অনেক বছর আগেই আফগানিস্তান ছেড়েছেন তিনি। কিন্তু শৈশবে দেশের মাটিতে তালিবানদের যে রূপ তিনি দেখেছেন, সেই স্মৃতি এখনও পিছু ছাড়েনি তাঁর। ইয়াসমিনা আলি। আফগানিস্তানের একমাত্র ‘প্রাপ্তবয়স্কদের ছবি’র অভিনেত্রী। কথ্য ভাষায় পর্ন-ছবির অভিনেত্রী ইয়াসমিনা। পেশার জগতে যাঁকে অনেকে খাদিজা কোহেন নামেও চেনেন। অনেকের মতেই আফগানিস্তানের একমাত্র পর্ন-তারকা তিনি।
এই মুহূর্তে ইংল্যান্ডের বাসিন্দা তিনি। সম্প্রতি সংবাদমাধ্যমের কাছে তালিবানদের সম্পর্কে ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন এই অভিনেত্রী। তাঁর দাবি, মুখে যাই বলুন না কেন, তালিবানরা পর্ন দেখেন। দেখেন, ইয়াসমিনের ছবিও।
সম্প্রতি ‘আই হেট পর্ন’ নামের একটি পডকাস্ট চ্যানেলে হাজির হন তিনি। সঞ্চালক টমি ম্যাকডোনাল্ডকে বলেন, ‘ওরা বিশেষ করে আমার ছবিগুলিকে ঘৃণা করে। ওরা চায় না পর্ন ছবির সঙ্গে আফগানিস্তানের নাম জড়িয়ে যাক। তাছাড়া তালিবানি ভাবনায় মেয়েদের শরীর প্রদর্শন ঘোরতর অপরাধ।’
ইয়াসমিনার কথায়, তিনি নিজেকে পুরোদস্তুর আফগান বলেই মনে করেন। যদিও ধর্ম বা ঈশ্বরে তাঁর কোনও বিশ্বাস নেই। তাঁর ধারণা, তালিবানরাও তাঁর ছবি দেখেন। পডকাস্টে তিনি বলেছেন, ‘ওরা আমার কথা আগেই শুনেছে। একবার আফগান-পর্ন লিখে ইন্টারনেটে সার্চ করলে আমাকেই খুঁজে পাবেন। এতটাই সহজ এই কাজ।’
তাঁর শরীরের অধিকার যে কেবল তাঁরই, সেকথাও জোর দিয়ে বলেছেন এই অভিনেত্রী। তাঁর কথায়, ‘ওরা মনে করে আমার শরীরের উপর শুধু ওদের কর্তৃত্ব রয়েছে। আর আমি যদি সবার সামনে শরীর প্রদর্শন করি, তবে আমার দেশপ্রেমে ঘাটতি আছে।’
নয়ের দশকে যখন প্রথম বার তালিবানরা ক্ষমতার দখল নেয়, তখনই ইয়াসমিনা বুঝতে পেরেছিলেন, কীভাবে মেয়েদের স্বাধীনতা কেড়ে নিচ্ছিল তালিবানরা। তাঁর মা নাকি তাঁকে তখন বলতেন, আফগানিস্তানে ‘ধর্ষণ’ বলে কোনও কিছু হয় না। তালিবান চাইলে যে কোনও মেয়ের সঙ্গে যা খুশি করতে পারে। তখনই মায়ের সঙ্গে ইংল্যান্ডে পালিয়া যান তিনি। এবারেও তালিবানরা ক্ষমতায় আসার পরে একই ছবি দেখছেন তিনি। তেমনই মত তাঁর। নিজের দেশকে এভাবে তালিবানের পায়ের তলায় পড়ে থাকতে দেখে হতাশ এই অভিনেত্রী।