ব্রিটিশ সিরিয়াল কিলার নার্সের কাছে ক্ষমা চাইতে বাধ্য করা হয়েছিল তাকে ধরিয়ে দেওয়া ভারতীয় বংশোদ্ভূত চিকিৎসককে। সম্প্রতি ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যমে খুনি নার্সকে নিয়ে নিজের অভিজ্ঞতার বিষয়ে মুখ খুলেছিলেন ডঃ রবি জয়রাম। সেখানেই তিনি অভিযোগ করেন, খুনি নার্স লুসি লেটবি নিয়ে তিনি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কাছে অভিযোগ জানিয়েছিলেন। পরে কর্তৃপক্ষ লুসির বিরুদ্ধে পদক্ষেপ গ্রহণ না করে উলটে তাঁকেই সেই নার্সের কাছে ক্ষমা চাইতে বলেছিল। প্রসঙ্গত, ডঃ রবি জয়রাম কাউন্টেস অফ চেস্টার হাসপাতালে শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ। সেই হাসপাতালেই কাজ করত লুসি। শুক্রবার সেই লুসিকেই সাত শিশুকে খুন এবং আরও ৬ শিশুকে খুনের চেষ্টার দায়ে দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছে। এরপই ব্রিটিশ চ্যানেল 'আইটিভি'-কে দেওয়া সাক্ষাৎকারে ডঃ জয়রাম এই নিয়ে মুখ খোলেন।
সাক্ষাৎকারে ডঃ জয়রাম দাবি করেন, ২০১৫ সালের জুন মাসে কাউন্টেস অফ চেস্টার হাসপাতালে তিন শিশুর মৃত্যু হয়। তারপরই একাধিক চিকিৎসক লুসিকে নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করতে শুরু করেছিলেন। তাঁদের মধ্যে অন্যতম ছিলেন ডঃ জয়রাম নিজে। সেই হাসপাতালে আরও শিশুর মৃত্যু ঘটনা ঘটলে চিকিৎসরা এই নিয়ে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে একাধিকবার বৈঠকে বসেছিলেন। আইটিভি-কে ডঃ জয়রাম বলেন, 'সেই সময় আমাদের সীমার মধ্যে থাকতে বলা হয়েছিল এবং লুসির কাছে ক্ষমা চাইতে বলা হয়েছিল।'
ডঃ জয়রাম জানান, ২০১৭ সালে লুসিকে নিয়ে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের এক বৈঠক হয়েছিল। সেই সময় হাসপাতালের প্রশাসনিক প্রধান ছিলেন টোনি চেম্বার্স। ডঃ জয়রামের কথায়, সেই বৈঠরে টোনি বলেছিলেন, 'আমি এই ইস্যুতে (লুসির বিরুদ্ধে শিশু খুনের অভিযোগ) একটি লাইন টেনে দিচ্ছি। আপনারা যদি সেই লাইন পার করার চেষ্টা করেন, তাহলে আপনাদের তার ফল ভোগ করতে হবে।' এদিকে এই ইস্যুতে পুলিশে অভিযোগ জানানোর পরামর্শও নাকি দিয়েছিলেন চিকিৎসকরা। সেই সময় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ সেই দাবি খারিজ করে দিয়েছিল।
লুসির হাতে প্রথম শিশু খুন হওয়ার দু'বছর পর অবশেষে পুলিশের কাছে এই বিষয়ে অভিযোগ জানানো হয়েছিল। এই বিষয়ে ডঃ জয়রাম বলেন, 'আমি বিশ্বাস করি আমরা অন্তত ৪ থেকে ৫ জন শিশুর প্রাণ বাঁচাতে পারতাম। তারা আজ স্কুলে যেতে পারত।' প্রসঙ্গত, শিশু খুনের অভিযোগের ভিত্তিতে লুসিকে ২০১৮ সালের জুলাইতে গ্রেফতার করা হয়েছিল। ২০২০ সালে লুসির বিরুদ্ধে সাতটি শিশুর খুন এবং আরও ছয় শিশুকে খুনের চেষ্টার অভিযোগে অভিযুক্ত করে চার্জশিট পেশ করা হয়েছিস।