বড়দিনে আলোয় সাজানো হয় পার্ক স্ট্রিট। তা দেখতে শুধু কলকাতাবাসীরাই নন, শহরের বাইরে থেকেও অনেকে হাজির হন এখানে। কিন্তু গত দুটো বড়দিনের বিষয় আলাদা। গত বছরও ছিল কোভিডের ভয়। এবার কোভিডের ওমিক্রন রূপের হাত ধরে থার্ড ওয়েভ আসার আতঙ্ক। কিন্তু তার মধ্যেও এ বছর পার্ক স্ট্রিটে বিপুল ভিড়। আর তা দেখেই আতঙ্কে অনেকে।
বছর ৪৫-এর অর্পিতা হাজরা যেমন। বাড়িতে বাবা-মা রয়েছেন। দু’জনেরই বয়স ৮০-র আশপাশে। অর্পিতার কথায়, ‘এই সময়ে এমন ভিড় মোটেই ভালো নয়। সকলেই চিন্তায় আছি ওমিক্রন কতটা ক্ষতি করতে পারে তা নিয়ে। বিশেষ করে যাঁদের বাড়িতে বয়স্ক এবং অসুস্থ মানুষ রয়েছেন, তাঁদের চিন্তা তো বেশিই। সে সময় এমন ভিড় দেখলে ভয়ই লাগে। সংক্রমণ বাড়লে তো সকলেই ক্ষতিগ্রস্ত হবেন।’
বড়দিনে ভিড় নিয়ন্ত্রণের জন্য পুলিশ প্রশাসনের তরফে বারবার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। স্বাস্থ্যবিধির বিষয়ে মাইকে ঘোষণা করে সচেতন করা হয়েছে। কিন্তু তার পরেও অনেকেই স্বাস্থ্যবিধির তোয়াক্কা না করে বিনা মাস্কে ঘুরে বেরিয়েছেন। অনেককে গ্রেফতার করা হয়েছে। অনেককে আটক করা হয়েছে। কিন্তু তার পরেও অনেক মানুষ এসবকে পাত্তা না দিয়েই ভিড়ের মধ্যে ঘুরে বেরিয়েছেন।
বহু বছর ধরেই পার্ক স্ট্রিটের আলোর সাজ দেখতে যান দমদম এলাকার বাসিন্দা সুব্রত রায়। তাঁর কথায়, ‘দু’বছর আগেও ছেলেকে নিয়ে পার্ক স্ট্রিটের আলো দেখতে গিয়েছি। কিন্তু এই দু’বছরে আর যাইনি। আলোর সাজ তো পরেও দেখা যাবে। কিন্তু শুধু শুধু এ কারণে বিপদ বাড়াতে চাই না।’ এই ভিড় নিয়ন্ত্রণ শুধুমাত্র প্রশাসনের দায়িত্বের মধ্যে পড়ে না বলে মত তাঁর। ‘নিজেরা সচেতন না হলে বিপদ বাড়বে’, বলছেন তিনি।
বড়দিনের ছুটিতে শুধু পার্ক স্ট্রিট নয়, গোটা কলকাতা শহরের বহু জায়গাতেই মারাত্মক ভিড় হল। ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়্যাল, জাদুঘর, চিড়িয়াখানায় হাজির হলেন প্রচুর মানুষ। আর এটাই ওমিক্রনের আশঙ্কা বাড়িয়ে দিতে পারে বলে, থার্ড ওয়েভের আশঙ্কা বাড়িয়ে দিতে পারে বলে ভাবতে শুরু করেছে কিছু মহল।