চিনের সঙ্গে সীমান্ত বিবাদ নিয়ে ঘরোয়া রাজনীতিতে কয়েকদিন ধরেই তরজা চলছে। সোমবার থেকে সঙ্গে পাল্লা দিয়ে চলছে শায়েরি যুদ্ধও। তারইমধ্যে প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিংয়ের উদ্দেশে প্রাক্তন কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গান্ধী প্রশ্ন ছুঁড়লেন, ‘লাদাখে কি ভারতীয় ভূখণ্ড দখল করে নিয়েছে চিন?’
গত মাসের শুরু থেকে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা বরাবর পূর্ব লাদাখে চিনের সঙ্গে সীমান্ত বিবাদ নিয়ে কেন্দ্রের উপর ক্রমশ চাপ বাড়াচ্ছে কংগ্রেস। তারইমধ্যে প্রতিরক্ষামন্ত্রী স্বীকার করেন, পূর্ব লাদাখে ঢুকে পড়েছে যথেষ্ট সংখ্যক চিনা সেনা। তারপর সীমান্ত দ্বন্দ্ব নিয়ে একাধিকবার নরেন্দ্র মোদী সরকারকে একহাত নিয়েছে কংগ্রেস। পালটা জবাব দিয়েছে বিজেপিও।
সেই চাপানউতোরের মাঝে গত রবিবার বিহারের ভার্চুয়াল সভায় বিজেপি নেতা তথা কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ বলেন, ‘সারা বিশ্ব একমত যে আমেরিকা এবং ইজরায়েলের পর যদি কোনও দেশ নিজের সীমান্ত রক্ষা করতে সক্ষম, সেটা হল (সার্জিক্যাল স্ট্রাইক) ভারত।’ সেই মন্তব্যের রেশ ধরে কেন্দ্রকে খোঁচা দেন রাহুল। উর্দু কবি মির্জা গালিবের শায়েরির সাহায্য নিয়ে রাহুল বলেন, প্রত্যেকেই সীমান্তের বাস্তবটা জানেন, কিন্তু মনকে খুশি রাখার 'শাহ-এদ' (হয়তো) এই ভাবনাটা ভালো।
সন্ধ্যার দিকে গালিবের একটি পরিবর্তিত শায়েরি নিয়ে রাহুলকে পালটা আক্রমণ করেন রাজনাথ। টুইটবার্তায় তিনি বলেন, 'মির্জা গালিবের শায়ের কিছুটা আলাদা ধাঁচে। যখন হাতে (হাত হল কংগ্রেসের প্রতীক) ব্যথা হয়, তখন ওষুধ দেন, কিন্তু যখন হাত নিজেই সমস্যার কারণ।'
মঙ্গলবার অবশ্য শায়েরি যুদ্ধে কিছুটা ইতি টেনে একটি টুইটবার্তায় রাহুল বলেন, 'যখন হাত প্রতীক নিয়ে আরএমের (রাজনাথ) কথা বলা হয়ে যাবে, তিনি কি বলতে পারবেন লাদাখে কি ভারতীয় ভূখণ্ড দখল করে নিয়েছে চিন?’ রাহুলের সেই প্রশ্নের উত্তর অবশ্য এখনও দেননি রাজনাথ। বিজেপির তরফেও কোনও প্রতিক্রিয়া দেওয়া হয়নি।
তবে শায়েরি যুদ্ধে মজেছেন অনেকেই। শেষ কবে কবিতা-শায়েরির মোড়কে রাজনৈতিক তরজা দেখেছেন, তা মনে করতে পারছেন না প্রবীণরাও। সংশ্লিষ্ট মহলের বক্তব্য, এমনিতে তো অধিকাংশ সময়ে সীমানা ছাড়িয়ে ব্যক্তিগত আক্রমণে মাতেন রাজনীতিবিদরা। কখনও রাহুলের দাদুর পরিচয় নিয়ে আক্রমণ করা, কখনও মোদীর ব্যক্তিগত পরিসর নিয়ে খোঁচা দেওয়া - ব্যক্তিগত আক্রমণ বেড়েই চলেছে। আর সেরকম পরিস্থিতিতে এরকম শায়েরির লড়াই হলে ক্ষতি কি?