বাংলাকে বলাই হয় কালী ক্ষেত্র। এখানে একাধিক কালী মন্দির রয়েছে। তবে বাংলার বীরভূমে ছড়িয়ে রয়েছে বহু কালী মন্দির যার ইতিহাসের সঙ্গে জড়িয়ে আছে নানান জনশ্রুতি। আর বীরভূমের এই অনেক কালীমন্দিরের অন্যতম হল গুহ্য কালী।
নলহাটিতে গুহ্য কালীর মন্দির রয়েছে। মহারাজ নন্দকুমার নাকি এই মন্দির প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। এমনটাই জানা যায় লোকমুখে। আমরা দেবী কালীর যে রূপ দেখে অভ্যস্থ এখানে দেবীকে তার থেকে অনেকটাই আলাদা দেখতে। পঞ্চ মুণ্ডির আসনে সর্পবেদিতে দেবী অধিষ্ঠিত এখানে। সর্প দিয়েই দেবী এখানে সজ্জিত। বর্তমানে যে দেবী রূপ আমরা দেখতে পাই এই মন্দিরে সেই দেবী রূপ তথা মূর্তি নিয়েও নানান জনশ্রুতি রয়েছে।
পাতাললোকে নাকি একটা সময় পর্যন্ত দেবীর পুজো হতো। জরাসন্ধ দেবীর স্বপ্নাদেশ পেয়ে এই পুজো করতেন। এরপর বহু বছর কেটে যায়। একটা সময় মাটির নিচ থেকে অহল্যা এই মূর্তি খুঁজে পান এবং সেটা রাজা চৈত সিংহকে দান করেন। এরপর মহারাজ নন্দকুমার স্বপ্নাদেশ পান দেবীর। তখন তিনি গিয়ে এই দেবী মূর্তি এনে বাংলায় প্রতিষ্ঠা করেন।
মনে করা হয় এই দেবী ভীষণই জাগ্রত। যে যা মনস্কামনা জানায় দেবীকে সেটা নাকি পূরণ হয়। এই মন্দির দক্ষিণমুখী এবং আটটি কোণ আছে এতে। মন্দিরটি ইঁট দিয়ে তৈরি। যাতে সহজেই এই মন্দির প্রদক্ষিণ করা যায় সেটার পথ করা আছে।
পাথর দিয়ে তৈরি তিনটি প্রবেশ দ্বার আছে এই মন্দিরে।
শোনা যায়, এই মন্দির যখন তৈরি করা হচ্ছিল তখন মন্দিরের উত্তরপূর্ব দিকে ফাটল দেখা যায়। সেই ফাটল মেরামত করতে তৎপর হোক দেবী ফের স্বপ্নাদেশ দেন যে এই মন্দির মেরামত করার প্রয়োজনীয়তা নেই। তাই এখনও এই মন্দিরে গেলে সেই ফাটল দেখা যায়।
কালীপুজোর দিন অনেক দূর দূর থেকে ভক্তরা আসেন এই মন্দিরে।