আদানিকাণ্ডে সেবি তদন্ত নিয়ে আজ সুপ্রিম কোর্টের রায়ের পরই এই বিষয়ে মুখ খুললেন শিল্পপতি গৌতম আদানি। গতবছর জানুয়ারি মাসেই হিন্ডেনবার্গ রিসার্চের রিপোর্টের ধাক্কায় ধস নেমেছিল আদানি সাম্রাজ্যে। তবে গত এক বছরে সেই ধাক্কা অনেকটাই সামলে উঠে ফের সামনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে আদানি। এরই মাঝে আজকের সুপ্রিম রায় অনেকটাই স্বস্তি দেবে আনাদিকে। আর শীর্ষ আদালতের রায় ঘোষণা হতেই আদানি বললেন, 'সত্যমেব জয়তে'। পাশাপাশি এতদিন যাঁরা তাঁর পাশে ছিলেন তাঁদের প্রতিও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন আদানি। এই নিয়ে তিনি বলেন, 'যারা আমাদের পাশে থেকেছেন তাঁদের কাছে আমি কৃতজ্ঞ। ভারতের বৃদ্ধির পথে আমাদের এই স্বল্প পরিমাণ অবদান অব্যাহত থাকবে।' (আরও পড়ুন: 'ভূমিপুত্র' শ্রিংলার পোস্টার দার্জিলিঙে, BJP প্রার্থী হবেন প্রাক্তন বিদেশ সচিব?)
আরও পড়ুন: ২১ মাসে সর্বোচ্চ, একদিনে প্রায় ১ লাখ ৩৭ হাজার টাকা দাম বাড়ল বিটকয়েনের!
উল্লেখ্য, শেয়ারের দাম হেরফের সংক্রান্ত মামলায় সুপ্রিম কোর্টে সম্প্রতি একটি হলফনামা পেশ করেছিলেন সেই হলফনামায় দাবি করা হয়েছে, সেবি এই মামলায় গুরুত্বপূর্ণ তথ্য লুকিয়ে গিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট থেকে। শুধু তাই নয়, আবেদনকারীর আরও দাবি, ডিরেক্টোরেট অফ রেভিন্যু ইন্টেলিজেন্সের থেকে আদানি সংক্রান্ত তথ্যের পাওয়ার পরও কোনও পদক্ষেপ গ্রহণ না করে ঘুমাচ্ছিল সেবি। এই আবহে সুপ্রিম কোর্টকে পদক্ষেপ করার জন্য আর্জি জানানো হয়েছিল আবেদনে। তবে আজকে এই মামলায় রায় ঘোষণা করে সুপ্রিম কোর্ট স্পষ্ট ভাষায় জানিয়ে দেয়, সেবির এক্তিয়ারে হস্তক্ষেপ করতে পারে না আদালত। পাশাপাশি সুপ্রিম কোর্ট নিজের পর্যবেক্ষণে এও বলে, 'হিন্ডেনবার্গ রিসার্চের মতো কোনও রিপোর্টের ওপর ভিত্তি করে পৃথক তদন্ত করা যায় না।' এই আবহে সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বাধীন বেঞ্চ বলে, আইন মেনে সেবি নিজের মতো তদন্ত এগিয়ে নিয়ে যাবে। সেবি যে তদন্তে গাফিলতি দেখিয়েছে, এমন কোনও তথ্যপ্রমাণ আদালতে পেশ করা হয়নি। (আরও পড়ুন: ইলন মাস্কের স্টারলিঙ্কের সঙ্গে চুক্তি করছে ভোডাফোন-আইডিয়া? মুখ খুলল সংস্থা)
আরও পড়ুন: RBI-এর থেকে লাইসেন্স মিলেছে, এবার অনলাইন পেমেন্ট বাজারে নামল টাটা
এর আগে সুপ্রিম কোর্ট পেশ করা হলফনামায় মামলাকারী অনামিকা জয়সওয়ল দাবি করেছিলেন, গত ২০১৪ সালে তৎকালীন সেবি চেয়ারপার্সনের কাছে আদানিকে নিয়ে একটি চিঠি পাঠিয়েছিল ডিরেক্টোরেট অফ রেভিন্যু ইন্টেলিজেন্স। সেই চিঠিতেই সেবিকে সতর্ক করা হয়েছিল যে আদানি হয়ত বেআইনি ভাবে তাদের শেয়ার দর হেরফের করছে। বেশ কিছু সরঞ্জাম আমদানির ক্ষেত্রে বেশি খরচ দেখিয়ে সেই টাকা দিয়েই শেয়ারের দামে হেরফের করা হচ্ছিল বলে নাকি লেখা ছিল চিঠিতে। হলফনামা অনুযায়ী, ডিরেক্টোরেট অফ রেভিন্যু ইন্টেলিজেন্সের তরফে সেবিকে সেই চিঠির সঙ্গে দু'টি নোট এবং একটি সিডি পাঠানো হয়েছিল। তাতে আদানির ২৩২৩ কোটির দুর্নীতির প্রমাণ ছিল। এদিকে মামলাকারীর দাবি, এই নিয়ে ডিরেক্টোরেট অফ রেভিন্যু ইন্টেলিজেন্সের মুম্বই জোনের অফিস থেকে আরও তথ্য পাওয়া যেতে পারে। এই আবহে মামলাকারীর অভিযোগ, আদানি কাণ্ডে সেবির এই তদন্ত স্বার্থের সংঘাতের সামিল।
হলফানামায় আরও অভিযোগ করা হয়েছিল, সিরিল অমরচাঁদ মঙ্গলদাসের ম্যানেজিং পার্টনার সিরিল শ্রফ সেবির সদস্য। তিনি এই ধরনের 'ইনসাইডার ট্রেডিং'-এর তদন্তের দায়িত্বে থাকা কমিটিতে আছেন। আর তাঁর মেয়ের বিয়ে হয়েছে গৌতম আদানির ছেলের সঙ্গে। এদিকে হলফনামায় মরিশাসের দু'টি সংস্থার উল্লেখ করা হয়েছে। দাবি করা হয়েছে, সেই দুই সংস্থা সেবির সন্দেহভাজনের তালিকায় আছে। আর এই সংস্থাগুলি ২০১৩ থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত আদানির বিপুল সংখ্যক শেয়ার কেনা-বেচা করেছে। তবে এই সংস্থার আসল মাথাকে সেবি আজও চিহ্নিত করতে পারেনি। হলফনামায় আরও অভিযোগ ছিল, সেবির অনেক নিয়ম পরিবর্তনে লাভবান হয়েছে আদানি।