গত ৭ অক্টোবর ইজরায়েলে হামলা চালিয়েছিল প্যালেস্তাইনের সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাস। এরপর থেকে ইজরায়েলও জবাবি হামলা চালিয়েছে ইজরায়েল। এই আবহে গতকাল রাষ্ট্রসংঘে আজ একটি প্রস্তাব পেশ করা হয়। সেখানে বলা হয়, ইজরায়েল যেন শান্তির পথে হাঁটে। এই প্রস্তাবের পক্ষে বা বিপক্ষে ভোট দেওয়া থেকে বিরত থাকল ভারত। ভারত ছাড়াও আরও ৪৩টি দেশ এই প্রস্তাবের ভোটাভুটি থেকে বিরত থাকে। জানা গিয়েছে, জর্ডান এই প্রস্তাবের খসড়া পেশ করেছিল। তবে তাদের সেই প্রস্তাবে হামাসের কোনও উল্লেখ ছিল না। এই আবহে এই ভোটাভুটি থেকে বিরত থাকে ভারত। এদিকে পরে কানাডার তরফে প্রস্তাব পেশ করা হয়, এই খসড়ায় একটি প্যারাগ্রাফ জুড়ে দেওয়া হোক যাতে হামাসের নিন্দা জানানো হোক। কানাডার সেই প্রস্তাবের পক্ষে ভোট দেয় ভারত।
এদিকে জর্ডানের পেশ করা প্রস্তাবের ভোটাভুটি থেকে ভারত বিরত থাকায় 'হতবাক' প্রিয়াঙ্কা গান্ধী। এক দীর্ঘ সোশ্যাল মিডিয়া পোস্টে কংগ্রেস নেত্রী বলেন, 'একটি চোখের বদলে অন্য চোখ খুবলে নেওয়া হলে গোটা বিশ্ব অন্ধ হয়ে যাবে - মহাত্মা গান্ধী। আমি হতবাক যে গাজায় সংঘর্ষ বিরতির পক্ষে আনা প্রস্তাবের পক্ষে ভোট দেওয়া থেকে বিরত থাকল ভারত। আমাদের দেশ অশান্তি এবং সত্যের নীতিতে গঠিত হয়েছিল। এর জন্যে অনেক স্বাধীনতা সংগ্রামী জীবন দিয়েছিলেন। আমাদের জাতিকে এই নীতিবোধই চালিত করে। আমাদের দেশের সংবিধানও এই নীতিবোধের ওপর দাঁড়িয়ে। আন্তর্জাতিক মঞ্চে ভারতের নৈতিক সাহস এই নীতিবোধের দ্বারাই চালিত হয়ে এসেছে। তবে কোনও অবস্থান না নিয়ে চুপ করে দাঁড়িয়ে থাকা আমাদের দেশের নীতি বিরুদ্ধ। প্যালেস্তাইনে কোনও ওষুধ, খাবার, বিদ্যুৎ নেই। সেই দেশকে ধ্বংস করা হচ্ছে। সেখানের লাখ লাখ মানুষ, শিশু ও মহিলারা বিপদে। এই ধরনের মানুষের জন্যেই আমরা এত বছর ধরে দাঁড়িয়ে থেকেছি।'
এদিকে ভোটদান থেকে বিরত থাকা নিয়ে নিজেদের যুক্তি দিয়েছে ভারত। এই নিয়ে রাষ্ট্রসংঘে নিযুক্ত ভারতের ডেপুটি স্থায়ী প্রতিনিধি যোজনা প্যাটেল বলেন, 'এই বিশ্বে সব বিবাদই আলোচনার মাধ্যমে মেটানো উচিত। এই আবহে হিংসা নিয়ে উদ্বিগ্ন থাকা উচিত রাষ্ট্রসংঘের। হিংসার মাধ্যমে রাজনৈতিক লক্ষ্য পূরণ করলে তা দীর্ঘমেয়াদী হয় না। সন্ত্রাসবাদ একটি রোগ। কোনও সীমান্ত, জাতি বা দেশ মানে না সন্ত্রাসবাদ। তাই যুক্তি যাই হোক না কেন, কোনও হিংসার পক্ষে সায় দেওয়া উচিত না বিশ্বের। আমাদের একত্রিত হয়ে সব ধরনের সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে সরব হতে হবে। আমরা কোনও ধরনের সন্ত্রাসবাদকেই যেন সমর্থন না করি।' এদিকে এই চলমান সংঘর্ষের জেরে সাধারণ মানুষের মৃত্যু নিয়েও উদ্বেগ প্রকাশ করে ভারত। এই আবহে উভয় পক্ষকেই দায়িত্ববোধ প্রদর্শনের পরামর্শ দিল ভারত।