সিএএ কার্যকর হওয়ার পরই এই নিয়ে বিরূপ প্রতিক্রিয়া দিয়েছিলেন ভারতে নিযুক্ত মার্কিন দূত এরিক গারসেট্টি। এরিকের সেই মন্তব্যের জবাবে এবার চাঁচাছোলা প্রতিক্রিয়া ভারতের বিদেশমন্ত্রী এস জয়শংকরের। এর আগে এক প্যানেল আলোচনার সময় এরিক সিএএ প্রসঙ্গে বলেছিলেন, 'কেউ যত ভালোই বন্ধু হোক না কেন, নীতি ত্যাগ করা যায় না।' তাঁর সেই ইঙ্গিতবহ মন্তব্যের প্রেক্ষিতে এস জয়শংকরও নাম না নিয়ে আমেরিকাকে খোঁচা দিতে ছাড়লেন না। (আরও পড়ুন: ভোট ঘোষণার আগেই ১৬% বেতন বেড়েছে এই সরকারি কর্মীদের, মিলবে ২০ মাসের বকেয়াও)
আরও পড়ুন: ব্যাঙ্ক কর্মীরা এবার থেকে সপ্তাহে ২ দিন করে ছুটি পাবেন? মুখ খুললেন অর্থমন্ত্রী
আরও পড়ুন: অবশেষে জয় রাজ্য সরকারি কর্মীদের, ভোট ঘষণার ঠিক আগে বকেয়া ডিএ মেটানোর নির্দেশে সই
এরিক গারসেট্টির সিএএ মন্তব্য প্রসঙ্গে ইন্ডিয়া টুডে কনক্লেভে জয়শংকর বলেন, 'দেখুন, আমি তাদের গণতন্ত্রের অপূর্ণতা বা তাদের নীতি কিংবা নীতিবোধের অভাব নিয়ে প্রশ্ন তুলছি না। আমি আমাদের ইতিহাস সম্পর্কে তাদের বোধগম্যতা নিয়ে প্রশ্ন করছি। বিশ্বের অনেক জায়গা থেকেই অনের মন্তব্য শোনা যাচ্ছে। আপনি যদি সেগুলি শোনেন, তাহলে মনে হয় যেন ভারতের ভাগাভাগি কখনও ঘটেনি। এমন কোনও সমস্যাই ছিল না।' এস জয়শংকর আরও বলেন, 'আমাদের সরকারেরও নীতিবোধ রয়েছে।' (আরও পড়ুন: অল্পের জন্য দুর্ঘটনা থেকে রক্ষা, বারবার বিপত্তি ঠেকাতে নবান্নে চিঠি বিমানবন্দরের)
আরও পড়ুন: লোকসভা ভোটে বাংলায় ফুটতে পারে পদ্ম, 'শুকিয়ে' যাবে ঘাসফুল, দাবি সমীক্ষায়
ভারতের বিদেশমন্ত্রী এই বিষয়ে আরও বলেন, 'যদি আপনি একটি সমস্ তুলে নিয়ে তা থেকে সমস্ত ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট মুছে ফেলেন, এবং রাজনৈতিক শুদ্ধতার যুক্তিতে পরিণত করেন এবং বলেন, 'আমার নীতি আছে এবং আপনার নীতি নেই' (এরিক গারসেট্টি বলেছিলেন, নীতি ত্যাগ করা যায় না), তাহলে বলব, আমারও নীতি আছে। এই সিএএ দেশভাগের সময় নিগৃহীত লোকদের জন্য এক বাধ্যবাধকতা। আর শুধু আমাদের দেশ নয়, অন্য দেশেও ধর্ম এবং জাতির ভিত্তিতে নাগরিকত্ব দেওয়ার বিষয়টিকে ফাস্টট্র্যাক করেছে। এরকম অনেক উদাহরণ আছে। সোভিয়েতের ইহুদিদের জন্য জ্যাকসন-ভ্যানিক সংশোধনী, লউটেনবার্গ সংশোধনী, স্পেক্টার সংশোধনী এসেছিল, হাঙ্গেরিয়ান বিপ্লবের পর হাঙ্গেরিয়ানদের নাগরিকত্ব দেওয়ার জন্য, ১৯৬০ সালে কিউবানদের নাগরিকত্ব দেওয়ার জন্য সংশোধনী আনা হয়েছিল।' (আরও পড়ুন: ভোট মিটলেই এই রাজ্যের সরকারি কর্মীদের বেতন বাড়বে ২৭.৫%? প্রকাশ্যে রিপোর্ট)
আরও পড়ুন: ভারত থেকে ২৬০০ কিমি দূরে লড়াইয়ে INS কলকাতা, নৌসেনার হাতে আটক ৩৫ সোমালি জলদস্যু
প্রসঙ্গত, লোকসভা ভোটের দিনক্ষণ ঘোষণার কয়েকদিন আগেই সিএএ কার্যকর হয়েছে দেশে। এর মাধ্যমে ২০১৪ সালের ৩১ ডিসেম্বরের আগে ভারতে আসা বাংলাদেশি, আফগান, পাকিস্তানি হিন্দু, শিখ, বৌদ্ধ, পারসি, খ্রিস্টান এবং জৈন ধর্মাবলম্বীরা ভারতীয় নাগরিকত্বের জন্য আবেদন করতে পারবেন। এই আইনকে হাতিয়ার করে বাংলার মতুয়া অধ্যুষিত এলাকায় নিজেদের গড় আরও শক্তিশালী করতে চাইছে বিজেপি। তবে ২০১৯ সালের শীতকালীন অধিবেশনে আইনে পরিণত হওয়া সিএএ-র বিধি তৈরি করতে লেগেছে ৪ বছর ৩ মাস। এই আবহে ২০২৪ সালের ভোটের আগে এই আইনের বিধি কার্যকর করা নিয়ে বিতর্ক শুরু হয়েছে। ইতিমধ্যেই এই নিয়ে সুপ্রিম কোর্টে মামলা হয়েছে। এদিকে আমেরিকার বিদেশ মন্ত্রকও বিষয়টি 'নজরে রাখছে'। এই পরিস্থিতিতে নিজের স্বভাবসিদ্ধ ভঙ্গিমায় কড়া ভাষায় জবাব দিলেন জয়শংকর।