হত্যার অভিযোগে শাস্তি হয়েছিল যুবক কেভিন স্টিকল্যান্ডের। ভুল শাস্তি। ৪৩ বছর পর মুক্তি পেলেন এই কৃষ্ণাঙ্গ বৃদ্ধ। চার দশকের বেশি সময় ধরে বিনা দোষে জেল খাটার পরেও ৬২ বছর বয়সি এই কৃষ্ণাঙ্গকে কোনও ক্ষতিপূরণ দেওয়া হচ্ছে না। মঙ্গলবার বিচারক কেভিনের মুক্তির আদেশ দেন।
১৯৭৯ সালে তিনজনকে হত্যার দায়ে কেভিনকে শাস্তি দেওয়া হয়েছিল। জুরিরা সকলেই ছিলেন শ্বেতাঙ্গ। ৪৩ বছর পর সরকারি আইনজীবীরা চলতি বছরের গোড়ায় জানিয়েছিলেন, কেভিন নির্দোষ। জুরিদের রায়ে ভুল ছিল। এরপর বিচারক জেমস ওয়েলশ তাকে অবিলম্বে মুক্তির নির্দেশ দেন।
সংশোধনাগার থেকে মুক্তি পাওয়ার পর কেভিন বলেছেন, 'আমি রেগে নেই। আমি জানি, যথেষ্ট হয়েছে। কিন্তু আপনাদের মধ্যে আমি আবেগ তৈরি করতে পেরেছি। এই ধরনের আবেগ সম্ভবত আপনাদের মধ্যে আগে আসেনি।' কেভিন বলেন, 'আমার আনন্দ, দুঃখ, ভয় সবই হচ্ছে।'
প্রশ্নের মুখে
কেভিনের বিরুদ্ধে একমাত্র প্রমাণ ছিল প্রত্যক্ষদর্শী সিন্থিয়া স্ট্রিকল্যান্ডের সাক্ষ্য। সিন্থিয়াই ছিলেন একমাত্র প্রত্যক্ষদর্শী। আদালতে তিনি জানান, কেভিনকে তিনি দেখেছেন। পরে সিন্থিয়া বলেছিলেন, পুলিশ জোর করে তাঁকে দিয়ে এই কাজ করিয়েছে। তাই তিনি কেভিনের নাম বলেছিলেন। পরে তিনি বারবার এই বিষয়ে সকলের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। ২০১৫ সালে তাঁর মৃত্যু হয়।
এই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত অভিযোগে আরও দু'জনের শাস্তি হয়। তাঁরাও জানিয়েছিলেন, হত্যার সঙ্গে কেভিন কোনওভাবে জড়িত ছিলেন না। তাঁরা অন্য দু'জনের নাম বলেছিলেন। কিন্তু তাদের শাস্তি দেওয়া হয়নি। প্রথম বিচারের সময় একজন কৃষ্ণাঙ্গ জুরি ছিলেন। তিনি কেভিনকে ছেড়ে দেওয়ার কথা বলেছিলেন। দ্বিতীয়বার বিচারের সময় তিনজন জুরিই ছিলেন শ্বেতাঙ্গ। তাঁরা রায় দেন, কেভিন দোষী।
'ন্যায়বিচার নয়'
রিপাবলিকান পার্টির দুই নেতা অ্যাটর্নি জেনারেল এরিক স্কিমিট এবং মিসৌরির গভর্নর মাইক পারসন কেভিনের মুক্তির বিরোধিতা করেছেন। তাঁরা এই মুক্তি আটকানোর চেষ্টা করেছিলেন।
মিডওয়েস্ট ইনোসেন্ট প্রজেক্টের ডিরেক্টর ট্রিসিয়া রোজো বুশনেল বলেছেন, কেভিনকে মুক্তি দিতে দেরি করা হয়েছে। তিনি যে বিনা দোষে ৪৩ বছর জেলে কাটালেন, তার জন্য কোনও ক্ষতিপূরণও দেওয়া হচ্ছে না। মিসৌরির নিয়ম হল, একমাত্র ডিএনএ পরীক্ষা করে যদি প্রমাণ হয় কাউকে ভুল করে জেলে পাঠানো হয়েছে, তবেই তিনি ক্ষতিপূরণ পাবেন। বুশনেল বলেছেন, 'এটা ন্যায়বিচার নয়। আমার মনে হয়, যাঁরা এই বিষয়টি নিয়ে এত উৎসাহ দেখিয়েছেন, তাঁরা নিশ্চয়ই প্রশ্ন তুলবেন, আমাদের বিচারব্যবস্থা কি এরকমই হওয়া উচিত?'
(বিশেষ দ্রষ্টব্য : প্রতিবেদনটি ডয়চে ভেলে থেকে নেওয়া হয়েছে। সেই প্রতিবেদনই তুলে ধরা হয়েছে। হিন্দুস্তান টাইমস বাংলার কোনও প্রতিনিধি এই প্রতিবেদন লেখেননি।)