সিবিআই ও ইডি প্রধানের মেয়াদ বাড়াতে অর্ডিন্যান্স এনেছে কেন্দ্র। সেই অর্ডিন্যান্সকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে সুপ্রিম কোর্টে বেশ কয়েকটি মামলার আবেদন জমা পড়েছিল। এই সংশোধনকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে কংগ্রেস নেতা রণদীপ সিং সুরজেওয়ালা এবং তৃণমূল কংগ্রেস নেতা মহুয়া মৈত্র ও সাকেত গোখলে মামলা দায়ের করেছিলেন সুপ্রিম কোর্টে। সেই আবেদনের প্রেক্ষিতে কেন্দ্রকে নোটিশ পাঠিয়েছিল সুপ্রিম কোর্ট। সেই নোটিশের জবাব দিল কেন্দ্র। কেন্দ্রের তরফে হলফনামায় দাবি করা হয়েছে, ‘এই দাবি রাজনৈতিক স্বার্থে করা হয়েছে জনস্বার্থে নয়।’
হলফনামায় কেন্দ্র বলে, ‘এটা স্পষ্ট যে পিটিশনকারীরা রাজনৈতিক দলের নেতাদের পক্ষ থেকে করা হয়েছে। ইডি যাতে নির্ভয়ে দায়িত্ব পালন না করতে পারে তা নিশ্চিত করার জন্য এই বিষয়ে পিটিশনগুলি দায়ের করা হয়েছে। উপরোক্ত রিট পিটিশন দাখিল করার পেছনে একটি সুস্পষ্ট রাজনৈতিক স্বার্থ রয়েছে। এটা স্পষ্টভাবে বোঝা যাচ্ছে যে এই ধরনের মামলা করা হয়েছে রাজনৈতিক ফায়দা হাসিলের জন্য। আবেদনকারীরা জনস্বার্থ মামলার ছদ্মবেশে এই মামলা করেছে। আবেদনে এটা উল্লেখও করা হয়নি যে বহু রাজনৈতিক দলের গুরুত্বপূর্ণ নেতাদের বিরুদ্ধে তদন্ত করা হচ্ছে।’
কেন্দ্রের তরফে আরও দাবি করা হয়, সংস্থার প্রধানদের মোয়াদ দীর্ঘায়িত হলে কাজে বিঘ্ন ঘটে না। বিরোধীদের খোঁচা দিয়ে হলফনামায় বলা হয়, ‘যদি তাদের রাজনৈতিক নেতাদের বিরুদ্ধে তদন্ত না করা হয়, তাহলেই ওরা মানবেন যে এই সংস্থাগুলো স্বাধীন ভাবে কাজ করে।’ প্রসঙ্গত, ২০২১ সালের ১৫ নভেম্বর সিবিআই এবং ইডির প্রধানদের সর্বোচ্চ মেয়াদ বাড়িয়ে পাঁচ বছর করা হয়েছিল। কেন্দ্রের যুক্তি ছিল হঠাত্ ওই দুই সংস্থান প্রধান সরে গেলে কোনও কোনও ক্ষেত্রে তদন্ত ব্যাহত হয়। তবে কেন্দ্রের এই সিদ্ধান্তের বিরোধিতায় মামলা দায়ের হয় শীর্ষ আদালতে।
মামলাকারীদের অভিযোগ ছিল, ইডি প্রধান সঞ্জয় কুমার মিশ্রের মেয়াদ বৃদ্ধি করতেই এই অর্ডিন্যান্স এনে আইন সংশোধন করেছে কেন্দ্র। ১৯৮৪ ব্যাচের সঞ্জয়কে ২০১৮ সালের নভেম্বরে ইডি প্রধান পদে নিয়োগ করা হয়েছিল। দুই বছর পর ২০২০ সালে আরও এক বছরের জন্য মেয়াদ বৃদ্ধি করা হয়েছিল সঞ্জয়ের। সেই মেয়াদ বৃদ্ধির বিষয়টিকেও চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টে মামলা দায়ের করা হয়েছিল মামলা। এই আবহে গতবছরের ৮ সেপ্টেম্বর সুপ্রিম কোর্ট পর্যবেক্ষণে জানায় যে সঞ্জয়ের মেয়াদ আর বৃদ্ধি করা উচিত নয়। তবে সুপ্রিম কোর্ট এই মামলায় হস্তক্ষেপ করতে চায়নি। এরপরই কেন্দ্রের তরফে অর্ডিন্যান্স নিয়ে এসে আইন সংশোধন করা হয়। আবেদনকারীদের অভিযোগ, সুপ্রিম কোর্টের ২০২১ সালের নির্দেশকে লঙ্ঘন করে কেন্দ্রের অর্ডিন্যান্স। আর এই কারণেই কেন্দ্রের এই অর্ডিন্যান্সকে বেআইনি ঘোষণা করার দাবি জানানো হয়েছে।