সম্প্রতি নতুন করে ইউক্রেনে সংঘাতের তীব্রতা বেড়েছে। পারমাণবিক যুদ্ধের হুঁশিয়ারি দিয়ে রাশিয়ার তরফে হামলা বাড়ানো হয়েছে। এই আবহে বিশ্বব্যাপী উদ্বেগের পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। আর এরই মাঝে ভারতীয় বিদেশমন্ত্রী এস জয়শংকর মস্কো সফরে যেতে চলেছেন আগামী মাসে। মস্কোতে গিয়ে তিনি রাশিয়ার বিদেশমন্ত্রী সের্গেই ল্যাভরভের সঙ্গে বৈঠক করবেন বলে জানা গিয়েছে।
রাশিয়ার বিদেশ মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মারিয়া জাখারোভা বৃহস্পতিবার মস্কোতে একটি সংবাদ ব্রিফিংয়ে বলেন যে ল্যাভরভ আগামী মাসে জয়শংকরের সঙ্গে আলোচনা করবেন এবং ‘দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের বর্তমান অবস্থা এবং আন্তর্জাতিক এজেন্ডা’ নিয়ে আলোচনা করবেন। জাখারোভা এর থেকে বেশি আর কোনওও বিস্তারিত তথ্য জানাননি এই ভাবী বৈঠক নিয়ে। এদিকে ভারতের তরফে এখনও এই বৈঠক নিয়ে সরকারি ভাবে কোনও কিছু বলা হয়নি। তবে বিষয়চির সঙ্গে অবগত আধিকারিকরা মনে করছেন, খুব সংক্ষিপ্ত একটি সফরে মস্কো যেতে পারেন জয়শংকর। সেখানে সের্গেই ল্যাভরভের পাশাপাশি রাশিয়ার আরও আধিকারিকদের সঙ্গে আলোচনা করতে পারেন জয়শংকর।
এদিকে এবছর ভারত-রাশিয়ার শীর্ষ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হচ্ছে না। এই বছর রাশিয়াতে এই সম্মেলন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল। এদিকে এই বছরই সাংহাই কোঅপারেশন অর্গনাইজেশনের সম্মেলনের ফাঁকে মোদী এবং পুতিন বৈঠক করেছিলেন। সেই সময় প্রধানমন্ত্রী মোদী রুশ প্রেসিডেন্টকে বলেছিলেন, ‘এটা যুদ্ধের যুগ নয়’। মোদীর এই মন্তব্য বিশ্বমঞ্চে বহুবার চর্চিত হয়েছে এরপর থেকে। এদিরে আগামী মাসেই বালিতে জি-২০ শীর্ষ সম্মেলনেও মোদী এবং পুতিন মুখোমুখি হতে চলেছেন। এই আবহে ভারত-রুশ দ্বিপাক্ষিক শীর্ষ সম্মেলন নিয়ে কোনও দেশই আনুষ্ঠানিক ভাবে কিছু বলেনি। এর আগে গত ডিসেম্বরে পুতিন ভারতে এসেছিলেন। এরপর চলতি বছরের এপ্রিল মাসে রুশ বিদেশমন্ত্রী ল্যাভরভ পা রেখেছিলেন দিল্লিতে। এই আবহে ইউক্রেন যুদ্ধের বিরোধিতা করলেও ভারত রাশিয়ার বিরুদ্ধে অবস্থান গ্রহণ করেনি সরাসরি। রাষ্ট্রসংঘে ভারত বরাবর রাশিয়া বিরোধী ভোটদান থেকে বিরত থেকেছে। সম্প্রতি ইউক্রেনের ‘ডার্টি বম্ব’ ইস্যুতে কথাও হয় রুশ প্রতিক্ষামন্ত্রী এবং রাজনাথ সিংয়ের। সেই সময় রাজনাথ বলেন, ‘কোনও পক্ষেরই পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহার করা উচিত হবে না।’ এই সবের মাঝেই ভারত রাশিয়া থেকে জ্বালানি কিনে চলেছে বিশেষ ছাড়ে। যা পরিস্থিতি, তাতে ইউক্রেন যুদ্ধের মাঝেও ভারত-রাশিয়া সম্পর্কে সেই অর্থে কোনও চিড় ধরেনি।