অনেক ধরনের নৃশংস অপরাধের কথা শুনেছেন। একেবারে ভয়াবহ ঘটনা। সেই অপরাধের সাজাও হয় মাঝেমধ্যেই। কিন্তু কোনও অপরাধীর এক লাখ ৪১ হাজার ৭৮ বছরের কারাদন্ডের নির্দেশ দেওয়ার কথা শুনেছেন কখনও? অবিশ্বাস্য মনে হলেও বাস্তবে তেমনটাই সাজা দেওয়া হয়েছিল। ওই মহিলা অপরাধীর জন্য যে সাজার ব্যবস্থা করা হয়েছিল তার জেরে ওই অপরাধীর নাম একেবারে গিনেস বুকেও উঠে গিয়েছে। সব থেকে দীর্ঘতম বছরের জন্য সাজার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল তাকে। থাইল্যান্ডের বাসিন্দা ওই মহিলার নাম চাময় থিপায়াসো। থাই পিরামিড স্কিম নিয়ে প্রতারণার অভিযোগে তাকে গ্রেফতার করা হয়েছিল।
১৯৮৯ সালে এই মামলা হয়েছিল। তখনই তাকে ১৪১,০৭৮ বছরের কারাদন্ডের সাজা শোনানো হয়। থাইল্যান্ডের রাজপরিবারের সদস্যদের সঙ্গে তিনি প্রতারণা করেছিলেন বলে অভিযোগ।
এদিকে এত বছরের সাজা প্রাপ্ত হওয়ার পরেও তিনি ৮ বছর জেল খেটেই মুক্তি পেয়ে যান। কারণ পরবর্তী সময়ে থাইল্যান্ডে একটি আইন পাশ হয় যে কাউকেই ২০ বছরের বেশ কারাদন্ড দেওয়া হবে না।
তবে শুধু থাইল্যান্ডে নয়, বিশ্বের একাধিক দেশেই দীর্ঘ সাজা দেওয়ার নজির রয়েছে। আমেরিকায় ৩০,০০০ বছরের সাজা দেওয়ার নজির রয়েছে। ১৯৯৫ সালে ওকলাহামা শহরের বিস্ফোরণের জেরে টেরি নিকোলাশ বলে এক জঙ্গির সাজা ঘোষণা করা হয়েছিল। ১৬১ বার যাবজ্জীবন ও ৯৩০০ বছরের জন্য কারাদন্ডের নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। ওই ঘটনায় ১৬৮জনের মৃত্যু হয়েছিল। ১৯জন শিশু ওই ঘটনায় জড়িত ছিল বলে অভিযোগ।
আল কায়দা মাদ্রিদ ট্রেনে বিস্ফোরণের ঘটনায় তিনজনকে সাজা দেওয়া হয়েছিল স্পেনে। তাদের ১২০,০০০ বছরের জন্য জেলে পাঠানো হয়। ওই ঘটনায় ১৯৩জনের মৃত্যু হয়েছিল। নারকীয়ভাবে খুন করা হয়েছিল একের পর এক মানুষ। ভয়াবহ বিস্ফোরণে উড়ে গিয়েছিল তাদের শরীর। ঘটনার নৃশংসতার জেরে সাড়া পড়ে যায় গোটা বিশ্বে। আর তার নিরিখে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেওয়া হয়েছিল অভিযুক্তদের। তাদের ১ লাখের বেশি বছরের জন্য গরাদের অন্তরালে পাঠানো হয়।
এবার তবে সাজার নিরিখে একেবারে বিশ্বরেকর্ড করেছেন থাইল্যান্ডের ওই মহিলা। রাজ পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে প্রতারণার অভিযোগে তার বিরুদ্ধে শাস্তি ঘোষণা করা হয়। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তিনি অবশ্য মুক্তি পেয়ে যান। ওই দেশের আইনের পরিমার্জনের জেরে তিনি আট বছর জেল খেটেই মুক্তি পেয়ে যান।