দুর্গাপুজোর আর গুনে গুনে ১০ দিন বাকি। কাউন্টডাউন তো শুরু হয়ে গেল। তার আগে, বনেদি বাড়ির পুজো কিংবা থিম পুজোর বদলে জেনে নেওয়া যাক এক সর্বজনীন দুর্গোৎসবের কথা, যার মূলেই আছে একাধিক অবাক করার মতো জিনিস।
কথা বলছি বৈষ্ণবঘাটার উজ্জ্বল সংঘের। এবার এই ক্লাবের পুজো ৩০ বছরে পড়ল। এই পুজোতে চাঁদা তোলা থেকে, ঠাকুর আনতে যাওয়া কিংবা পুজোর জোগাড় হোক বা ভোগ রান্না করা সবই করে থাকেন মহিলারা। এটা একটি মহিলা পরিচালিত পুজো। ভীষণ ঘরোয়া, সাধারণভাবে এই পুজো করা হয়ে থাকে। কিন্তু নেওয়া হয় একাধিক কল্যাণ এবং সমাজসেবামূলক উদ্যোগ।
ক্লাবের আশপাশে বসবাসকারী শিশুদের পঞ্চমীর দিন ক্লাবের তরফে দেওয়া হবে নতুন জামা, মিষ্টির প্যাকেট এবং ক্যাডবেরি। এই পুজোর সম্পাদক সুচেতা সিংহ রায় জানান, তাঁরা এই উদ্যোগ নেন যাতে এই শিশুরাও নতুন পোশাক পরে বাকিদের মতোই আনন্দে মেতে উঠতে পারে। এছাড়া এবারের পুজোর অন্যতম উদ্যোগ হল পাড়ায় পাড়ায় ডেঙ্গু, ম্যালেরিয়া নিয়ে সতর্কবার্তা প্রচার করা।
ষষ্ঠীর দিন এই ক্লাবে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। এই পুজোর সভাপতি রীতা বসু জানান, 'ঘরোয়া ভাবে এই পুজো করা হয়ে থাকে। একান্নবর্তী পরিবারের মতো আমরা সকলে হইহই করে এই পুজোর আয়োজন করে থাকি।'
তবে শুধু পুজোর কটা দিন যে এই ক্লাব এমন উদ্যোগ নেয় সেটা একদমই নয়। গরমকালে যখন রক্তের সংকট দেখা দেয় তখন তাঁরা রক্তদান উৎসবের আয়োজন করেন, যাতে কিছুটা হলেও রক্তের ঘাটতি কমানো যায়। এছাড়া কোভিডের সময় ক্লাবের তরফে ২৪*৭ অ্যাম্বুলেন্স, অক্সিজেন ইত্যাদির পরিষেবা দেওয়া হয়েছে। বাড়ি বাড়ি পৌঁছে দেওয়া হয়েছে ওষুধ থেকে অন্যান্য প্রয়োজনীয় জিনিস।
তাই এবার পুজোয় ঠাকুর দেখতে গেলে চোখ ধাঁধানো, জৌলুসে ভরা থিম পুজো, কিংবা ইতিহাসে মোড়া বনেদি বাড়ির পুজোর সঙ্গে এমন এক পুজোও ঘুরে দেখে আসুন, যেখানে মানবসেবা হচ্ছে আসল উদ্যোগ। সঙ্গে আন্তরিকতা।