শনিবারই ত্রিপুরায় গিয়ে একদল দুষ্কৃতীর আক্রমণের মুখে পড়েছিলেন তৃণমূলের যুব নেতা দেবাংশু ভট্টাচার্য, জয়া দত্তরা। এরপর আজ ভোররাতে তাঁদের গ্রেফতার করা হয়। এই আবহে আজ বেলা ১১টা নাগাদ ত্রিপুরা পৌঁছালেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। উল্লেখ্য অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় ছাড়াও ব্রাত্য বসু, কুণাল ঘোষ এবং দোলা সেনও আজ সকালে ত্রিপুরা পৌঁছান।
এদিন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় আগরতলা বিমানবন্দরে নেমে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে বলেন, 'ত্রিপুরাকে বিজেপি পৈত্রিক সম্পত্তি মনে করছে। বিপ্লব দেব মনে করছেন এই রাজ্যে আসতে গেলে তাঁর থেকে ভিসা নিয়ে আসতে হবে। যাঁরা গণতন্ত্র নিয়ে বড় বড় কথা বলে, তাঁরা কী করছে তা গোটা ত্রিপুরা দেখছে। ত্রিপুরায় ঢুকলে পলিশ দিয়ে গ্রেফতার করানো হচ্ছে। যাঁদের উপর হামলা চালানো হল, তাঁদেরকেই গ্রেফতার করা হল হামলাকারীদের না ধরে।'
অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় আরও বলেন, 'ত্রিপুরা দুষ্কৃতীদের মুক্তাঞ্চলে পরিণত হয়েছে। এখানে শাসনের আইন চলছে, আইনের শাসন চলছে না। সমগ্র দেশের মানুষ দেখছে। যাঁরা কথায় কথায় দিল্লি, মধ্যপ্রদেশ থেকে উড়ে এসে বলেন যে গণতন্ত্র বিপন্ন, তাঁরা কী করছেন তা দেখা যাচ্ছে। ত্রিপুরায় শেষ রক্তবিন্দু পর্যন্ত লড়ব। বিজেপিকে এক ইঞ্চিও জমি ছাড়ব না।'
এদিকে আজ সকালে ত্রিপুরা যাওয়ার আগে কলকাতা বিমানবন্দরে ব্রাত্য বসু বলেন, 'আমার মনে হচ্ছে যে ত্রিপুরায় গণতন্ত্র বলে আর কিছু নেই। বিরোধী কণ্ঠস্বর বলে আর কিছু নেই। এভাবে বিরোধীদের উপর, তৃণমূল কংগ্রেসের উপর যেভাবে জুলুমবাজি করা হচ্ছে, ত্রিপুরা রাজ্য বিজেপি ভয় পাচ্ছে। আমরা গণ আন্দোলনের লোক। আমাদের এভাবে গাড়ি ভাঙচুর করে আটকানো যাবে না।'
প্রসঙ্গত, পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভা ভোটের পর থেকেই তৃণমূল সুপ্রিমো বাড়তি নজর দিচ্ছেন ত্রিপুরার দিকে। বাংলাভাষী এই রাজ্যটিতে নিজেদের সংগঠন আরও জোরদার করতে উঠে পড়ে লেগেছে জোড়াফুল শিবির। কিছুদিন আগেই অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় ত্রিপুরায় গিয়েছিলেন। সেই সময়েও তাঁর কনভয়ে হামলার অভিযোগ ওঠে। সেই সময়েও অভিযোগ ছিল বিজেপির দিকে। এরপর গতকাল দেবাংশু, জয়াদের গাড়ির উপর হামলা। এর পাশাপাশি তৃণমূলের ১১ জন নেতাকে ত্রিপুরায় বিপর্যয় মোকাবিলা আইনের আওতায় গ্রেফতার করা হয়েছে। সবমিলিয়ে আজ বিকেলে বিপ্লব দেবে ত্রিপুরায় অভিষেকের সাংবাদিক বৈঠক যে আরও বেশি ঝাঁঝালো হতে চলেছে, তা বলাই যায়।