আগে তিনি একা জেলে গিয়েছেন একাধিকবার। এবার জেলে গেলেন সপরিবারে। হ্যাঁ, তিনি সমাজবাদী পার্টির অন্যতম নেতা আজম খান। এই প্রবীণ সমাজবাদী নেতাকে এবার সপরিবারে জেলে যাওয়ার নির্দেশ দিল আদালত। আজ, বুধবার উত্তরপ্রদেশের রামগড়ের এমপি–এমএলএ আদালত তাঁকে সাত বছরের কারাবাসের সাজা শুনিয়েছে। তবে এবার তিনি–সহ স্ত্রী তাজিন ফতিমা এবং পুত্র আবদুল্লা আজমেরও একই সাজা হয়েছে। এই তিনজনই আজ আদালতে হাজির ছিলেন। তাঁদের সামনেই রায় ঘোষণা হয়। আদালত নির্দেশ দিতেই পুলিশ তিনজনকে জেলে নিয়ে যায়।
২০১৯ সালে ভুয়ো জন্ম শংসাপত্র দেওয়ার অভিযোগ মামলা হয়েছিল। সেই অভিযোগের ভিত্তিতেই আজ, সপরিবারে জেলে গেলেন এই সমাজবাদী পার্টির নেতা। আজম খান এতদিন অন্য একটি মামলায় জামিনে বাইরে ছিলেন। তিনি ছিলেন রামগড়ের বিধায়ক। আগের মামলায় তাঁর দু’বছরের বেশি কারাবাসের সাজা হওয়ায় বিধায়ক পদ চলে গিয়েছিল। তিনি জেলা উচ্চ আদালতে জামিন পেলেও হাইকোর্ট তাঁর সাজা বহাল রেখেছিল। সেই মামলায় আইনি লড়াই চলা পর্যন্ত জামিন পেয়েছিলেন আজম খান। বুধবার ভুয়ো জন্ম শংসাপত্র মামলায় জেলে যেতে হল। এই ঘটনা নিয়ো জোর চর্চা শুরু হয়েছে।
এদিন আদালত জেলের সাজা শোনানোর পরই পুলিশ জিপে করে সকলকে রামপুর জেলার জেলে নিয়ে যায়। আজম খানের এই সাজা সমাজবাদী পার্টি জোর ধাক্কা খেল বলে মনে করা হচ্ছে। বছর ঘুরলেই লোকসভা নির্বাচন। সেখানে এটি প্রচারে আনবে বিজেপি। সেক্ষেত্রে দলের সুপ্রিমো অখিলেশ যাদব তা কেমন করে কমব্যাট করবেন সেটাই দেখার। মুলায়ম সিং যাদবের সময় থেকেই আজম খান সমাজবাদী পার্টির হেভিওয়েট নেতা হয়ে দাঁড়ান। সংখালঘুদের পাশাপাশি তফসিলি জাতি, উপজাতি এবং ওবিসি’দের মধ্যে তাঁর যথেষ্ট প্রভাব রয়েছে। এদিন এই তিনজনেই আদালত ভারতীয় দণ্ডবিধির ৪২০, ৪৬৭, ৪৬৮, ৪৭১ এবং ১২০বি ধারায় অভিযুক্ত করা হয়েছে।
এদিকে আজম খান জেলে থাকলে সমাজবাদী পার্টির অন্দরে ক্ষমতার ভারসাম্য বদলে যেতে পারে বলে অনেকে মনে করছেন। কারণ কাকা শিবপালের সঙ্গে অখিলেশের সম্পর্ক অনেকটাই নির্ভর করে আজম খানের সক্রিয়তার উপর। তিনি সপরিবারে জেলে থাকলে শিবপালের দাপটই বাড়বে। তাতে লাভ হবে বিজেপির বলে অনেকের ধারণা। আজম খান এবং তাঁর স্ত্রীর বিরুদ্ধে গঞ্জ পুলিশ স্টেশনে এফআইআর করেন বিজেপি বিধায়ক আকাশ সাক্সেনা। ২০১৯ সালের জানুয়ারি মাসে এই এফআইআর করা হয়েছিল। অভিযোগ, ছেলেকে দুটি ভুয়ো শংসাপত্র পাইয়ে দিতে সাহায্য করেছিল আজম খান এবং তাঁর স্ত্রী।
আরও পড়ুন: ‘কেন্দ্র–রাজ্যের মধ্যে ডিএ’র ফারাক চওড়া হচ্ছে’, রাজ্য সরকারকে টুইট নিশানা শুভেন্দুর
অন্যদিকে এই মামলায় নিম্ন আদালতের বিচারক সর্বোচ্চ সাজা সাত বছরের কারাবাস শুনিয়েছে আজম খান ও তাঁর পরিবারকে। আজম এই মামলায় জামিন না পেলে লোকসভা নির্বাচনে সমাজবাদী পার্টি চাপে পড়বে বলেই মনে করা হচ্ছে। চার্জশিটে উল্লেখ করা হয়েছে, ছেলে আবদুল্লা আজমকে দুটি ভুয়ো শংসাপত্র পাইয়ে দেওয়া হয়েছিল। এক, ১৯৯৩ সালের ১ জানুয়ারি তারিখের। দুই, ১৯৯০ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর। প্রথম জন্ম শংসাপত্রটি হাইস্কুল এবং এমটেক শংসাপত্রের সঙ্গে মিল আছে। ২০১৭ সালের বিধানসভা নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার জন্য দ্বিতীয় জন্ম শংসাপত্র বের করা হয়েছিল বলে অভিযোগ।