দুর্ঘটনাস্থল পোঁছে রেলমন্ত্রীর সামনেই রেলের সমন্বয় নিয়ে প্রশ্ন তুললেন প্রাক্তন রেলমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। রেলের বিবৃতি অনুযায়ী, শুক্রবার রাতে ওড়িশার বালেশ্বরে করমণ্ডল এক্সপ্রেসের দুর্ঘটনায় এখন পর্যন্ত ২৩৮ জনের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে রাজ্যের অনেকে রয়েছেন।
শনিবার সকালে কপ্টারে করে ওড়িশার বালেশ্বরে পৌঁছন মুখ্যমন্ত্রী তথা প্রাক্তন রেলমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ে। তিনি দুর্ঘটনাস্থল ঘুরে দেখেন। ইতিমধ্যেই রাজ্যের একটি প্রতিনিধি দলকে সেখানে পাঠিয়েছেন তিনি। বালেশ্বর হেলিপ্যাড গ্রাউন্ডে নেমে তিনি কথা বলেন তাঁদের সঙ্গে। এর পর তিনি সোজা চলে যান দুর্ঘটনাস্থলে।
সেই সময় দুর্ঘটনাস্থলে ছিলেন রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব। তাঁর সামনেই মমতা বলেন,'মনে হয় রেলের সমন্বয়ের অভাব রয়েছে। আরও যত্নশীল হওয়া প্রয়োজন।' তিনি এই দুর্ঘটনার সঠিক তদন্তও দাবি করেন। তিনি বলেন,'কিছু একটি নিশ্চয়ই হয়েছে। সঠিক তদন্ত করা হোক।' তিনি রেলমন্ত্রীর কাছে মৃতের সংখ্যাও জানতে চান।
দুপুর ১টা ২৪ নাগাদ মুখ্যমন্ত্রী জেলাশাসককে নিয়ে টাউন হলে চলে যান। সেখানে আহতদের সঙ্গে দেখা করেন তিনি। প্রসঙ্গত বালেশ্বর যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বলেন, 'দেখা হলে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গেও কথা বলব।'
রেল দুর্ঘটনায় বাংলার মৃতদের পরিবারকে ৫ লক্ষ টাকা আর্থিক সাহায্য দেওয়ার ঘোষণা করেন মুখ্যমন্ত্রী। এছাড়া গুরুতর আহতদের ১ লক্ষ টাকা এবং তুলনামূলক ভাবে কম আহতদের ৫০ হাজার টাকা দেওয়ার ঘোষণা করেন মুখ্যমন্ত্রী। রাজ্যের আহতদের কলকাতায় নিয়ে গিয়ে চিকিৎসা করানোর কথাও ঘোষণা করেন মমতা। তিনি বলেন,'বাংলার মানুষ বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। যাঁরা আহত হয়েছেন দরকার হলে তাঁদের কলকাতা নিয়ে গিয়ে চিকিৎসা করাব।'
পরে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ‘এটা এই শতাব্দীর সবচেয়ে বড় রেল দুর্ঘটনা। আমার যতদূর মনে হয় ট্রেনে অ্যান্টি কলিশন ডিভাইস লাগানো ছিল না। সে কারণে এই দুর্ঘটনা।’
আহতদের দেখতে সোরো হাসপাতালে
আহতদের দেখতে বালেশ্বরের সোরো হাসপাতালে যান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেন, 'অ্যান্টি কলিশন ডিভাইস আমি করে দিয়েছিলাম। এই ট্রেনটিতে সেটা ছিল না। তাই ভয়াবহ দুর্ঘটনা।'
দুর্ঘটনায় মৃত বাসন্তীর একই পরিবারের ৩ ভাই
ওড়িশার বালেশ্বরে ট্রেন দুর্ঘটনায় মৃত্যু হল দক্ষিণ ২৪ পরগনার বাসন্তীর পাঁচ বাসিন্দার। এদের মধ্যে একই পরিবারের ৩ সদস্যের মৃত্যু হয়েছে। অন্ধ্রপ্রদেশে ধান রোপনের কাজে যাচ্ছিলেন তাঁরা। পরিবারের তরফে জানানো হয়েছে, ঘটনাস্থল থেকে এক সহযাত্রী তাঁদের মৃত্যুর খবর জানিয়েছেন।