যুক্তরাষ্ট্রের প্রথম শহর হিসেবে সিয়াটেলে নিষিদ্ধ হল জাতপাত নিয়ে বৈষম্য। বৈষম্য বিরোধী আইনের সঙ্গে জাতপাত বিদ্বেষের বিষয়টিকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে সিয়াটেলের কাউন্সিলে। এই আইনের সমর্থনকারী কাউন্সিলররা বলেন, দেশে জাতি, ধর্ম, বর্ণের ভিত্তিতে অনেক বৈষম্য সহ্য করতে হয় অনেককেই। এই ধরনের আইন ছাড়া তারা শান্তিতে বসবাস করতে পারবেন না। তাহলে সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা নিশ্চিত থাকবে না। (আরও পড়ুন: DA আন্দোলন নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক সরকারি কর্মীদের সংগঠনগুলির, নেওয়া হবে কোন কৌশল)
এই আইন সংশোধনের বিষয়টি দক্ষিণ এশীয় বংশোদ্ভূত, বিশেষ করে ভারতীয় ও হিন্দু সম্প্রদায়ের সদস্যদের কাছে অতি গুরুত্বপূর্ণ। ভারতীয় বংশোদ্ভূত সিটি কাউন্সিলের সদস্য ক্ষমা সাওয়ান্ত এই বিষয়ে বার্তা সংস্থাকে বলেন, 'জাতপাতের বৈষম্যের বিরুদ্ধে লড়াই সকল ধরনের বৈষম্যের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের সঙ্গেই যুক্ত।' উল্লেখ্য, ভারতীয় এই জাতপাত ব্যবস্থা কয়েক হাজার বছরের পুরনো। এতে উঁচু জাতের লোকেরা সামাজিক সুযোগ সুবিধা ভোগ করে থাকেন। এদিতে দলিত সম্প্রদায়কে বহু বছর ধরে সমাজের 'নীচু স্তর' হিসেবে বিবেচনা করা হত। ভারতে এই জাতপাতের বৈষম্যের বিরুদ্ধে খাতায় কলমে আইন থাকলেও এখনও এই প্রথা চলেই আসছে। এদিকে আমেরিকায় প্রচুর ভারতীয় বংশোদ্ভূত থাকেন। সিয়াটেলেও থাকেন প্রচুর হিন্দু। সেখানে যাতে এই প্রথার জেরে কেউ বৈষম্যের শিকার না হন, তাই আইন। ক্ষমা সাওয়ান্ত বলেন, 'জাতপাত বৈষম্য কেবল অন্য দেশেই হয় না। দক্ষিণ এশীয় আমেরিকান এবং অভিবাসী কর্মীদেরকে তাদের কর্মস্থলে বৈষম্যের মুখোমুখি হতে হয়।'
ভারত ‘অস্পৃশ্যতাকে’ নিষিদ্ধ করলেও দলিতরা আজও দেশের বহু জায়গায় দলিতরা 'উচ্চবর্ণে'র অত্যাচার ও বৈষম্যের শিকার হন। এই বৈষম্য দূর করতেই দলিত এবং অনঅগ্রসর শ্রেণি শিক্ষার্থী ও কর্মপ্রার্থীদের জন্য শিক্ষা ও কর্মক্ষেত্রে আসন বরাদ্দ রাখার নীতি রয়েছে। জাতপাত বৈষম্যের সঙ্গে যে বর্ণ বা জাতিগত বৈষম্যের মতো অন্য বৈষম্যগুলোর কোনও পার্থক্য নেই এবং এটিকে নিষিদ্ধ করা দরকার, সেটাই কাউন্সিলকে বোঝান সাওয়ান্তরা। উল্লেখ্য, যুক্তরাষ্ট্রে দেশ, জাতি, গোষ্ঠী বা যেকোনও ধরনের বৈষম্য নিষিদ্ধ হলেও সুস্পষ্টভাবে জাতপাতকে নিষিদ্ধ করা হয়নি। এই আবহে আমেরিকায় সিয়াটেলই প্রথম শহর যেখানে জাতপাত বিদ্বেষ বিরোধী আইন কার্যকর করা হল।