প্রচণ্ড তাপপ্রবাহে ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে বাড়তে পারে মৃত্যুর হার। এমনই আশঙ্কার কথা শোনা গেল বিশ্ব ব্যাঙ্কের সাম্প্রতিক রিপোর্টে। গত কয়েক বছর ধরেই ভারতের গড় তাপমাত্রা উদ্বেগজনক হারে বেড়ে চলেছে। এই তাপমাত্রার বৃদ্ধি আগামী দিনে আরও দ্রুত হতে পারে। এমনকি রাশ না টানতে পারলে মানুষের সহনক্ষমতা ছাড়িয়ে যেতে পারে তাপপ্রবাহ।
দক্ষিণ এশিয়ার গড় তাপমাত্রা নিয়ে বিজ্ঞানীদের মুখে এমন সতর্কতার বাণী আগেই শোনা গিয়েছিল। এবারে সে কথাই ফিরে এল বিশ্ব ব্যাঙ্কের শ্রম সংক্রান্ত একটি বিশেষ রিপোর্টে। এপ্রিল মাস থেকেই দেশের তাপমাত্রা বাড়তে থাকে। তাপমাত্রা বাড়তে বাড়তে বেশ কিছু রাজ্যে ৫০ ডিগ্ৰির কাছে পৌঁছে যায়। খাস রাজধানীতে ২০২২ সালে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৪৬ ডিগ্ৰি ছুঁয়েছিল। তাপপ্রবাহে নিরিখে মার্চ মাসে সবচেয়ে বেশি ছিল উষ্ণতা। এতেই চিন্তার ভাঁজ পড়ছে বিশেষজ্ঞদের কপালে। এমন অবস্থা চলতে থাকলে তাপপ্রবাহে মৃত্যুর সংখ্যা আশঙ্কাজনক হারে বাড়তে থাকবে। গত কয়েক বছরে হাজারেরও বেশি মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন এই তীব্র তাপপ্রবাহে। বিশ্ব ব্যাঙ্কের রিপোর্ট অনুযায়ী, কার্বন নিঃসরণে রাশ না টানলে ২০৩৬ থেকে ২০৬৫ সাল নাগাদ এই তাপপ্রবাহ আরও ২৫ গুণ বেশি সময় ধরে চলতে পারে। একইসঙ্গে বাড়বে মৃত্যুর হারও। গত বছর অগাস্ট মাস নাগাদ ইন্টার গর্ভনমেন্টাল প্যানেল অন ক্লাইমেট চেঞ্জ তাদের ষষ্ঠ রিপোর্টে এই সাবধান বাণী শুনিয়েছিল। তাপপ্রবাহের কারণে দেশের অর্থনৈতিক উৎপাদন গভীরভাবে ক্ষতিগ্ৰস্ত হতে পারে, এমন আশঙ্কার কথা শুনিয়েছিল জি২০ ক্লাইমেট রিস্ক অ্যাটলাসও।
কেরালা সরকারের সঙ্গে যৌথভাবে আয়োজিত জলবায়ু সম্পর্কিত বৈঠকে বিশ্ব ব্যাঙ্কের রিপোর্ট প্রকাশিত হবে। জানা যাচ্ছে, দূষণ ও কার্বন নিঃসরণের কারণে ভারতের অর্থনৈতিক উৎপাদন গভীরভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। সারা দেশের ৭৫ শতাংশ অর্থাৎ ৩৮০ মিলিয়ন মানুষ সরাসরি রোদের মধ্যে কাজ করে। তাপমাত্রা সহনক্ষমতা ছাড়িয়ে গেলে ২০৩০ এর গোড়ায় ৩৪ মিলিয়ন মানুষ বেকার হয়ে যেতে পারে। সারা বিশ্বের ৮০ মিলিয়নের নিরিখে যা অনেকটাই বেশি। এর পাশাপাশি দেশের সার্বিক উৎপাদন ক্ষমতাও ব্যাপক হারে কমবে। আন্তর্জাতিক ম্যানেজমেন্ট বিশেষজ্ঞ কোম্পানি ম্যাক কিনসে কোম্পানির মতে, ক্রমাগত তাপমাত্রা বৃদ্ধির কারণে দেশের জিডিপি ৪.৫ শতাংশ পর্যন্ত পতনের আশঙ্কা রয়েছে। যার অর্থ মূল্য প্রায় ২৫০ বিলিয়ন ডলার।