আরএসএস মতাদর্শে বিশ্বাসী এমএস গোলওয়ালকারের জন্মজয়ন্তীতে শ্রদ্ধার্ঘ্য প্রদান নিয়ে বিতর্কে জড়াল কেন্দ্র। নরেন্দ্র মোদী সরকারের সমালোচনায় মুখর হয়েছেন বিরোধী এবং সমাজকর্মীদের একাংশের। তাঁদের বক্তব্য, মুসলিমদের প্রতি যে ব্যক্তির দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে বিতর্ক আছে, কীভাবে তাঁর জন্মজয়ন্তীতে শ্রদ্ধার্ঘ্য জানাতে পারে কেন্দ্র?
শুক্রবার গোলওয়ালকারের জন্মজয়ন্তী ছিল। তা নিয়ে কেন্দ্রীয় সংস্কৃতি মন্ত্রকের তরফে টুইট করা হয়। টুইটারে সরব হন কংগ্রেস সাংসদ শশী থারুর। তিনি বলেন, ‘কেউ কি কেন্দ্রীয় সংস্কৃতি মন্ত্রককে গুরুত্ব সহকার নেবে এবং সত্যি বিশ্বাস করবে যে এই ব্যক্তি মহান চিন্তাবিদ এবং পণ্ডিত (ছিলেন)! হোয়াই আই অ্যাম এ হিন্দুর কিছুটা নির্যাস আবারও পোস্ট করছি। কেন্দ্রীয় সরকার এমন একজন ব্যক্তিকে সম্মান দেখাচ্ছে, যিনি ভারতের পতাকা এবং সংবিধানের অবমাননা করেছিলেন।’
১৯০৬ সালের ১৯ ফেব্রুয়ারি জন্মগ্রহণ করেছিলেন গোলওয়ালকার। যিনি ১৯৩৯ সালে প্রথম সংঘ প্রধান কেবি হেডগেওয়ারের থেকে রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘের (আরএসএস) দায়িত্ব নিয়েছিলেন। মহাত্মা গান্ধীর হত্যার পর ১৯৪৯ সালে তাঁকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। যদিও খুনের ঘটনায় তাঁকে নাম জড়ায়নি। সেই সময় সংঘের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ করেছিল কেন্দ্র। সংঘের নিজস্ব প্রকাশনায় তাঁর বিভিন্ন লেখনীতে যে মত তুলে ধরা হয়েছে, তা নিয়ে বিতর্ক হয়েছে। গোলওয়ালকারের মতবাদ প্রসঙ্গে কবিতা কৃষ্ণন বলেন, ‘গোলওয়ালকারের কাছে হিন্দুরা জাতীয়তাবাদীর সমান ছিলেন। মুসলিম, শিখ, বৌদ্ধ, দলিত, অন্যান্য অনগ্রসর শ্রেণি, নারীবাদী, তামিল, কন্নড়, মণিপুরি-সহ অন্যান্য সাম্প্রদায়িক, বিচ্ছিন্নতাবাদীদের সমগোত্রীয় ছিলেন।’
তবে মোদী সরকারের গোলওয়ালকার প্রীতি এই প্রথম নয়, গত বছর প্রাক্তন আরআরএস প্রধানের নামে কেরালার রাজীব গান্ধী সেন্টার ফর বায়োটেকনোলজির দ্বিতীয় ক্যাম্পাসের নামকরণ করে কেন্দ্র। তা নিয়েও যথেষ্ট বিতর্ক হয়েছিল। যদিও জন্মজয়ন্তীতে গোলওয়ালকারকে শ্রদ্ধার্ঘ্য প্রদান নিয়ে সংস্কৃতি মন্ত্রকের তরফে জানানো হয়েছে, কোনও মতাদর্শে বেড়া পড়াতে চায় না কেন্দ্র। মন্ত্রকের মিডিয়া উপদেষ্টা নীতিল ত্রিপাঠী বলেন, ‘প্রত্যেক শ্রেণির আকাঙ্ক্ষার প্রতিনিধিত্ব করে সংস্কৃতি মন্ত্রক। মতাদর্শ বা চিরাচরিত ধারার অন্তর্গত নয়, এমন চিন্তাভাবনায় লাগাম পড়ানোয় বিশ্বাসী নয় মন্ত্রক।’ নাম গোপন রাখার শর্তে এক আধিকারিক জানান, এই প্রথম সংঘের দ্বিতীয় প্রধানের জন্মদিন পালন করল না কেন্দ্র।