করোনা টিকাকরণের ক্ষেত্রে পুরুষদের থেকে অনেকটাই পিছিয়ে পড়েছেন মহিলারা। দেশের তিন রাজ্য ছাড়া বাকি সব রাজ্যে মহিলাদের তুলনায় টিকা পাওয়া পুরুষদের সংখ্যা অনেকটাই বেশি। চলতি বছরের ১৬ জানুয়ারি টিকাকরণ শুরু হয় দেশে। সেই সময় স্বাস্থ্যকর্মী এবং ফ্রন্টলাইন যোদ্ধাদের টিকা দেওয়া হয়। এরপর ১ মার্চ থেকে টিকাকরণের দ্বিতীয় ধাপ শুরু হলে দেশে ষাটোর্ধ্বদের টিকা দেওয়া শুরু হয়। এরপর কেন্দ্র ঘোষণা করে যে ১ মে থেকে ১৮-৪৪ বছর বয়সীদের টিকাকরণ শুরু হবে। ৩০ মে পর্যন্ত ১৬.৫ কোটি মানুষকে টিকা দেওয়া হয়েছে। তবে মে ৩০-এ দাঁড়িয়ে দেশে টিকা পাওয়া পুরুষ এবং টিকা পাওয়া মহিলাদের সংখ্যার ব্যবধান অনেকটাই।
স্বাস্থ্য ক্ষেত্রে মহিলাদের সংখ্যা বেশি হওয়ার কারণে ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত পুরুষদের তুলনায় বেশি মহিলারা করোনা টিকা পেয়েছিলেন। তবে ৩১ জানুয়ারির পর থেকে সেই অনুপাত ধীরে ধীরে কমতে থাকে। ৩০ মে-তে দাঁড়িয়ে প্রতি ১০০০ জন পুরুষের টিকাকরণের তুনায় মাত্র ৮৭১ জন মহিলা টিকা পেয়েছেন দেশে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মতো দেশে অনুপাতটা উলটো। সেখানে বেশি সংখ্যক মহিলারা টিকা পেয়েছেন।
যদিও ভারতে টিকাকরণের ক্ষেত্রে মহিলা এবং পুরুষদের এই অসামঞ্জস্যের আসল কারণ জানা নেই। অনেক বিশেষজ্ঞের মতে, এই অসামঞ্জস্যের কারণ মহিলাদের মধ্যে টিকা নিয়ে সংশয় হতে পারে। এই বিষয়ে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক জনস্বাস্থ্য আধিকারিক বলেন, 'পুরুষরা টিকা পাওয়ার জন্য বহুক্ষণ লাইন দিয়ে দাঁড়িয়ে থাকেন।'
সমীক্ষায় দেখা যাচ্ছে, করোনার দ্বিতীয় ঢেউ আসার পর মানুষের মধ্যে টিকা নেওয়ার আগ্রহ বেড়েছে। তবে মহিলাদের তুলনায় পুরুষরা বেশি টিকা নিচ্ছেন। দেখা যাচ্ছে অন্তত একটি ডোজ পেয়েছেন, এমন পুরুষের সংখ্যা মহিলাদের থেকে ১৫ শতাংশ বেশি। সমীক্ষা বলছে, ১০ এপ্রিল পুরুষ এবং মহিলাদের টিকার পার্থক্যের হার ২ শতাংশের কিছু কম ছিল। তবে এর পরবর্তী দুই সপ্তাহে সেই ব্যবাধান বেড়ে ১২ শতাংশ হয়ে যায়। ৬ মে সেই ব্যবধান বেড়ে ২৪ শতাংশ হয়ে যায়। তবে এই নিরিখে সবথেকে ভালো অবস্থায় রয়েছে দেশের তিনটি রাজ্য- কেরল, ছত্তিসগড় এবং হিমাচল প্রদেশ। কেরলে প্রতি হাজার জন পুরুষে ১,১২৫, ছত্তিসগড়ে ১,০৪৫ এবং হিমাচলে ১,০০৩ জন মহিলা অন্তত এক ডোজ টিকা পেয়েছেন। তবে সার্বিক ভাবে দেশের চিত্রটা চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়িয়ে।