'গদর-২', ‘দ্য কাশ্মীর ফাইলস’, ‘দ্য কেরালা স্টোরি’-র মতো ছবিগুলি সমাজের পক্ষে ক্ষতিকর। সম্প্রতি এমনই মন্তব্য করেছেন বর্ষীয়ান অভিনেতা নাসিরুদ্দিন শাহ। সাম্প্রতিক সময়ের এই ছবিগুলি দেখে বলিউড ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রির ভবিষ্যৎ নিয়েও প্রশ্ন তোলেন নাসিরুদ্দিন। তবে তাঁর এহেন মন্তব্য নজর এড়ায়নি পরিচালক বিবেক অগ্নিহোত্রীর। বর্ষীয়ান অভিনেতাকে পাল্টা আক্রমণ করেছেন বিবেক।
সাম্প্রতিক সাক্ষাৎকারে নাসিরুদ্দিন শাহকে খোঁচা দিয়ে বিবেক বলেন, ‘উনি দ্য কাশ্মীর ফাইলস-এর সাফল্যে বিরক্ত হতে পারেন, কারণ এই ছবির মাধ্যমে ওঁর অতীতের সত্য উন্মোচিত হয়েছে। মানুষ সাধারণত অন্য কারো শিল্পের মাধ্যমে সকলের সামনে নগ্ন হওয়া পছন্দ করেন না।’ বিবেক আরও বলেন, ‘নাসিরুদ্দিন শাহ এমন ছবিতে অভিনয় করেন, যে ছবি গণহত্যাকে সমর্থন করে এবং এটা ওঁর ধর্মের কারণে বা হতাশার কারণে হতে পারে। তবে যে কারণেই হোক না কেন, সম্ভবত উনি সন্ত্রাসীদের সমর্থন করেন। নাসির যা বলেন তা আমি পাত্তাও দিই না কারণ সন্ত্রাসবাদের প্রতি আমার কোনও সহনশীলতা নেই, হয়তো উনি তাদের ভালোবাসেন। আমি নাসির ভাইয়ের অভিনয় দেখেই দ্য তাসখন্দ ফাইলস-এ ওঁকে কাস্ট করেছিলাম। কিন্তু তারপরে ওঁর এমন ভীমরতি হল কী করে কে জানে!’
আরও পড়ুন-বক্স অফিসে শাহরুখ 'শাসন'! সপ্তম দিনের মাথায় ‘জওয়ান’-এ ব্যবসা কত হল?
আরও পড়ুন-সানির গদর-২ লম্বা রেসের ঘোড়া, তবে 'জওয়ান'-এর দৌড়ের সামনে সেটা যেন বড়ই নড়বড়ে!
এখানেই শেষ নয়, আরও এক সাক্ষাত্কারে, বিবেক অগ্নিহোত্রী নাসিরুদ্দিন শাহের পছন্দ নিয়েও প্রশ্ন তোলেন। বিবেক বলেন, ‘উনি এমন ছবি পছন্দ করেন যেগুলি সবসময় ভারতের সমালোচনা করে।’ তাঁর কথায়, ‘কিছু মানুষ জীবনে হতাশ। তাঁরা সবসময় নেতিবাচক খবর এবং নেতিবাচক জিনিসগুলিতে বিশ্বাস করেন, তাই আমি জানি না নাসির ভাই কী পছন্দ করেন।’ বিবেকের কটাক্ষ, ‘নাসিরুদ্দিন যা বলেন তা হয়ত ওঁর বার্ধক্য বা জীবনের হতাশার কারণে।’
এদিন বিবেক অগ্নিহোত্রী বলেন, ‘দ্য ভ্যাকসিন ওয়ার গত ৭-৮ মাস ধরে তৈরি হচ্ছে জেনেও এটা নিয়ে বলিউডের কারোর মাথা ব্যথা নেই। এই ছবির প্রচার তো অনেক দূরের কথা, এটা নিয়ে কেউ চর্চাও করছেন না।’
সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে নাসিরকে বলিউডের সিনেমা নির্মাণের ধারার সাম্প্রতিক বদল নিয়ে নাসিরুদ্দিন শাহ বলেন, জনপ্রিয়তা এখন জিঙ্গোইজম দ্বারা চালিত। যা তাঁর মতে ক্ষতিকারক। নাসিরুদ্দিন বলেন, 'এখন আপনি যত বেশি জিঙ্গোইস্ট হবেন, তত বেশি জনপ্রিয় হয়ে উঠবেন। কারণ এই ভাবনাই এখন দেশে চলছে। দেশকে ভালোবাসা স্পষ্ট নয়, তা ঢাকঢোল পিটিয়ে বলতে হবে। লোকেরা বুঝতে পারে না যে তারা যা করছে তা খুব ক্ষতিকারক। এই যেমন, 'কেরালা স্টোরি' এবং 'গদর ২'-এর মতো ছবি, আমি সেগুলি দেখিনি তবে আমি জানি সেগুলি কী।’ তাঁর কথায়, ‘এটা বিরক্তিকর যে 'কাশ্মীর ফাইলস'-এর মতো চলচ্চিত্রগুলি এত ব্যাপকভাবে জনপ্রিয় যেখানে সুধীর মিশ্র, অনুভব সিনহা এবং হনসল মেহতা, যাঁরা সত্য ঘটনা চিত্রিত করার চেষ্টা করছেন তাঁদের সেই ছবি লোক দেখেন না।…বর্তমানে যা ঘটছে তাকে রিগ্রেসিভ বললেও কম বলা হবে। কোনো কারণ ছাড়াই কোনও সম্প্রদায়কে ছোট করা একটা বিপজ্জনক প্রবণতা'।