জিডিপির হার নিয়ে কেন্দ্রকে তোপ দালেন প্রাক্তন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী তথা কংগ্রেস নেতা পি চিদম্বরম। এই বিষয়ে চিদম্বরম বলেন, '২০২০-২১ অর্থবর্ষ গত ৪ দশকের মধ্যে সবথেকে অন্ধকার বছর ছিল ভারতের জন্য। এই অর্থবর্ষের চারটি ত্রৈমাসিক এই পরিস্থিতির বয়ান করে। প্রথম দুই ত্রৈমাসিকের জেরে দেশে মন্দা নেমে আসে। এরপর তৃতীয় ও চতুর্থ ত্রৈমাসিক সেভাবে ঘউরে দাঁড়াতে সাহায্য করতে পারেনি দেশকে।'
এরপর কেন্দ্রকে তোপ দেগে চিদম্বরম বলেন, 'গতবছর যখন করোনার প্রথম ঢেউ আছড়ে পড়ে, তখন কেন্দ্রের তরফে মুখ্য অর্থনৈতিক উপদেষ্টা কে সুব্রহ্মন্যম ঘুরে দাঁড়ানোর গল্প শোনাতে থাকেন। যখন কেউ দেশকে ঘুরে দাঁড়াতে দেখতে পাচ্ছিল না, তখন তিনি দাবি করেন 'ভি' আকারে ঘুরে দাঁড়াবে দেশ।'
চিদম্বরম এরপর কেন্দ্রকে পরামর্শ দেন, রাজস্ব ঘাটতি নিয়ে না ভেবে খরচ করুন। তিনি বলেন, দরকার পড়লে ধার করে বা ছাপিয়ে, যেভাবেই হোক, টাকা খরচ করুন। তাঁর হুঁশিয়ারি, এখনই যদি কোনও পদক্ষেপ না নেওয়া হয়, তাহলে তৃতীয় বা চতুর্থ ঢেউ কেউ আটকাতে পারবে না।
উল্লেখ্য, সোমবার এনএসও-র তরফে জিডিপির পরিমাণ প্রকাশ করা হয়। তাতে দেখা যাচ্ছে, গত চার দশকের নিরিখে নয়া রেকর্ড গড়েছে ভারতের অর্থনীতি। 2020-21 আর্থিক বছরে দেশের বৃদ্ধির গতি ছিল নিম্নগামী। এই অর্থবর্ষে ৭.৩ শতাংশ সংকোচনের সাক্ষী থাকতে হয়েছে দেশকে। যদিও শেষ তিন মাসে কিছুটা হলেও ছন্দে ফেরার চেষ্টা করেছে অর্থনীতি। খুব সামান্য (১.৬ শতাংশ) বেড়েছে বৃদ্ধির হার।
রিপোর্ট বলছে, গত বছর কেন্দ্রীয় সরকার দেশব্য়াপী আনলক প্রক্রিয়া শুরু করার পরই একটু একটু করে ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করে ভারতের অর্থনীতি। এই প্রক্রিয়া শুরু হয় ২০২০ সালে জুলাই মাস থেকে। তার আগে ২০২০ সালের মার্চ মাস থেকে জুন মাস পর্যন্ত করোনার কারণে গোটা দেশ স্তব্ধ ছিল। যার সরাসরি প্রভাব পড়েছে অর্থনীতিতে। কাজকর্ম থমকে যাওয়ায় কার্যত স্তব্ধ হয়ে গিয়েছে বৃদ্ধির হারও।
হিসাব বলছে, ২০২১ সালে জানুয়ারি মাস থেকে মার্চ মাসের মধ্যে পরিস্থিতি অনেকটাই স্বাভাবিক ছিল। এই সময়ের মধ্যে অধিকাংশ কলকারখানা, অফিস ও ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান খুলতে শুরু করে। শুরু হয় উৎপাদন। তারপরও এই তিনমাসে বৃদ্ধির হার ছিল মাত্র ১.৬ শতাংশ।