়েছে তা শুনলে তাজ্জব হয়ে যেতে হয়। ‘দ্য ম্যান হু বিকেম খালি’ এই বইটিতেই রয়েছে তাঁর সাফল্যের কাহিনি।
হিমাচল প্রদেশের সিরমোর জেলার ধিরাইনা গ্রামের এক গরিব পঞ্জাবি রাজপুত পরিবারে জন্ম খালির। দুনিয়া তাঁকে খালি হিসেবে চিনলেও, তাঁর আসল নাম দলীপ সিংহ রাণা। তিনি ভারতের প্রথম কুস্তিগির যিনি ডব্লুডব্লুই-তে অংশ নিয়েছেন। ছোটবেলায় এমনও দিন গিয়েছে, যে আড়াই টাকা স্কুলের ফি দেওয়ার মতো সামর্থ্যও ছিল না তাঁর পরিবারের। সালটা ১৯৭৯। সে বছরে প্রচুর গরম ছিল। ফলে তাঁর পরিবার ফসলের যে চাষ করেছিল সব শুকিয়ে যায়। পরিবারের হাতে টাকা ছিল না। ফলে স্কুলের ফি-ও দিতে পারেননি। আর ফি দিতে না পারার জন্য স্কুল থেকে বার করে দেওয়া হয়েছিল তাঁকে।
এর পরই খালি সিদ্ধান্ত নেন আর স্কুলমুখো হবেন না। স্কুলের সঙ্গে সব সম্পর্ক ছিন্ন করেন। সেই শেষ স্কুলে যাওয়া। এর পরই দিনমজুরের কাজে লেগে পড়েন তিনি। দিনমজুরের কাজ করার পাশাপাশি বাবার চাষের কাজেও সাহায্য করতেন। আট বছর বয়স থেকেই মজুরের কাজ শুরু করেন খালি। এর জন্য মজুরি হিসেবে দৈনিক ৫ টাকা পেতেন। আর এই ৫ টাকাই ছিল একরত্তি ছেলের কাছে বড় মূলধন।
খালিরা সাত ভাইবোন। ছোটবেলায় খালি অ্যাক্রোমেগালি নামে এক দুর্লভ রোগের শিকার হন। তার পর থেকেই তাঁর চেহারায় পরিবর্তন আসতে শুরু করে। এই রোগের বিশেষত্ব হল, দেহের আকৃতি বিশাল হয়। মুখ লম্বাকৃতি হয়। তাঁর বিশাল চেহারার জন্য খালি এর পর শিমলাতে নিরাপত্তারক্ষীর কাজ পান। এই কাজ করার সময় এক পুলিশ আধিকারিকের চোখে পড়েন তিনি। ১৯৯৩-তে পঞ্জাব পুলিশে যোগ দেন তিনি।
পুলিশ নয়, কুস্তিগীর হওয়ার লক্ষ্য ছিল খালির। তাই জালন্ধরে পৌঁছেই জিমে ঢোকেন। নিজেকে কুস্তিগীর হিসেবে প্রস্তুত করেন। ১৯৯৭ ও ১৯৯৮ সালে পরপর দু’বার মিস্টার ইন্ডিয়া হন তিনি। এর পরেই আমেরিকা থেকে স্পেশাল রেসলিং ট্রেনিংয়ের জন্য ডাক পান তিনি। ২০০০-এ প্রথম পেশাদার রেসলার হিসেবে ‘জায়ান্ট সিং’ নামে অল প্রো রেসলিংয়ে নামেন। ২০০৬-এ প্রথম ভারতীয় পেশাদার রেসলার হিসেবে ডব্লুডব্লুই-এর সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হন। ২০০৭-এ ওয়ার্ল্ড হেভিওয়েট বিভাগে ডব্লুডব্লুই চ্যাম্পিয়ন হন।