বয়স বাড়লে স্মৃতিশক্তি কমতে থাকে অনেকেরই। স্মৃতিশক্তি দুর্বল হয়ে পড়ার ফলে ক্রমশ দেখা দিতে থাকে ডিমেনশিয়ার সমস্যা। এই সমস্যা থেকে পুরোপুরি বেরিয়ে আসার মতো রাস্তা এখনও পাওয়া যায়নি। এর চিকিৎসায় কিছু ওষুধ রয়েছে বটে, তবে তার কোনওটাই এই সমস্যা পুরোপুরি সারাতে পারে না। উল্টে শরীরের অন্য কতগুলি জটিলতা ডেকে আনতে পারে এই ওষুধগুলি। তবে এই সমস্যা থেকে মুক্তির পথ দেখাচ্ছে হালের গবেষণা।
সম্প্রতি ওসাকা সিটি বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরা ডিমেনশিয়ার চিকিৎসায় নতুন করে আলোকপাত করেছেন। এত দিন এই রোগের চিকিৎসায় সাধারণত দু’টি ওষুধ দেওয়া হত। এই দু’টির নাম— rifampicin এবং resveratrol। ট্যাবলেট আকারে ওষুধ দু’টা খাওয়ানো হত। কিন্তু তার ফলে রোগীদের নানা ধরনের সমস্যা দেখা দিত। বিশেষ করে লিভার এবং পেটের নানা অঙ্গের ওপর এই ওষুধের প্রভাব মারাত্মক ভাবে পড়ত।
ডিমেনশিয়া সাধারণত বেশি বয়সেই দেখা দেয়। তাই এই বয়সের রোগীদের ডিমেনশিয়ার চিকিৎসা করতে গিয়ে অন্য অঙ্গের ক্ষতি মোটেই বাঞ্ছনীয় নয়। সেই কারণেই চিকিৎসকদের rifampicin এবং resveratrol ব্যবহার করতে হত খুব সাবধানে।
আর এখানেই বদল এনেছেন ওসাকা সিটি বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরা। তাঁরা তৈরি করেছেন একটি নাজাল স্প্রে। এটিতেও rifampicin এবং resveratrol রয়েছে। কিন্তু এটি নাক দিয়ে প্রবেশ করে সরাসরি মস্তিষ্কের ওপর প্রভাব ফেলে। শরীরের অন্য কোনও অঙ্গে এর প্রভাব পড়ে না। ফলে বিজ্ঞানীদের আশা এটি এবার থেকে নির্দ্বিধায় ডিমেনশিয়া আক্রান্তদের ওপর প্রয়োগ করা যাবে। তাঁদের অন্য অঙ্গের ক্ষতির কথা ভেবে ডিমেনশিয়ার চিকিৎসা থেকে পিছিয়ে আসতে হবে না।
শুধু ডিমেনশিয়াই নয়, এর ফলে অ্যালজাইমার্স ডিজিজের সমস্যাও কমতে পারে, এবং সেই রোগের চিকিৎসাও নির্দ্বিধায় এই ওষুধ প্রয়োগ করে করা যেতে পারে বলে আশা বিজ্ঞানীদের।