কংগ্ৰেস সরকারের আমলেই সংস্কারের প্রস্তাব উঠেছিল। তবে নানা কারণে সে সময় আর পরিকল্পনা বাস্তবায়িত হয়নি। অবশেষে সেই পরিকল্পনা অনুযায়ী ২০২৩ সালে হেরিটেজ সায়েন্স মিউজিয়াের নির্মাণ কাজ শুরু হতে পারে। বিজ্ঞানী আচার্য জগদীশচন্দ্র বসুর তিনতলা বাড়িকে কেন্দ্র করে গড়ে উঠবে এই মিউজিয়াম।
প্রায় ১০০ বছর পুরোনো বাড়িটি যখন তৈরি হয়, তখন বাংলায় নবজাগরণের যুগ। জেসি বোস কমিটির তত্ত্বাবধানে এতদিন সেখানে ছোট একটি মিউজিয়াম ছিল। এবারে সেই বাড়িতেই তৈরি হচ্ছে বড়সড় মিউজিয়াম। টাইমস অফ ইন্ডিয়া সূত্রে খবর, ভারতীয় জাতীয় ট্রাস্টের তত্ত্বাবধানে এই বড়সড় সংস্কার প্রকল্প চলবে। কিভাবে মিউজিয়ামটি গড়ে তোলা হবে তার নকশাও ইতিমধ্যে তৈরি হয়ে গিয়েছে। মোট ৫ কোটি টাকার প্রকল্পটিকে সংস্কৃতি মন্ত্রক সম্প্রতি অনুমোদন দিয়েছে। এর মধ্যে বেশিরভাগটাই অবশ্য অনুদান হিসেবে পাওয়া। এতদিন বিজ্ঞানী জগদীশচন্দ্র বসুর কিছু ব্যক্তিগত সংগ্ৰহ নিয়ে একদিকের ঘরে চলছিল মিউজিয়াম। সরকারি অনুমোদন পাওয়ার পর এই ধাঁচে অনেকটাই বদল আসতে চলেছে।
দুটি পর্যায়ে এই সংস্কারের কাজ চলবে। তিনতলা বাড়ির এক পাশে মিউজিয়ামের জন্য কিছু জরুরি সংস্কার করা হবে। অন্য পাশের পুরোনো ঘরদোরগুলো ১০০ বছর আগে যেমন ছিল, সেই আদলে নির্মিত হবে। তিনতলা বাড়ির প্রধান সিঁড়ি মেহগিনি কাঠ দিয়ে তৈরি। নতুন মিউজিয়াম হলে সেটির উপর চাপ বাড়তে পারে। তাই বাড়ির এক অংশে আরেকটি সিঁড়ি, লিফ্ট, বিশ্রাম নেওয়ার ঘর ও ক্যাফেটেরিয়া তৈরির পরিকল্পনা করা হয়েছে। যে ঘরগুলো আগের ১০০ বছর আগের আদলে তৈরি হবে, তার মধ্যে রয়েছে বিজ্ঞানীর ব্যক্তিগত গবেষণাগার। এটি এশিয়ার প্রথম ব্যক্তিগত গবেষণাগার। এছাড়াও, পুরোনো আদলেই সেজে উঠবে শোওয়ার ঘর, বাথরুম আর ডার্করুম। এই ডার্করুমেই ছবির নেগেটিভ ডেভেলপ করতেন বিজ্ঞানী। পুনর্নিমাণের তালিকায় রয়েছে জগদীশচন্দ্র বসুর ফ্রেস্কোর ঘরটিও। ঘরটিতে নন্দলাল বসুর আঁকা অজন্তা গুহাচিত্রের ফ্রেস্কো ও ভগিনী নিবেদিতার পরিকল্পিত ভারতমাতার একটি ম্যুরাল রয়েছে।
ঘরগুলোর রিমডেলিং ছাড়াও ছাদে ছোটদের জন্য তৈরি হবে একটি গবেষণাগার। ছোটরা এই ঘরে ভারপ্রাপ্ত আধিকারিকদের নজরদারিতে বিভিন্ন পরীক্ষানিরীক্ষা হাতেকলমে করে দেখতে পারবে। এছাড়াও থাকছে একটি সেন্সরি বাগান যেখানে সূর্যমুখীর মতো বেশ কিছু ফুলগাছ থাকছে। জগদীশচন্দ্র বসু প্রথম বেতার প্রযুক্তি আবিষ্কার করেন। তাই সে কথা মাথায় রেখে পুরো তিনতলা বাড়িকে ওয়াইফাই জোন করার পরিকল্পনা রয়েছে। এখন শুধু ট্রাস্টের তরফে অনুমোদনের অপেক্ষা। অনুমোদন পেলেই শুরু হয়ে যাবে সংস্কার কাজ।