শিশির গুপ্তা
ফিন্যানশিয়াল অ্যাকশন টাস্ক ফোর্সের ‘ধূসর তালিকা’ থেকে নিজেদের নাম সরাতে মরিয়া পাকিস্তান। ভারতের এই প্রতিবেশ দেশ এখন বন্যায় ডুবে। অর্থনৈতিক ভাবেও পাকিস্তানের অবস্থা বেশ শোচনীয়। এই আবহে আন্তর্জাতিক মহল থেকে অর্থনৈতিক সাহায্য পেতে এফএটিএফ-এর ধূসর তালিকা থেকে নিজেদের নাম কাটানো পাকিস্তানের জন্য অত্যাবশ্যক হয়ে দাঁড়িয়েছে। এই আবহে মাসুদ আজহারকে ‘ত্যাগ’ করেছে পাকিস্তান।
জইশ-ই মহম্মদ থেকে শুরু করে লস্কর-ই তৈবার মতো জঙ্গি সংগঠনের কাছে পাকিস্তান ‘স্বর্গ’। তবে এবার সেই পাকিস্তানই নাকি আফগান তালিবানের কাছে আবেদন জানাল যাতে জইশ প্রধান মাসুদ আজহারকে খুঁজে বের করে গ্রেফতার করা হয়। যদিও আন্তর্জাতিক বিশ্লেষকদের একাংশের মত, পাকিস্তান আদতে এফএটিএফ-এর ‘ধূসর তালিকা’ থেকে বের হতে এই ‘চাল’ দিয়েছে। কারণ আফগানিস্তানের তালিবান প্রশাসনের তরফে স্পষ্ট ভাষায় জানানো হয়েছে মাসুদ তাদের দেশে নেই। এদিকে গোয়েন্দা সূত্রে খবর, জইশের বর্তমান কার্যকরী প্রধান রউফ আজহার পাকিস্তানের মদত পেয়ে চলেছে।
প্রসঙ্গত, এফএটিএফ-এর ‘ধূসর তালিকা’ থেকে বের হতে পাকিস্তানকে নিজেদের ‘জঙ্গি বিরোধী’ ভাবমূর্তি তৈরি করতে হবে। এদিকে পশ্চিমা দেশগুলি মাসুদকে নিয়ে ক্রমাগত চাপ বৃদ্ধি করছে পাকিস্তানের উপর। এই আবহে পাকিস্তান নাকি তালিবানের শরণাপন্ন হয়েছে। উল্লেখ্য, এই পাক জঙ্গিকে ১৯৯৯ সালে ভারত মুক্তি দিতে বাধ্য হয়েছিল। কাঠমান্ডু থেকে একটি বিমান অপহরণ করে সেই সময় কান্দাহারে নিয়ে গিয়ে ভারত সরকারের উপর চাপ সৃষ্টি করেছিল জঙ্গিরা। তখন তালিবানও তাদের মদত দিয়েছিল। এহেন তালিবানকেই এবার মাসুদকে জেলবন্দি করতে বলল পাকিস্তান। ইসলামাবাদের তরফে এই সংক্রান্ত একটি চিঠি লেখা হয় তালিবানের বিদেশ মন্ত্রকের কাছে। গত ১৩ সেপ্টেম্বর সেই চিঠি লেখা হয় বলে জানা গিয়েছে। এই পরিস্থিতিতে মাসুদ এবং তার ভাইকে আন্তর্জাতিক মহলের সামনে ‘ত্যাজ্য’ করেছে পাকিস্তান।
এদিকে সম্প্রতি রাষ্ট্রসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে ফ্রান্সের সঙ্গে মিলে ভারত ঔরঙ্গজেব আলমগির ওরফে মুজাহিদ ভাই এবং আসিফ কাসিফ জানকে আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসীদের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করার প্রস্তাব পেশ করে। উল্লেখ্য, আলমগির পাকিস্তানের পঞ্জাব প্রদেশের বাহাওয়ালপুরে থাকে। ২০১৯ সালের পুলওয়ামা হামলার মূল পরিকল্পনাকারী ছিল এই আলমগির। অপরদিকে ২০১৬ সালের পাঠানকোট হামলার কারিগর ছিল আসিফ। তবে আলমগির এবং আসিফকে নিয়ে কোনও হেলদোল নেই পাকিস্তানের। এর থেকেই স্পষ্ট পাকিস্তানের দ্বিচারিতা।