ঠাকুর বাড়ির রান্নার আলাদাই গুরুত্ব এবং বিশেষত্ব আছে বাঙালির হেঁসেলে। অনেকেই মাঝে মধ্যে ঠাকুর বাড়ির নানা রান্না, নানা পদ নিজেরাই বানান। আর পুজোর একদিন তেমন কোনও এক বিশেষ পদ না হলে চলে?
দেখুন পুজো মানে যে কেবল দেদার ঠাকুর দেখা সেটা তো নয়। পুজো মানে খাওয়া দাওয়াও বটে। বাড়িতে এই সময় নানা ধরনের বাহারি পদ বানানো হয়ে থাকে। তেমনই এক দিনে বানিয়ে নিতে পারেন ঠাকুর বাড়ির বিখ্যাত পদ মাছের পোটলি। ভাবছেন ব্যাপারটা কী? কীভাবে বানাতে হয়? চটপট জেনে নিন রেসিপি।
এই রান্নাটি সম্পূর্ণ ভাবে কাঁটা ছাড়ানো মাছ দিয়ে হয়। তাও আবার সামান্য উপকরণ দিয়েই রেঁধে ফেলা যায় এটিকে। তাই আপনি যদি সহজে, চটপট করে এই রান্নাটি এবার পুজোয় রাঁধতে চান তাহলে দেখুন কী করণীয়।
মাছের পোটলি রাঁধতে কী কী লাগবে?
ঠাকুর বাড়িতে এই রান্না মূলত শোল মাছ দিয়ে করা হতো। এছাড়া চাইলে রুই বা ভেটকি দিয়েও করা যেতে পারে। সঙ্গে লাগবে হলুদ, ঘি, আদা বাটা, লঙ্কা বড়, পেঁয়াজ বাটা, গরম মশলা গুঁড়ো, নুন, পটল, ময়দা, সাদা তেল। আপনি চাইলে ময়দার বদলে কর্নফ্লাওয়ার ব্যবহার করতে পারেন।
এবার জানুন কীভাবে রান্না করবেন
সবার আগে মাছগুলো ভালো করে ধুয়ে নিন। যদি রুই বা ভেটকি নেন তাহলে পেটির দিকে মাছ নেবেন। এবার মাছের পিসে ভালো করে নুন হলুদ মাখিয়ে ভেজে নিন। বেশি কড়া করে ভাজবেন না। নরম করেই ভাজবেন। এবার মাছটা ঠান্ডা হলে কাঁটা ছাড়িয়ে নিন। তারপর মাছটাকে ভালো মেখে নিন হাত দিয়ে।
আরও পড়ুন: পুজো জমুক রাজকীয় খানায়! ঝটপট জেনে নিন শোভাবাজার রাজবাড়ির পদ্মলুচির রেসিপি
আরও পড়ুন: এবার পুজোয় চিংড়ি নয়, পাতে পড়ুক ডাব চিকেন, ঝটপট জেনে নিন রেসিপি
এবার একটা কড়াইতে ঘি দিন দুই চামচ। তারপর তাতে একে একে আদা বাটা, লঙ্কা বাটা, পেঁয়াজ বাটা দিন আধ চামচ করে। ভালো করে এটাকে কষিয়ে নিন এবার। তারপর তাতে দিয়ে দিন মেখে রাখা মাছগুলো। আবার কষতে থাকুন। এবার এতে দিন নুন, গরম মশলা। আবার সবটা মিশিয়ে ভালো কষুন। কষানো হয়ে গেলে নামিয়ে নিন। ঠান্ডা হতে দিন পুরটা।
এবার পটলগুলোর খোসা ছাড়িয়ে লম্বালম্বি করে কাটুন। বীজ বের করে নিন। এবার একটা কড়াইয়ে তেল দিয়ে পটলগুলো ভেজে নিন। পটল ভাজা হয়ে গেলে পটলের এক টুকরোয় পুর ভরে আরেক টুকরো করে সেটা ঢেকে টুথপিক বা কাঠি দিয়ে বন্ধ করে দিন। দেখবেন যেন সেটা খুলে না যায়।
এবার একটা পাত্রে ব্যাটার বানিয়ে নিন। এটার জন্য একটা বাটিতে ময়দা, ঘি, নুন আর সামান্য জল দিয়ে মিশিয়ে এটা বানান। খুব পাতলা বা খুব ঘন করবেন না। এবার এতে ওই পটলগুলো মাখিয়ে নিন। তারপর ডুবো তেলে ভেজে নিন।
এই বিষয়ে বলে রাখা ভালো এই রান্নায় পুর কষানোর সময় কালো জিরে, চিনি বা টমেটো কুচি দিতে পারেন চাইলে। ধনে পাতাও দেওয়া যেতে পারে। কিন্তু ঠাকুর বাড়িতে এসব দেওয়া হতো না। এবার গোটা রান্না হয়ে গেলে এটাকে বিকেলে জলখাবার হিসেবে খান। অথবা ভাত দিয়েও দুপুরে বা রাতে খেতে পারেন।