২২ বছরের মাহসা আমিনির মৃত্যুর পর ইরানে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে। ইরানের মহিলারা প্রকাশ্যে তাদের হিজাব খুলে ফেলছেন এবং সেগুলি পুড়িয়ে দিচ্ছেন। আমিনিকে ইরানের ‘নীতি পুলিশ’ ‘ভুল প্রথায়’ হিজাব পরার অপরাধে গ্রেফতার করেছিল। তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিল, তিনি তাঁর চুল পুরোপুরি ঢেকেনি। সংবদামাধ্যম সূত্রে জানা গিয়েছে, সপ্তাহের শুরুতে তেহরানে গ্রেফতার করা হয় তাঁকে। তিনি শুক্রবার মারা যান। তাকে মারধর করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে সোশ্যাল মিডিয়ায়। পুলিশ সেই দাবি অস্বীকার করেছে। বলা হয়েছে অন্য বন্দিদের সঙ্গে আটক থাকার সময়ে তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন।
হাল এই ঘটনা নতুন করে অগ্নিসংযোগ করেছেন ইরানের সাধারণ মানুষের মনে। সোশ্যাল মিডিয়ায় সাধারণ নারীদের বিক্ষোভের বেশ কয়েকটি ভিডিয়ো দেখা গিয়েছে, যাতে দেখা গিয়েছে বিক্ষোভকারীরা সরকার বিরোধী স্লোগান দিচ্ছেন। কিছু ভিডিয়োতে দেখা গিয়েছে, বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে কাঁদানে গ্যাস ব্যবহার করা হচ্ছে।
সাত বছরের বেশি বয়সী নারীদের হিজাব পরা ইরানে পরতে বাধ্যতামূলক। এর বিরোধিতায় বহু মহিলা ক্যামেরার সামনে তাঁদের চুল কেটে ফেলে এবং হিজাব পুড়িয়ে দিয়েছেন।
ইরানের সাংবাদিক ও সমাজকর্মী মাসিহ আলিনেজাদ একটি ভিডিয়ো টুইট করেছেন এবং বলেছেন, ‘পুলিশ কর্তৃক মাহসা আমিনিকে হত্যার প্রতিবাদে ইরানের মহিলারা তাঁদের চুল কেটে এবং নিজেদের হিজাব পুড়িয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করছেন। আমরা এই লিঙ্গ বৈষম্যের শাসনে বিরক্ত।’
মাসিহ আলিনেজাদ আরেকটি টুইটে বলেছেন, ‘এটাই আসল ইরান, ইরানের সাক্কেজে নিরাপত্তা বাহিনী মাহসা আমিনির দাফন করার পরে শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভকারীদের উপর গুলি চালায়। বেশ কয়েকজন বিক্ষোভকারী আহত হয়েছেন। প্রথমে হিজাব পুলিশ ২২ বছর বয়সি মেয়েকে হত্যা করেছে এবং এখন বন্দুক ব্যবহার করে এবং শোকার্ত মানুষের বিরুদ্ধে কাঁদানে গ্যাস ছোড়ে।
সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহারকারীরা আরও বহু মহিলাদর ভিডিয়ো শেয়ার করছেন, যাঁরা তাঁদের হিজাব খুলেছিলেন এবং ‘নীতি পুলিশ ইউনিট’-এর কাছ থেকে কঠোর শাস্তি পেয়েছেন।
ইরানের শরিয়া বা ইসলামী আইনের অধীনে, মহিলারা তাঁদের চুল ঢেকে রাখতে এবং লম্বা, ঢিলেঢালা পোশাক পরতে বাধ্য। এই নিয়ম ভাঙলে তিরস্কার, জরিমানা বা গ্রেফতারের মুখে পড়তে হয়।