গুজরাট, কেরল, মহারাষ্ট্রের পর বাংলাতেও কার্যত ভয় ধরাচ্ছে মাম্পস। ইতিমধ্যেই কলকাতা এবং উত্তর ২৪ পরগনায় এই ভাইরাস ঘটিত রোগ ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। যা নিয়ে আতঙ্কে ভুগছেন অভিভাবকরা। মূলত ৫ থেকে ১৪ বছর বয়সি শিশুরা এই রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। এই অবস্থায় বাচ্চাদের কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রকের কাছে নিখরচায় মাম্পস, মিজিলস এবং রুবেলা বা এমএমআর ভ্যাকসিন দেওয়ার দাবি জানিয়েছে ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউশন অব পেরিয়েট্রিক্স অ্যাসোসিয়েশন।
আরও পড়ুনঃ লাফিয়ে বাড়ছে মাম্পস, এই লক্ষণগুলি দেখলেই ডাক্তারকে দেখান
গরম পড়তেই এই রোগের প্রাদূর্ভাব বাড়ছে। তথ্য অনুযায়ী, ১০ জন বাচ্চার মধ্যে ৪ থেকে ৫ জন এই রোগে আক্রান্ত । স্বাভাবিকভাবেই এ নিয়ে উদ্বিগ্ন স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা। সাধারণত সাময়িক জাতীয় স্বাস্থ্য মিশন প্রকল্পের আওতায় শিশুদের এমআর (মিজিলস, রুবেলা) ভ্যাকসিন দেওয়া হয়। এক্ষেত্রে শিশুর বয়স ৯ থেকে ১৫ মাসের মধ্যে দুটি এমআর টিকা দেওয়া হয় । তবে মাম্পসের ভ্যাকসিন দেওয়ার রীতি নেই। সেক্ষেত্রে বেসরকারি হাসপাতালে বাড়তি সতর্কতা অবলম্বন করা হয়। যদিও বেশ কিছু বেসরকারি হাসপাতালের তরফে শিশুদের এমএমআর ভ্যাকসিনের ব্যবস্থা করা হয়। সেক্ষেত্রে ৫ বছর বয়সে ভ্যাকসিন দেওয়া হয়।
মাম্পসের লক্ষণ কী?
স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, মাম্পসের ক্ষেত্রে শিশুদের জ্বর আসে। গালে ডান দিক অথবা বাঁদিক ফুলে যায়। এছাড়া খাবার খেতে, এমনকী ঢোক গিলতেও কষ্ট হয়। ব্যথায় কাঁদতে থাকে বাচ্চারা। শুধু তাই নয়, স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, এই রোগ হলে সেক্ষেত্রে ছেলেদের ক্ষেত্রে অন্ডকোষ ফুলে যেতে পারে এবং মেয়েদের ক্ষেত্রে জরায়ু ফুলে যেতে পারে। এমনকী ভবিষ্যতে বন্ধ্যাত্ব পর্যন্তও দেখা দিতে পারে।
মাম্পস হলে কী করণীয়?
চিকিৎসকদের পরামর্শ, মাম্পস হলে সেক্ষেত্রে প্রথম কাজ হবে বাচ্চাদের স্কুলে যাওয়া বন্ধ করতে হবে। এর ফলে অন্যদের মধ্যে এর সংক্রমণ হবে না। যদিও মাম্পসের জন্য নির্দিষ্ট কোনও ওষুধ নেই, তবে চিকিৎসকরা বলছেন জ্বরের হাত থেকে রেহাই পেতে প্যারাসিটামল বা প্যারাসেফ জাতীয় ওষুধ খাওয়ানো যেতে পারে। খাবার খেতে অসুবিধা হলে সেমি সলিড খাবার দিতে হবে। চিকিৎসা বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, এই রোগ সারতে কমপক্ষে ৭ থেকে ১০ দিন সময় লাগে। তবে বাচ্চাদের অন্ডকোষ বা জরায়ু ফুলে গেলে সেক্ষেত্রে অবশ্যই চিকিৎসকদের পরামর্শ নিতে হবে।