মোদী সরকারের সমালোচনায় মুখর হয়ে বুধবার সংসদে ভাষণ দেন কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী। এদিন প্রধানমন্ত্রী মোদী ও তাঁর সরকারের সমালোচনায় রাহুল বলেন, বিজেপি যেভাবে ছরি ঘুরিয়ে রাজনীতি করছে ইতিহাসে তা কোথাও সফল হয়নি। এক্ষেত্রে ভারতে বিভিন্ন রাজত্বের প্রসঙ্গ তোলেন রাহুল গান্ধী। তিনি প্রসঙ্গ তোলেন সম্রাট অশোকের। এছাড়াও পেগাসাস থেকে বেকারত্ব, যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামো থেকে চিনা আগ্রাসন সহ একাধিক ইস্যু উঠে আসে রাহুল গান্ধীর ভাষণে। দেখে নেওয়া যাক রাহুল গান্ধীর বক্তব্যের ১০ টি মূল পয়েন্ট।
'এখন দুটি ভারত আছে - একটি গরিবদের জন্য এবং একটি ধনীদের জন্য। এই দুই ভারতের মধ্যে দ্বন্দ্ব ক্রমাগত বাড়ছে।' বলেছেন রাহুল।
রাহুল বলেন, দেশে উৎপাদন ক্ষেত্রে ৪৬ শতাংশ কর্মসংস্থান কমেছে। রাহুল বলেন, 'অসংগঠিত ক্ষেত্রকে ধ্বংস করেছেন আপনারা, আপনারা এমএসএমই গুলিকে ধ্বংস করেছেন, আপনি সম্পূর্ণরূপে ৫ থেকে ১০ জনের দিকে মনোনিবেশ করেছেন।'
কটাক্ষের সুরে রাহুল বলেছেন, "AA' ভ্যারিয়েন্ট (আম্বানি আদানি) সারা দেশের অর্থনীতিতে ছড়িয়ে রয়েছে। রাহুল বলেন, 'বড় শিল্পের সাথে সমস্যা নেই আমার, তাদের উপর ফোকাস করুন কিন্তু অনুগ্রহ করে বুঝুন যে তারা চাকরি তৈরি করতে পারে না। ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পই দেশে কর্মসংস্থান সৃষ্টি করতে পারে।'
এছাড়াও দেশের প্রতিটি রাজ্যের সমানাধিকার প্রসঙ্গে 'ইউনিয়ন অফ স্টেটস' এর প্রসঙ্গ তোলেন রাহুল গান্ধী। তিনি বলেন, তামিলনাড়ুর ভাই যতটা অধিকারী হবেন কোনও বিষয়ে, ততটাই মহারাষ্ট্রের একজন বোনও তা হবেন।
রাহুল বলেন, রাজতন্ত্রের ভাবনা কংগ্রেস সরিয়েছে দেশ থেকে। ১৯৪৭ সালের পর থেকে রাজতন্ত্রকে সরিয়ে দিয়েছে কংগ্রেস। তবে বর্তমানে একজন শাহেনশা রাজ করছেন। এক্ষেত্রে তিনি বলেন, মানুষের কণ্ঠ রোধ করা হচ্ছে। উদাহরণ স্বরূপ পঞ্জাবের কৃষকদের কথা তুলে ধরেন তিনি। যাঁদের বক্তব্য প্রধানমন্ত্রী শুনছেন না বলে দাবি রাহুলের।
এরপর রাহুল ভারত শাসনের আরও একটি দৃষ্টিভঙ্গির কথা কতুলে ধরেন। যেখানে রাজ শাসন রয়েছে। তিনি বলেন, 'আমি সব মানুষের কাছ থেকে শিখেছি। আমি আপনাদের কাছ থেকে শিখি। আরেকটি দৃষ্টিভঙ্গি আছে ..যে ভারতকে কেন্দ্রের লাঠি দিয়ে শাসন করা যেতে পারে। যতবারই হয়েছে, ততবারই লাঠি ভেঙে গিয়েছে।'
এছাড়াও মোদী সরকারের পাকিস্তান ও চিন নীতিরও সমালোচনা করেন রাহুল। তিনি বলেন, জম্মু ও কাশ্মীরের ক্ষেত্রে আমাদের বিদেশ নীতি সঠিক হয়নি। এটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।
'আমার প্রপিতামহ ১৫ বছরের জন্য জেলে ছিলেন। আমার ঠাকুমাকে ৩২ বার গুলি করা হয়েছিল। আমার বাবা বিস্ফোরণে মারা যান। তাই আমি জানি আমি কী নিয়ে কথা বলছি। আপনারা খুব, খুব বিপজ্জনক কিছু নিয়ে বাজিমাত করতে চাইছেন। আমি আপনাকে তা রুখতে বলছি। আপনি না থামলে সমস্যা তৈরি হবে।'
'ভারত আজ একঘরে', প্রজাতন্ত্র দিবসে অতিথি আমন্ত্রণ ইস্যুতে মোদী সরকারকে এভাবে খোঁচা দেন রাহুল।