আরও এক ছাত্র মৃত্যুর আকস্মিক ঘটনা। এবার ঘটনাস্থল রাজস্থানের কোটা। সেখানে জয়েন্টের প্রস্তুতি নিতে যাওয়া ১৮ বছর বয়সী তরুণীর। মৃতদেহের সঙ্গেই উদ্ধার হয়েছে একটি সুইসাইড নোট। সেখানে লেখা, ‘মাম্মি , পাপা… আমি জেইই করতে পারব না। তাই আত্মহত্যা করছি। আমি হেরে গেলাম। আমি খুব বাজে কন্যা সন্তান। ক্ষমা কোরো মাম্মি .. পাপা। এটাই আমার শেষ অপশন ছিল।’
রাজস্থানের কোচিং হাব থেকে সোমবার কোটায় ১৮ বছরের এক ছাত্রীর মৃতদেহ উদ্ধার হয়। এক সপ্তাহেরও কম সময়ের মধ্যে কোটায় এটি এ জাতীয় দ্বিতীয় ঘটনা। এর আগে গত ২৩ জানুয়ারি উত্তরপ্রদেশের মোরাদাবাদের ১৯ বছরের এক ছাত্রকে তার হোটেলের ঘরে মৃত অবস্থায় পাওয়া যায়। উল্লেখ্য, গত বছর কোটায় আত্মহত্যার সংখ্যা ২০১৫ সালের পর থেকে সর্বোচ্চ ছিল যখন প্রশাসন প্রথম এই জাতীয় মৃত্যুর রেকর্ড সংকলন শুরু করেছিল।
পুলিশ জানিয়েছে, ওই ছাত্রী তাঁর পারিবারের সঙ্গে একই বাড়িতে থাকতেন এবং শীঘ্রই তাঁর জেইই পরীক্ষা দেওয়ার কথা ছিল। তাঁর ঘর থেকে উদ্ধার হওয়া একটি নোট থেকে বোঝা যায় যে পড়াশোনার কারণে তিনি চাপে ছিলেন।
সার্কেল অফিসার ডিএসপি ধর্মবীর সিং জানিয়েছেন, তিন বোনের মধ্যে ওই ছাত্র বড়। মেয়েটির বাবা কোটার একটি বেসরকারি ব্যাঙ্কের নিরাপত্তারক্ষী।এই ঘটনা এমনই এক দিনই ঘটল যেদিন স্কুল বোর্ডের পরীক্ষার প্রস্তুতি নেওয়া পড়ুয়াদের সঙ্গে বাৎসরিক আলাপচারিতায় মিলিত হলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।
২০২২ সালে ১৫ জন, ২০১৯ সালে ১৮ জন, ২০১৮ সালে ২০ জন, ২০১৭ সালে ৭ জন, ২০১৬ সালে ১৭ জন এবং ২০১৫ সালে ১৮ জন শিক্ষার্থী আত্মহত্যা করেছেন। কোভিড-১৯ মহামারীর কারণে কোচিং ইনস্টিটিউটগুলি বন্ধ হয়ে যাওয়ায় বা অনলাইন মোডে চলে যাওয়ায় ২০২০ এবং ২০২১ সালে কোনও আত্মহত্যার খবর পাওয়া যায়নি।
এর আগে, গত বছর আত্মহত্যার পরে প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থার পরামর্শ দেওয়ার জন্য গঠিত একটি কমিটি পরীক্ষার প্রস্তুতি প্রতিষ্ঠানগুলিকে শিক্ষার্থীদের চাপমুক্ত করার জন্য মজাদার ক্রিয়াকলাপ পরিচালনা করতে, অনলাইন প্ল্যাটফর্মে অনুপ্রেরণামূলক ভিডিও আপলোড করতে এবং চাপ কমাতে সিলেবাস হ্রাস করার বিষয়টি বিবেচনা করার নির্দেশ দিয়েছিল।সারা দেশ থেকে শিক্ষার্থীরা দশম শ্রেণি শেষ করে কোটায় এসে টেস্ট-প্রিপ ইনস্টিটিউটে যোগ দিয়ে থাকেন। সেখানে চলে উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যোগ দেওয়ার প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষার প্রস্তুতি শিবির।
১৬ জানুয়ারি কেন্দ্রীয় শিক্ষা মন্ত্রক কোচিং সেন্টারগুলির কাজকর্ম এবং ১৬ বছরের বেশি বয়সীদের ভর্তি নিষিদ্ধ করার জন্য নির্দিষ্ট নির্দেশিকা প্রকাশ করে। শর্তাবলী লঙ্ঘন করলে প্রতিষ্ঠানগুলিকে এক লক্ষ টাকা জরিমানা করা হবে বলে হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়েছে।