বেশ কয়েকদিন ধরে টালবাহানার পর অবশেষে প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের প্রতিদ্বন্দ্বী এবং সমালোচক হিসেবে পরিচিত অ্যালেক্সি নাভালনির মৃতদেহ তাঁর মায়ের কাছে হস্তান্তর করল রাশিয়ার প্রশাসন। নাভালনির মুখপাত্র কিরা ইয়ারমিশ শনিবার এক্স হ্যান্ডেলে একটি পোস্টে একথা জানিয়েছেন। সেইসঙ্গে যারা নাভালনির মৃতদেহ হস্তান্তরের দাবি করেছিলেন তাদের সকলকেই ধন্যবাদ জানিয়েছেন কিরা।
আরও পড়ুন: নাভালনির কারাবাসে রহস্যমৃত্যু! আর কোন কোন পুতিন বিরোধী জেলবন্দি আছেন?
প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের একজন কট্টর সমালোচক হিসেবে পরিচিত নাভালনি ১৯ বছরের সাজা হয়েছিল। জেলে থাকার সময় গত ১৬ ফেব্রুয়ারি উত্তর সাইবেরিয়ার একটি উচ্চ-নিরাপত্তা বিশিষ্ট কারাগারে মারা যান তিনি। ঘটনায় রাজনৈতিক উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে তাঁকে খুন করার অভিযোগ ওঠে। যদিও সেই অভিযোগ উড়িয়ে দেয় রুশ প্রশাসন। জেল প্রশাসনের দাবি ছিল, জেলের মধ্যে হাঁটাচলার সময় আচমকা পড়ে গিয়ে মৃত্যু হয়েছিল নাভালনির। তবে সেই তত্ত্ব মানতে রাজি হয়নি না নাভালনির পরিবার এবং তাঁর সমর্থকরা। ছেলের মৃত্যুর খবর পেয়ে জেলে ছুটে গিয়েছিলেন নাভালনির মা। কিন্তু, জেল কর্তৃপক্ষ তাঁকে প্রথমে দেখা করতে দেয়নি। এরপর ছেলের মৃতদেহ ফিরে পাওয়ার দাবি নাভালনির লিউডমিলা। শেষ পর্যন্ত শুক্রবার ছেলের মৃতদেহ তাঁকে দেখানো হয়। তবে একই সঙ্গে গোপনে অন্তেষ্টিক্রিয়া সম্পন্ন করার জন্য তাঁর উপর চাপ দেওয়া হয় বলেও তিনি অভিযোগ তোলেন।
দীর্ঘ টালবাহানার পর শেষ পর্যন্ত ছেলের মৃতদেহ হাতে পেয়েছেন নাভালনির মা। তবে দেহ হস্তান্তর হলেও প্রশাসন পরিবারের ইচ্ছামতো অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া করতে দেবে কি না তা জানেন না বলে কিরা জানিয়েছে। উল্লেখ্য, প্রেসিডেন্ট পুতিন কখনও প্রকাশ্যে নাভালনির নাম উল্লেখ করেননি। তিনি তাঁর বিশিষ্ট সমালোচকের মৃত্যু নিয়ে কোনও মন্তব্য করেননি। একটি সংবাদ সংস্থার প্রতিবেদন অনুসারে, রুশ প্রশাসনের তরফে দিমিত্রি পেসকভ নাভালনির মৃত্যুর জন্য পুতিনকে দায়ী করে জারি করা বিবৃতিকে অশালীন বলে নিন্দা করেছেন। নাভালনির দল অভিযোগ করেছিল, তদন্তকারীরা তাঁরা দেহকে আটকে রেখেছে এবং তাঁর মায়ের প্রবেশাধিকার প্রত্যাখ্যান করেছে।
পরে দেহ ফিরে পাওয়ার দাবিতে নাভালনির হাজার হাজার সমর্থক একটি গণ পিটিশনে স্বাক্ষর করেছিলেন। শনিবার একটি ভিডিয়ো বার্তায় নাভালনির স্ত্রী ইউলিয়া নাভালনায়া পুতিনকে তাঁর স্বামীর মৃতদেহ ফেরাতে বাধা দেওয়ার জন্য অভিযোগ করেছেন। তিনি বলেছেন, পুতিন এখন যা করছেন তা শুধু ঘৃণ্য কাজ নয়, তা জঘন্যতর কাজ।