আগে ধারণা ছিল, শিশুদের মাধ্যমে করোনাভাইরাস তেমন ছড়িয়ে পড়ে না। কিন্তু নয়া একটি গবেষণায় জানানো হল, করোনার সংক্রমণে শিশুরাও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। অর্থাৎ শিশুদের থেকেও করোনা ছড়িযে পড়ছে।
সেই গবেষণার নেতৃত্বে ছিলেন ওয়াশিংটনের 'সেন্টার ফর ডিজিজ ডায়নামিকস, ইকোনমিকস অ্যান্ড পলিসি'-র অধিকর্তা রামানান লক্ষ্মীনারায়ণ। করোনার প্রকোপ শুরু থেকে ১ অগস্ট পর্যন্ত তামিলনাড়ু এবং অন্ধ্রপ্রদেশের কনট্যাক্ট ট্রেসিংয়ের যাবতীয় তথ্য তাঁদের দলকে দেওয়া হয়েছিল। সবমিলিয়ে ১ অগস্ট পর্যন্ত দু'রাজ্যে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ৪৩৫,০০০-এর বেশি। কিন্তু দেশের অন্যান্য অংশে অধিকাংশ করোনা আক্রান্ত ও তাঁদের কনট্যাক্ট ট্রেসিং সংক্রান্ত তথ্যে অসম্পূর্ণ ছিল। গবেষকদের হাতে ৮৪,৯৬৫ জন আক্রান্তের সংস্পর্শে আসা ৫৭৫,৭০১ জনের করোনা পরীক্ষার রিপোর্ট ছিল। গত ৩০ সেপ্টেম্বর ‘সায়েন্স’ ম্যাগাজিনে সেই গবেষণা প্রকাশিত হয়েছে।
গবেষকরা জানিয়েছেন, ৭০ শতাংশের বেশি আক্রান্তের ক্ষেত্রে অন্যদের দেহে করোনা ছড়িয়ে পড়ে না। খুব অল্প সংখ্যক করোনা আক্রান্ত 'সুপার স্প্রেডার' হন। ভারতে করোনার সংক্রমণ কীভাবে হয়, তা নিয়ে প্রথম বিস্তারিত গবেষণায জানানো হয়, করোনার সংক্রমণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা আছে শিশুদের। কোনও করোনা আক্রান্ত শিশুর থেকে তার সমবয়সী অন্য শিশুদের শরীরেও করোনা ছড়িয়ে পড়তে পারে। শুধু তাই নয়, শিশুদের থেকে ২০-৪৪ বছরের মানুষরা সংক্রামিত হতে পারেন। রামানান বলেন, 'আমরা জানতে পেরেছি যে শিশুরা একে অপরের দেহে (করোনা) ছড়িয়ে দিতে পারে এবং বড়রাও (সংক্রামিত করতে পারে)।'
আর সেখানেই তৈরি হয়েছে উদ্বেগ। গবেষকদের বক্তব্য, অধিকাংশ শিশুর ক্ষেত্রে করোনার সংক্রমণ কম হয়। তার ফলে শিশুরা করোনায় আক্রান্ত হলেও তা ধরা নাও পড়তে পারে। অর্থাৎ সংক্রমণের মাত্রা বাড়তে পারে। তবে সেই ফলাফল অবাক নন বিশেষজ্ঞরা। সংক্রামক রোগের ক্ষেত্রে ভারতের প্রখ্যাত বিজ্ঞানী গগনদীপ ক্যাং বলেন, 'ইনফ্লুয়েঞ্জার বিষয়ে আমরা যা জানি, এটাও সেরকম মনে হচ্ছে। যেখানে প্রাথমিকভাবে শিশুদের থেকে সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ে। শ্বাসযন্ত্রের সংক্রমণের ক্ষেত্রেও তা হলে অবাক হওয়ার কিছু নেই।'