সপ্তাহতিনেক আগে যেখান থেকে হিংসা ছড়িয়েছিল, সেই জেলায় প্রকাশ্যে উস্কানিমূলক ভাষণ দেওয়া হল। রবিবার হরিয়ানার নুহ জেলার পালওয়ালে যে মহাপঞ্চায়েতের আয়োজন করা হয়, সেখান থেকেই ‘শিক্ষা দেওয়ার’ দাবি ওঠে। যে মহাপঞ্চায়েতে যোগ দেন বজরং দল এবং বিশ্ব হিন্দু পরিষদের শয়ে-শয়ে সমর্থক। হরিয়ানার পাশাপাশি উত্তরপ্রদেশ এবং রাজস্থান থেকেও অনেকে সেই মহাপঞ্চায়েতে আসেন। ওই মঞ্চ থেকে কোনও রাখঢাক না করে সরাসরি উস্কানিমূলক ভাষণও দেন একাধিক বক্তা। হিন্দু পরিবারের হাতে অস্ত্র তুলে দেওয়া, মুসলিম-অধ্যুষিত নুহ জেলা তুলে দিয়ে অন্য জেলার সঙ্গে মিশিয়ে দেওয়ার মতোও দাবি ওঠে। সরাসরি মুসলিমদের নাম না করে এক বক্তা তো আবার বলেন, ‘আপনি যদি আমাদের দিকে আঙুল তোলেন, আমরা হাত কেটে নেব।’ শুধু তাই নয়, ওই মহাপঞ্চায়েতে যোগ দেওয়া অনেকের হাতেই অস্ত্র ছিল। আর যতজনকে নিয়ে মহাপঞ্চায়েত আয়োজনের অনুমতি দেওয়া হয়েছিল, সেটার প্রায় ১০ গুণ বেশি মানুষ যোগ দেন ওই কর্মসূচিতে (৫,০০০ জনের মতো আসেন)।
আরও পড়ুন: Haryana violence: ‘হিন্দুদের পাকড়াও পুলিশের’, হরিয়ানার হিংসা নিয়ে পোস্ট, ধৃত সুদর্শন নিউজের এডিটর
অথচ এখনও নুহের আকাশে উত্তেজনার মেঘ জমে রয়েছে। সেই পরিস্থিতিতে পুলিশ সুপার লোকেন্দর সিং দাবি করেছিলেন, ওই মহাপঞ্চায়েত আয়োজনের অনুমতি প্রদানের আগে একাধিক শর্ত আরোপ করা হয়েছে। সবাইকে শান্তি এবং ঐক্য বজায় রাখতে বলা হয়েছে। তিনি বলেছিলেন, 'কোনওরকম ঘৃণামূলক ভাষণ না দিতে বলা হয়েছে। কোনওরকম সাম্প্রদায়িক হিংসায় না জড়িয়ে পড়েন, তা নিশ্চিত করতেও বলা হয়েছে।' যদিও শেষপর্যন্ত ওই মহাপঞ্চায়েত থেকে যেরকম ভাষণ দেওয়া হয়েছে, তা নিয়ে যোগাযোগ করা হলেও পুলিশের কোনও প্রতিক্রিয়া মেলেনি।
আরও পড়ুন: Rohingya Link in Haryana Violence: হরিয়ানা হিংসায় এবার রোহিঙ্গা যোগ, 'প্রমাণ আছে', বলছে পুলিশ
উল্লেখ্য, গত ৩১ জুলাই নুহতে বিশ্ব হিন্দু পরিষদের মিছিল ঘিরে হিংসা ছড়িয়েছিল। ওই মিছিলে 'গো-রক্ষক' মনু মানেসর যোগ দিতে পারেন বলে আগে থেকেই উত্তেজনা তৈরি হয়েছিল। যে মনুর বিরুদ্ধে গত ফেব্রুয়ারিতে রাজস্থানের দুই মুসলিম যুবককে পুড়িয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছিল। সেই উত্তেজনার মধ্যে বিশ্ব হিন্দু পরিষদের মিছিল হয়। ওই মিছিল আটকানো হয় এবং পাথর ছোড়ার অভিযোগ ওঠে। যা হিংসার আকার নেয়।
রবিবার মহাপঞ্চায়েতে দাবি করা হয়েছে যে আগামী ২৮ অগস্ট থেকে নালহার গ্রাম থেকে মিছিল সম্পূর্ণ করা হবে। তবে সেই অনুমতি দেওয়া হবে কিনা, তা নিয়ে ধোঁয়াশা বজায় রেখেছেন হরিয়ানা মুখ্যমন্ত্রী মনোহর লাল খাট্টার। সংবাদসংস্থা এএনআইয়ের প্রতিবেদন অনুযায়ী, হরিয়ানার মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন যে ‘যখন ওরা সরকারের থেকে মিছিলের অনুমতি চাইবে, তখন আমরা উপযুক্ত পদক্ষেপ করব।’