ফরিদাবাদে নিজের বাড়ির কাছে লুঙ্গি পরে দৌড়াচ্ছেন বিট্টু বজরঙ্গি। লাঠি ও বন্দুক হাতে ধাওয়া করছেন সাদা পোশাকের পুলিশকর্মী। কিছুক্ষণ পরে বজরং দলের সদস্য তথা 'গো-রক্ষক' বিট্টুর ঘাড় ধরে নিয়ে বেরিয়ে যাচ্ছেন পুলিশ আধিকারিকরা। এমনই একটি নাটকীয় ভিডিয়ো সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়ে গিয়েছে। যা আদতে ওই এলাকার সিসিটিভি ফুটেজ ছিল। সংবাদসংস্থা পিটিআইয়ের টুইট করা সেই ভিডিয়োয় দেখা গিয়েছে, প্রায় ১৫-২০ জনের পুলিশের একটি দল ছিল। একেবারে নিখুঁত পরিকল্পনাৃয় যে বিট্টুকে ধরা হয়েছে, তা সিসিটিভি ফুটেজ থেকেই স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে। যে বিট্টুর বিরুদ্ধে উস্কানি দেওয়া, অস্ত্র ছিনিয়ে নেওয়ার মতো একাধিক অভিযোগ উঠেছে।
নুহ পুলিশের তরফে জানানো জানানো হয়েছে, গত ৩১ জুলাই যে হিংসা ছড়িয়েছিল, সেই ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে ফরিদাবাদের তাবড়ু থেকে বজরঙ্গি ওরফে রাজ কুমারকে পাকড়াও করে ক্রাইম ইনভেস্টিগেশন এজেন্সির একটি দল। অ্যাসিসট্যান্ট পুলিশ সুপার উষা কুণ্ডুর অভিযোগের ভিত্তিতে নুহতে বজরঙ্গি-সহ ১৫-২০ জনের বিরুদ্ধে যে এফআইআর দায়ের করা হয়, সেটার ভিত্তিতে তাঁকে জেরা করা হয়। জেরার পর তাঁকে সরকারিভাবে গ্রেফতার করা হয়েছে। বুধবার তাঁকে গুরুগ্রামের একটি আদালতে পেশ করা হবে।
আরও পড়ুন: Hate speech at Nuh: মুসলিম-অধ্যুষিত নুহ মুছে দেওয়া হোক, কাটা হবে হাত- হিংসার ১ মাসের মধ্যেই উস্কানি
পুলিশ জানিয়েছে, গো-রক্ষক বজরং দলের সভাপতি-সহ কয়েকজনের বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির ১৪৮ ধারা-সহ (দাঙ্গা), ১৪৯ ধারা (বেআইনি জমায়েত), ৩৩২ ধারা (আঘাত করা), ৩৫৩ ধারা, ১৮৬ ধারা (সরকারি কর্মীকে কাজে বাধা দেওয়া), ৩৯৫ ধারা, ৩৯৭ ধারা (সশস্ত্র ডাকাতি) ও ৫০৭ ধারা (অপরাধমূলক পরিকল্পনা)-সহ অস্ত্র আইনের একাধিক ধারায় মামলা রুজু করা হয়েছে। সেই এফআইআরের রেশ ধরেই বজরঙ্গিকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। বাকিদেরও দ্রুত গ্রেফতারির চেষ্টা করা হচ্ছে। নজরদারি চালানো হচ্ছে সোশ্যাল মিডিয়ায়। দোষীদের যাতে কঠোর শাস্তি দেওয়া যায়, তা নিশ্চিত করার চেষ্টা করা হচ্ছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
আরও পড়ুন: Haryana violence: ‘হিন্দুদের পাকড়াও পুলিশের’, হরিয়ানার হিংসা নিয়ে পোস্ট, ধৃত সুদর্শন নিউজের এডিটর
ঠিক কী করেছিলেন বজরঙ্গি? পিটিআইয়ের প্রতিবেদন অনুযায়ী, এক উচ্চপদস্থ পুলিশ আধিকারিক জানিয়েছেন যে ৩১ জুলাই মুসলিম-অধ্যুষিত নুহতে বিশ্ব হিন্দু পরিষদের শোভাযাত্রার সময় বজরঙ্গ এবং তাঁর সহযোগীদের কাছে অস্ত্র ছিল। যে শোভাযাত্রার উপর হামলা চালানো হয়েছিল। শূন্যে অস্ত্র প্রদর্শন করছিলেন তাঁরা। সেই অস্ত্র বাজেয়াপ্ত করে নিয়েছিলেন অ্যাসিসট্যান্ট পুলিশ সুপার। কিন্তু পুলিশের গাড়ি থেকে অস্ত্র ছিনিয়ে নিয়েছিলেন। এমনকী পুলিশকে হুমকি দেওয়ারও অভিযোগ উঠেছে বজরঙ্গিদের বিরুদ্ধে। যাঁর বিরুদ্ধে আগে উস্কানিমূলক ভাষণের অভিযোগও আছে।